শ্যামলী প্রধান, (ডান দিকে) নানুরের কুমিড়া গ্রামে তাঁর বসতবাড়ি। নিজস্ব চিত্র ।
একের পর এক নির্বাচনী বৈতরণী পার হয়েছেন। আবার হেরেও গিয়েছেন কয়েকটি নির্বাচনে। তাই এ বার লোকসভা নির্বাচনে বোলপুরে সিপিএমের প্রার্থী হয়ে কোনও আলাদা চাপ অনুভব করছেন না শ্যামলী প্রধান।
নানুরের কুমিড়া গ্রামে নিম্নবিত্ত পরিবারে জন্ম ৫২ বছরের শ্যামলীর। বাবা দিলীপ প্রধান কৃষি দফতরের অবসরপ্রাপ্ত চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। বাবা, মা, ভাই, ভ্রাতৃবধূ, ভাইপো ও ভাইঝিকে নিয়ে তাঁদের ১৩ সদস্যের একান্নবর্তী পরিবার। খুজুটিপাড়া কলেজ পড়ার সময় বাম ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৯১ সালে সিপিএম পার্টির সদস্য লাভ করেন। ১৯৯২ সালে লোকাল কমিটির সদস্য। ২০১২ সালে দলের মহিলা সংগঠনের জেলা সম্পাদিকা হন। বর্তমানে রাজ্য কমিটির সদস্য এবং মহিলা সংগঠনের জেলা সভানেত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন।
দলীয় রাজনীতির বাইরে সিপিএমের হয়ে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন শ্যামলী। ২০০৩ সালে চণ্ডীদাস-নানুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য হয়ে তাঁর নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে পথচলা শুরু হয়। পরের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ, দু’বার নানুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হন শ্যামলী। ২০১৬ সালে নানুর থেকে বিধানসভায় নির্বাচিত হন তিনি। ২০২১ সালের বিধানসভা এবং ২০২৩ সালে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে অবশ্য পরাজিত হন। তাই নির্বাচনে জয়-পরাজয় তাঁর কাছে বড় কথা নয় বলে দাবি শ্যামলীর।
সিপিএম সূত্রে খবর, লড়াকু এবং স্বচ্ছ ভাবমূর্তির জন্য শ্যামলী জেলার রাজনীতিতে পরিচিত নাম। নিছক পদ আঁকড়ে থাকা নয়, যে কোনও আন্দোলন থেকে শুরু করে কর্মীদের সঙ্কটে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখা যায় তাঁকে। দীর্ঘদিন ক্ষমতার অলিন্দে থাকা সত্ত্বেও খড়ের চালের মাটির বাড়িতে বাস শ্যামলীর। জীবনযাপনও সাদাসিধে। পার্টির সর্বক্ষণের কর্মী হিসেবে সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। সন্ধ্যায় ফেরেন। রাজনীতি করতে গিয়ে বহু বার বহু হুমকি এমনকি জীবন সংশয়ও হয়েছে বলে অভিযোগ শ্যামলীর।
প্রার্থীপদ ঘোষণার পরের দিন সকাল থেকে কর্মী, সমর্থকদের নিয়ে প্রচারে বেরিয়ে পড়েছেন শ্যামলী। সঙ্গে শুধু এক বোতল জল আর রুমাল। কাঁধে একটি ঝোলা। তিনি বলেন, ‘‘শুধু ভোট বলে নয়। সারা বছরই বাড়িতে যে দিন যা জোটে, তাই খেয়ে বেরিয়ে পড়ি। তার পরে কর্মী, সমর্থকদের বাড়িতে যা জোটে। সব সময় জলটুকুও সঙ্গে থাকে না। রাস্তার কলে খেয়েনি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমাদের দলে প্রার্থীপদের জন্য কোনও প্রত্যাশা থাকে না। কারণ আমাদের প্রার্থী মানে দল। দল আমার উপরে ভরসা রেখেছে। জনগণও আমাদের সঙ্গে আছেন।’’
সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘জয়-পরাজয় সময় বলবে। তবে এ টুকু বলতে পারি শ্যামলী প্রধানের লড়াকু ইমেজ এবং স্বচ্ছ ভাবমূর্তির জন্য আমাদের ফলাফল অনেক ভাল হবে।’’ তৃণমূলের জেলা কোর কমিটির অন্যতম সদস্য বিকাশ রায়চৌধুরী অবশ্য জানিয়েছেন, ‘‘বিরোধী দলের কে প্রার্থী হলেন তা নিয়ে আমাদের কোনও মাথাব্যথা নেই। সামগ্রিক উন্নয়নের নিরিখে আমরা ব্যবধান বাড়িয়ে জিতব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy