রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।
রাহুল গান্ধী হাজির হো! কিন্তু না। তিনি হাজির হচ্ছেন না।
লোকসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা তৈরি করতে ঘন ঘন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির বৈঠক বসছে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের নেতৃত্বে বৈঠকে কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীও ঠায় বসে থাকছেন। কিন্তু রাহুল গান্ধী কোনও প্রার্থী বাছাই বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন না।
রাহুলের এই অনুপস্থিতির কারণ নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে জল্পনা শুরু হয়েছে। কংগ্রেসের কিছু নেতা মনে করছেন, রাহুল প্রথম থেকেই চাইছিলেন, দলের সমস্ত প্রবীণ ও ‘হেভিওয়েট’ নেতারা লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হোন। ভূপেশ বঘেল, কে সি বেণুগোপাল এতে রাজি হলেও কমল নাথ বা অশোক গহলৌতের মতো নেতারা এতে রাজি হননি। এখন রাহুল প্রার্থী নির্বাচনের দায়িত্ব পুরোপুরি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের উপরেই ছেড়ে দিতে চাইছেন। খড়্গেকে ‘নাম-কে-ওয়াস্তে’ কংগ্রেস সভাপতির চেয়ারে বসিয়ে তিনিই প্রার্থী বাছাইয়ের বিষয়ে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন, এমন কোনও বার্তা রাহুল দিতে চাইছেন না। কারণ, তিনি বৈঠকে থাকলে বার্তা যাবে, তাঁর পছন্দ-অপছন্দ অনুযায়ীই সব হচ্ছে।
প্রশ্ন উঠেছে, কংগ্রেসের ফল ভাল হওয়ার সম্ভাবনা নেই দেখে রাহুল কি দলের প্রার্থী তালিকার দায় নিতে চাইছেন না? কংগ্রেস সূত্রের পাল্টা দাবি, প্রার্থী নিয়ে রাহুল নিজের মতামত প্রয়োজন মাফিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপালকে জানিয়ে দিচ্ছেন। তিনি নির্বাচন কমিটির বৈঠকে সেই বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, রাহুলের ইচ্ছেমতো এ বার দিগ্বিজয় সিংহ ভোটে লড়তে রাজি হয়েছেন। তিনি নিজের এলাকা রাজগড় থেকে প্রার্থী হবেন। গুনায় জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার বিরুদ্ধে মধ্যপ্রদেশের ‘হেভিওয়েট’ নেতা অরুণ যাদবকে প্রার্থী করা হবে। আর এক প্রবীণ নেতা কান্তিলাল ভুরিয়া ঝাবুয়া থেকে প্রার্থী হবেন। বারাণসীতে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে উত্তরপ্রদেশের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অজয় রাইকে প্রার্থী করা হবে। মুম্বই থেকে অভিনেত্রী স্বরা ভাস্করকে প্রার্থী করা নিয়ে আলোচনা চলছে। মুম্বইয়ের কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় নিরুপম টিকিট না পেলে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলেও জল্পনা।
কংগ্রেস আজ অরুণাচল প্রদেশ, কর্নাটক, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, তেলঙ্গানা, পশ্চিমবঙ্গ, পুদুচেরির ৫৭টি আসনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে। রাজস্থানের সীকর আসনটি কংগ্রেস সিপিএমের জন্য ছেড়ে দিয়েছে। এ দিন উত্তরপ্রদেশের কিছু আসনের প্রার্থী তালিকা নিয়ে আলোচনা হলেও সেখানে অমেঠী, রায়বরেলী নিয়ে আলোচনা হয়নি। উত্তরপ্রদেশের নেতারা অবশ্য দাবি তুলেছেন, গান্ধী পরিবারেরই কেউ না কেউ এই দুই আসন থেকে প্রার্থী হোন।
অমেঠী-রায়বরেলীতে তাঁর ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার প্রার্থী হওয়া নিয়ে জল্পনার জেরে রাহুল নির্বাচন কমিটির বৈঠক এড়িয়ে যাচ্ছেন কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে। কংগ্রেসের প্রথম কেন্দ্রীয় নির্বাচনী কমিটির বৈঠক বসেছিল ৭ মার্চ। তারপরে কেরল-সহ একাধিক রাজ্যের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হয়। ওয়েনাড়ে প্রার্থী হিসেবে রাহুলের নামও ছিল। সে সময় রাহুল ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রায় ছিলেন। সেখান থেকেই তাঁর ভিডিয়ো কনফারেন্সে নির্বাচন কমিটির বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাহুল শেষ পর্যন্ত বৈঠকে যোগ দেননি। এরপরে চলতি সপ্তাহে মঙ্গলবার, বুধবার ও বৃহস্পতিবার একাধিক রাজ্যের প্রার্থী তালিকা নিয়ে কংগ্রেসের নির্বাচন কমিটির বৈঠক হয়েছে। কিন্তু রাহুল যাননি। সরকারি ভাবে কংগ্রেসের তরফে দাবি করা হয়েছে, রাহুল ব্যস্ত রয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, মঙ্গলবার সকালে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে যোগ দিলে রাহুল একই দিনে বিকেলে নির্বাচন কমিটির বৈঠকে উপস্থিত থাকলেন না কেন!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy