—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
নির্বাচন কমিশনের জোড়া শূন্যপদে দুই আমলাকে নিয়োগ করা হল। দেশের দুই নির্বাচন কমিশনারের পদে এলেন সুখবীর সিংহ সান্ধু এবং জ্ঞানেশ কুমার। এই দুই শূন্যপদে নিয়োগের জন্য বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসেছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের কমিটি। লোকসভার বৃহত্তম বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা হিসাবে কমিটিতে রয়েছেন বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীও। বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনিই দেশের নতুন দুই নির্বাচন কমিশনারের নাম প্রকাশ্যে আনেন। মোদী এবং অধীর ছাড়াও বাছাই সংক্রান্ত কমিটির তৃতীয় সদস্য হিসাবে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
সুখবীর ১৯৯৮ ব্যাচের অবসরপ্রাপ্ত আইএএস আধিকারিক। কর্মজীবনে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যসচিব, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। অন্য দিকে, জ্ঞানেশ ১৯৮৮ সালের কেরল ব্যাচের অবসরপ্রাপ্ত আইএএস আধিকারিক। কর্মজীবনে সমবায় মন্ত্রকের সচিব এবং সংসদীয় মন্ত্রকের সচিব হিসাবে দা।য়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, দেশে এক জন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার-সহ মোট তিন জন নির্বাচন কমিশনারের থাকার কথা। এত দিন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার এবং নির্বাচন কমিশনার অরুণ গয়ালই দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। তৃতীয় নির্বাচন কমিশনারের পদটি দীর্ঘ দিন ধরেই শূন্য। কিন্তু গত শনিবার হঠাৎই ইস্তফা দেন অরুণ। সূত্র মারফত জানা যায়, রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া চিঠিতে অরুণ জানান, তিনি ‘ব্যক্তিগত কারণে’ পদত্যাগ করছেন। তবে তাঁর ইস্তফার ‘নেপথ্যে’ কারণ নিয়ে চর্চা অব্যাহত থাকে। কেবল মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বেই দেশে লোকসভা নির্বাচন হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা। তবে কেন্দ্রের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছিল, খুব শীঘ্রই জোড়া শূন্য পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করা হবে। স্থির হয়, ১৪ মার্চ এই নিয়ে বৈঠকে বসবে তিন সদস্যের বাছাই কমিটি। অনেকেই মনে করছেন, এ বার হয়তো লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করে দেবে নির্বাচন কমিশন।
বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেন অধীর। প্রশ্ন তোলেন কমিশনার বাছাই করার কমিটি থেকে কেন বাদ দেওয়া হয়েছে দেশের প্রধান বিচারপতিকে? কমিশনার নিয়োগের জন্য বাছাই কমিটির বৈঠককে ‘স্রেফ নিয়মরক্ষা’ বলে অভিহিত করে তিনি বলেন, “কমিটিতে অবশ্যই দেশের প্রধান বিচারপতির থাকা উচিত। প্যানেলে সরকারই সংখ্যাগরিষ্ঠ। ফলে তারা যা চায়, তা-ই হয়।” অধীর জানান, বুধবার রাতে তাঁকে ২১২টি সম্ভাব্য নাম দিয়ে, তার মধ্যে থেকে দু’জনকে বেছে নিতে বলা হয়। বহরমপুরের বিদায়ী সাংসদের কথায়, “আমি গত রাতে দিল্লি এসেছি। আর আজ দুপুরে বৈঠক। আমায় ২১২টি নাম দেওয়া হল। কী ভাবে এক জন এক দিনে অতগুলি নাম খতিয়ে দেখবে? তাদের (কেন্দ্রের বিজেপি সরকার) হাতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। তাই তারা ইচ্ছামতো ব্যক্তিকে বেছে নেবে।”
২০২৩ সালের মার্চ মাসে একটি রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, দেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্য দুই নির্বাচন কমিশনারকে তিন সদস্যের একটি কমিটি বেছে নেবে। কমিটিতে থাকবেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা, প্রধানমন্ত্রী এবং দেশের প্রধান বিচারপতি। তবে একই সঙ্গে ওই রায়ে বলা হয়েছিল, নতুন আইন প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত আগের আইন বলবৎ থাকবে। সুপ্রিম কোর্ট তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল, নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তাই তিন সদস্যের কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছিল শীর্ষ আদালত।
কিন্তু গত অগস্টে ‘নির্বাচন কমিশনার বিল, ২০২৩’ বিল পাশ করিয়ে কেন্দ্র জানায়, তিন সদস্যের প্যানেলে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা এবং প্রধানমন্ত্রী মনোনীত এক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এই কমিটি যে নাম কিংবা নামগুলি প্রস্তাব করবে, তাঁকে বা তাঁদের নিয়োগ করবেন দেশের রাষ্ট্রপতি। বিরোধীরা নতুন আইনের সমালোচনা করে জানায়, সংখ্যার জোরেই কমিশনার নিয়োগে নিজেদের প্রভাবকেই প্রতিষ্ঠিত করবে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy