Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

সাপ-লুডোর খেলায় জিত কার, জল্পনা

দুয়ারে লোকসভা ভোট। প্রতিটি কেন্দ্রের অধীনে সাতটি বিধানসভা। কী বলছে জনতা। রইল বিধানসভাওয়াড়ি পরিক্রমা।

—প্রতীকী চিত্র।

সমীর দত্ত
বান্দোয়ান শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২৪ ০৯:১২
Share: Save:

২০১১ সালে রাজ্যে পালা পরিবর্তন হলেও জঙ্গলমহলের বান্দোয়ান বিধানসভার দখল পেতে তৃণমূলকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল কয়েক বছর। ২০১৪ সালে ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রে (বান্দোয়ান ঝাড়গ্রাম লোকসভার অধীন) সিপিএম প্রার্থী পুলিনবিহারী বাস্কেকে হারিয়ে তৃণমূলের উমা সরেন জয়ী হন। তখনও বান্দোয়ানে সিপিএমের বিধায়ক। অবশেষে ২০১৬ সালে বান্দোয়ান বিধানসভা দখল করে তৃণমূল ক্ষমতা দখলের বৃত্ত সম্পূর্ণ করে।

তবে ২০১৯ সালে ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের বীরবাহা সরেনকে হারিয়ে জয়ী হন বিজেপির কুনার হেমব্রম। বান্দোয়ান বিধানসভাতেও তৃণমূল প্রায় তিন হাজার ভোটে পিছিয়ে যায়। যদিও ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে ফের বান্দোয়ান কেন্দ্রে জয়ী হন তৃণমূলের রাজীবলোচন সরেনই। এ বার কী হয়, তা নিয়ে চর্চার অন্ত নেই।

এ বারে লোকসভায় তৃণমূলের প্রার্থী আপাদমস্তক সংস্কৃতি জগতের মানুষ কালীপদ সরেন। দলের পুরুলিয়া জেলা চেয়ারম্যান হংসেশ্বর মাহাতোর কথায়, ‘‘কালীপদবাবু পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির মানুষ। আদিবাসী সমাজে তাঁর আলাদা পরিচিতি রয়েছে। আমরা লোকসভায় ২০১৪-র ফল ফিরিয়ে আনব।’’

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, বান্দোয়ান বিধানসভা কেন্দ্রের অধীন মানবাজার ২ ব্লকে বিজেপির সংগঠন থাকলেও বান্দোয়ান এবং বরাবাজারে সে অর্থে সংগঠন তেমন মজবুত নয়। তবে তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের দুর্নীতি, অপশাসন এবং স্থানীয় স্তরে অনুন্নয়নকে প্রচারের হাতিয়ার হিসাবে তুলে এনে লড়াইয়ের চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন মানবাজার ২ ব্লকের বিজেপি নেতা কৃত্তিবাস মাহাতো। তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের প্রার্থী প্রণত টুডুর জয় স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।’’

তবে স্থানীয়দের আক্ষেপ, পালাবদল হলেও জঙ্গলমহলের এই এলাকার বাসিন্দাদের এখনও রোগ সামান্য বাড়াবাড়ি হলেই হয় পুরুলিয়া মেডিক্যাল, নয়তো ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরে ছুটতে হয়। বান্দোয়ান ও বরাবাজার ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং জামতোড়িয়া ও দিঘী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামোগত উন্নতির দাবি উঠেছে। বান্দোয়ানের প্রাক্তন বিধায়ক সিপিএমের সুশান্ত বেসরার কটাক্ষ, ‘‘আদিবাসীদের স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের হেলদোল নেই। সামান্য অসুখেও পুরুলিয়া বা জামশেদপুরের উপরে নির্ভর করতে হয়।’’

আক্ষেপ আরও রয়েছে। বাসিন্দাদের দাবি, পারগেলা জলাধার ও বড়বাঁধ জল প্রকল্প থাকলেও বান্দোয়ান বাজারে পানীয় জলের সমস্যা মেটেনি। এখনও অনেকে নলকূপের জলের উপরে নির্ভরশীল। বেশ কিছু গ্রামে পাইপলাইনের জল পৌঁছয়নি। যদিও বান্দোয়ান ব্লক তৃণমূল সভাপতি জগদীশ মাহাতোর দাবি, ‘‘আগের তুলনায় স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতি ঘটেছে। পানীয় জলের সমস্যা মেটানোরও চেষ্টা চলছে।’’

২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বরাবাজার ব্লকে বিজেপির উত্থান ঘটেছিল। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও বরাবাজার ব্লকে তৃণমূল ১৪ হাজারের বেশি ভোটে পিছিয়ে ছিল।

তৃণমূলের বরাবাজার ব্লক সহ-সভাপতি উত্তম মিশ্রের দাবি, ‘‘আগের খামতি পূরণ করে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এখানে আমরা ‘লিড’ দিয়েছি। এই খামতি পূরণে অন্যতম কারিগর জেলা পরিষদের সদস্য প্রতুল মাহাতো সদ্য মারা গিয়েছেন।লোকসভা নির্বাচনে বরাবাজার মানুষ প্রতুলবাবুর স্মরণে তৃণমূলকে বেশি ভোট দেবেন।’’

তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, সিপিএম এখানে এখনও তাদের নিজস্ব ভোট ব্যাঙ্ক কিছুটা ধরে রেখেছে। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম এখানে ২০,৭০৭ ভোট পায়। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনেও সিপিএম পেয়েছিল ২২,২০৪ ভোট। তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে হারানো ভোট ফেরাতে মরিয়া চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বান্দোয়ানের বাসিন্দা তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রথু সিং। তাঁদের বাজি রাজনীতিতে নতুন মুখ সোনামণি টুডু।

সবাই নিজের মতো হিসেব কষলেও, উত্তর কার মেলে, জানা যাবে ৪ জুন।

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Election Jungle Mahals
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy