নানুরের গোপডিহিতে চলছে প্রতীকী ভোটদান। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।
ঠিক যেন আস্ত একটি ভোটকেন্দ্র। লাইনে দাঁড়িয়ে নকল ইভিএমে ভোট দেওয়া থেকে শুরু করে হুইলচেয়ারে বসে থাকা বিশেষ ভাবে সক্ষম ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে পৌঁছনো। এমনকি ব্রেইল পদ্ধতিতে নিজের ভোট নিজে দেওয়া। নানুরের নূতনগ্রাম হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রীদের সৌজন্যে এমনই এক প্রতীকী ভোটচিত্রের সাক্ষী থাকলেন গোপডিহি আদিবাসীপাড়ার বাসিন্দারা।
বুধবার নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় গ্রামের মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রে ওই ভোটকেন্দ্রের আয়োজন করেন নূতনগ্রাম হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকরা। শিক্ষা দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটার তালিকায় নাম নথিভুক্তিকরণ, ভোটদান প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ সম্পর্কে ছাত্রছাত্রী তথা সার্বিক সচেতনতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে প্রতিটি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুলের নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ১২ জন ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে নির্বাচনী সাক্ষরতা ক্লাব গঠিত হয়েছে। অন্য ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সমন্বয় সাধনের জন্য ওই ১২ জনের মধ্যে দু’জনকে ‘ক্যাম্পাস অ্যাম্বাস্যাডর’ নির্বাচিত করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে কী ভাবে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করা হবে, সে বিষয়ে ওই স্কুলের দু'জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে ব্লক কার্যালয়ে এক দিনের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। সেই মতো তাঁরা সাক্ষরতা ক্লাবের ছাত্রছাত্রীদের প্রশিক্ষণ দেন।
প্রতীকী ভোটকেন্দ্র পরিচালনা করে প্রশাসনের কাছে প্রশংসিত হয়েছে নূতনগ্রাম হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। এ দিন আদিবাসী অধ্যুষিত ওই গ্রামেও সাড়া ফেলে তাদের কর্মসূচি। ভোট প্রক্রিয়ায় যোগ দেওয়ার ব্যাপারে আদিবাসীদের নিজস্ব ভাষায় ব্যাখা দেন শিক্ষিকা সুপর্ণা মান্ডি। এ বারই প্রথম ভোট দেবেন ওই গ্রামের মলিনা কিস্কু, সনৎ মুর্মুরা। তাঁদের কথায়, ‘‘ভোট দেওয়া নিয়ে একটা ধোঁয়াশা ছিল। ছাত্রছাত্রীদের সৌজন্যে সেটা কেটে গিয়েছে।’’
একই ভাবে সাগেন সরেন, গোপল মুর্মরা বলেন, ‘‘আমরাও ভোটার তালিকায় নাম তোলা থেকে প্রতিবন্ধী ভোটারদের ভোট দিতে আসার জন্য প্রাপ্য সুযোগ সুবিধার বিষয়ে অনেক কিছু শিখলাম।’’
দুই ‘ক্যাম্পাস অ্যাম্বাস্যাডর’, দশম শ্রেণির সৃঞ্জা মল্লিক এবং নবম শ্রেণির প্রীতম মণ্ডল বলেন, ‘‘ভোট নিয়ে আমাদের মধ্যেও একটা কৌতূহল ছিল। নির্বাচনী সাক্ষরতা ক্লাবের প্রতীকী ভোটদান কর্মসূচির পরে তা নিরসন হয়েছে।’’
ওই স্কুলের শিক্ষক সৌম্যজিৎ মল্লিক, শিক্ষিকা অদিতি ভট্টাচার্য বলনে, ‘‘আজকের ছাত্রছাত্রীরা আগামী দিনের ভোটার। তাই ভোট সম্পর্কে তাদের সম্যক ধারণা সৃষ্টির জন্যেই এই উদ্যোগ।’’ প্রধান শিক্ষক চণ্ডীদাস গড়াই জানিয়েছেন, সার্বিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ধারাবাহিক ভাবে ওই কর্মসূচি নেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট নানুর পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা আধিকারিক অঞ্জন মুখোপাধ্যায় জানান, ওই স্কুলের নির্বাচনী সাক্ষরতা সম্পর্কিত কর্মসূচি জেলায় প্রশংসিত হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy