আসানসোলের বগবাঁধিতে অবৈধ খাদান বন্ধ। নিজস্ব চিত্র।
ভোট এগিয়ে আসতেই বেআইনি কয়লা খনন নিয়ে ফের উত্তাপ বাড়ছে খনি অঞ্চলে। কয়লা চুরি ও খনির চাল ধসে মৃত্যুর ঘটনা ঠেকাতে টহল বাড়িয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। কিন্তু সম্প্রতি তেমন টহলে গিয়ে আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে বাহিনীকে। যা নিয়ে তরজা বাধছে বিজেপি-তৃণমূলে। বিজেপির অভিয়োগ, ভোটের মুখে লোকবল ও অর্থবল নিশ্চিত করতে কয়লা চোরেদের মদত দিচ্ছে তৃণমূল। অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের পাল্টা দাবি, ভোটের আগে এলাকাকে সন্ত্রস্ত করতে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কাজে লাগাচ্ছে বিজেপি।
সম্প্রতি রানিগঞ্জের বাঁশড়ায় অবৈধ খননের সময়ে খনির চাল ধসে স্থানীয় দুই ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। এর পরেই আসানসোল-রানিগঞ্জের খনি এলাকায় পাহারা বাড়িয়েছে ইসিএল। সংস্থার নিরাপত্তা দফতরের উদ্যোগে খনি ও লাগোয়া এলাকায় ২৪ ঘণ্টা নজরদারি শুরু করে বাহিনী। সম্প্রতি সিআইএসএফ এবং ইসিএলের নিরাপত্তা বাহিনীর ১৫ জনের একটি দল বারাবনির একাধিক খনিতে অভিযান চালায়। জামগ্রামের কাপিষ্ঠায় জনাপঞ্চাশের একটি দল বাহিনীর উপরে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরেপুলিশকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতেরা সকলেই খনি লাগোয়া অঞ্চলের বাসিন্দা।
আসানসোল-রানিগঞ্জ খনি এলাকায় ভোটের রাজনীতিতে কয়লা কারবার বড় ভূমিকা নেয় বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। শাসক দলের বিরুদ্ধে এই কারবারে মদত দিয়ে ভোটে সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ গত তিন দশক ধরে বার বারই উঠেছে। এ বারও লোকসভা ভোট এগিয়ে আসতে সেই অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। বারাবনির ঘটনার পরেই কয়লা চুরিতে তৃণমূলের মদতের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের মদতে কয়লা চুরি হবে, এ আর নতুন কী? লোকসভা ভোটের আগে অর্থ ও লোকবল জোগাড় করতে এলাকার কয়লা চোরেদের মদত দিচ্ছে। দেশের সম্পদ রক্ষায় নেমে ওই চোরেদের হাতেই মার খাচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। ধৃতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’’
তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর পাল্টা দাবি, আমরা স্বচ্ছতার সঙ্গে দল করি বলেই মানুষের সমর্থন পাই। অবৈধ কারবারে দল মদত দেয় না। তাই বারাবনির ঘটনার এক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ সাত জনকে ধরেছে। বিজেপির পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে বলে ভোটের মুখে বিভ্রান্তি তৈরি করছে।’’ তাঁর আরও দাবি, চোরেদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় বাহিনীর পদক্ষেপ নিয়ে তাঁদের কোনও বক্তব্য নেই। তবে খনি লাগোয়া অঞ্চলের সাধারণ মানুষকে অযথা হয়রান করা হলে তাঁরা প্রতিবাদ করবেন।
ইসিএলের নিরাপত্তা আধিকারিক শৈলেন্দ্র সিংহ জানান, গত ছ’মাসে খনি অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা, যেমন সালানপুর, বারাবনি, আসানসোল দক্ষিণ থানার ডামরা, জামুড়িয়ার সাতগ্রামে অভিযানে নেমে সিআইএসএফ প্রায় ২০০ টন অবৈধ কয়লা বাজেয়াপ্ত করেছে। জানুয়ারির গোড়ায় আসানসোলে বগবাঁধি এলাকায় একটি ও জামুড়িয়ার সাতগ্রামে পাঁচটি অবৈধ খাদান বন্ধ করে সিআইএসএফ। শৈলেন্দ্র সিংহ বলেন, ‘‘অবৈধ খাদান বন্ধে পুলিশ, সিআইএসএফ এবং ইসিএলের নিরাপত্তা রক্ষীদের নিয়ে একটি যৌথ দল গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করে তা ঠিক হবে।’’ তিনি জানান, বারাবনিতে হামলার ঘটনার পরে আরও কড়া পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy