রাহুল গান্ধী। —ফাইল ছবি।
রাহুল গান্ধীরই লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উল্টো দিকে বিরোধী দলনেতার আসনে বসা উচিত। শনিবার কংগ্রেসের বর্ধিত ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ও সংসদীয় দলের বৈঠকের আগে দলের নেতারা প্রকাশ্যে এই দাবি তুলে দিলেন। শশী তারুর থেকে কার্তি চিদম্বরম হয়ে কিশোরীলাল শর্মা, সবারই দাবি, রাহুল গান্ধীই বিরোধী দলনেতার পদে বসুন। কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, এ বিষয়ে রাহুল গান্ধীই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি না হলে গান্ধী পরিবারের আস্থাভাজন কাউকে বিরোধী দলনেতার দায়িত্ব দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে হরিয়ানার কুমারী শৈলজা বা দীপেন্দ্র সিংহ হুডা, কেরলের কে সি বেণুগোপাল বা শশী তারুর, চণ্ডীগড়ের মণীশ তিওয়ারি, অসমের গৌরব গগৈয়ের নাম আলোচনায় উঠে আসছে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, শনিবার সকালে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনার পরে সন্ধ্যায় কংগ্রেসের সংসদীয় দলের বৈঠকে রাহুল বাদে বাকি সাংসদেরা এ নিয়ে দাবি তুলবেন। সনিয়া গান্ধী কংগ্রেসের সংসদীয় দলের নেত্রী। ফলে তাঁরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে। সে ক্ষেত্রে আগামিকালই এ নিয়ে ফয়সালা না-ও হতে পারে।
কংগ্রেস এ বার লোকসভা নির্বাচনে ৯৯টি আসন জিতে গত বারের থেকে ভাল ফল করলেও কংগ্রেস শীর্ষনেতৃত্ব মনে করছেন, পশ্চিমবঙ্গ, ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, উত্তরাখণ্ড এবং কংগ্রেস শাসিত কর্নাটক ও হিমাচল প্রদেশে দলের ফল খুবই খারাপ হয়েছে। ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে এই রাজ্যগুলির থেকে রিপোর্ট চাওয়া হবে। বেশ কিছু রাজ্যে ইতিমধ্যেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও এআইসিসি-তে রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত নেতারা খারাপ ফলের দায় নিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এবং বিগত লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী তাঁর নিজের লোকসভা কেন্দ্র বহরমপুরে ৮৫ হাজারের বেশি ভোটে হেরে গিয়েছেন। অধীর কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে শুক্রবার রাতে দিল্লি এসে পৌঁছেছেন। তিনি অবশ্য নিজের হারের জন্য কাউকে দায়ী করতে নারাজ। কিন্তু রাজ্যে একটি আসন কমে যাওয়ার পরে বাংলায় বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে কী লাভ হয়েছে, তা বুঝে নিতে চাইছে কংগ্রেস হাইকমান্ড।
চলতি বছরের শেষে ও আগামী বছরের গোড়ায় হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড ও দিল্লির চারটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। কংগ্রেস সূত্রের খবর, হাইকমান্ড লোকসভা ভোটে হিন্দি বলয়ের দুই রাজ্য, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়ের ফল নিয়ে বিশেষ ভাবে চিন্তিত। দুই রাজ্যে ৪০টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস ৩৯টিতেই হেরেছে। মধ্যপ্রদেশে কমল নাথের ‘গড়’ ছিন্দওয়াড়ায় তাঁর পুত্র নকুল নাথ হেরে গিয়েছেন। ছত্তীসগঢ়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল হেরে গিয়েছেন। আজ কমল নাথ দশ জনপথে এসে সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেছেন। কমল নাথের যুক্তি, বিজেপি অর্থবল ও সরকারি যন্ত্র কাজে লাগিয়েছে। কিন্তু প্রয়াত অর্জুন সিংহের পুত্র, অরুণ সিংহের অভিযোগ, কমল নাথ ও তাঁর পুত্র নিজেরাই বিজেপিতে যোগ দেবেন কি না, তা নিয়ে ভোটের আগে জল্পনা চলছিল। এর আগে মধ্যপ্রদেশের যে সব কংগ্রেস নেতা বিজেপিতে গিয়েছেন, তাঁদের আটকানোর কোনও চেষ্টা হয়নি।
কংগ্রেস শাসিত হিমাচলের চারটি লোকসভাই বিজেপি জিতেছে। শুধু তা-ই নয়, মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখুর বিধানসভা কেন্দ্র-সহ সব বিধানসভা এলাকাতেই কংগ্রেস পিছিয়ে রয়েছে। অথচ হিমাচলের ছয় বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়কের সদস্যপদ খারিজের পরে সেখানে উপনির্বাচন হয়েছিল। তার মধ্যে চারটি কেন্দ্রে কংগ্রেস জিতেছে। কংগ্রেস হাইকমান্ড মনে করছে, রাজ্যে সরকার বাঁচাতে হিমাচলের কংগ্রেস নেতারা লোকসভা ভোটের বদলে
বিধানসভার উপনির্বাচনে বেশি মন দিয়েছিলেন।
দিল্লিতে আম আদমি পার্টির সঙ্গে কংগ্রেসের জোট হলেও বিজেপি ফের সাতটি আসনই জিতে নিয়েছে। দিল্লির কংগ্রেস নেতারা হাইকমান্ডকে জানিয়েছেন, আম আদমি পার্টির থেকে সহযোগিতা মেলেনি। যদিও কংগ্রেস হাইকমান্ড মনে করছে, দলের নিজস্ব সাংগঠনিক অবস্থাও ভাল নয়। আগামী বছরের গোড়ায় দিল্লির বিধানসভায় ভোট। আপ ইতিমধ্যেই ঘোষণা করে দিয়েছে, তারা একাই লড়বে। আজ কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা বলেন, ‘‘আমরা তো আগেই বলে দিয়েছি, বিধানসভা ভোটে আপ-এর সঙ্গে আমাদের জোট হবে না।’’ সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে আম আদমি পার্টি ইন্ডিয়া জোটে থাকবে কি না, সেই প্রশ্নের উত্তরে খেরার মন্তব্য, ‘‘সেটা আপ-কেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy