Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

প্রার্থী ও জোট নিয়ে প্রশ্ন সিপিএমের অন্দরে

অলিখিত জোট বেঁধে ভোটের শতাংশ বাড়িয়ে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে বেশ কিছু আসন পায় বাম এবং কংগ্রেস। একাধিক পঞ্চায়েতও দখলে আসে।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

দয়াল সেনগুপ্ত 
শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৪ ০৭:৫৭
Share: Save:

ব্রিগেডে তৃণমূলের জনগর্জন সভার পাল্টা তৃণমূল এবং বিজেপি, দুই দলকেই বর্জনের ডাক দিয়ে বীরভূমের রামপুরহাটে সভা করেছে সিপিএম। কিন্তু, দলের সংগঠনের যা হাল, তাতে জেলার দুই লোকসভা আসনে সিপিএম দাগ কাটতে পারবে না বলেই দাবি বিজেপি ও তৃণমূলের। গত কয়েক বছরের নির্বাচনী পরিসংখ্যানও সিপিএমের পক্ষে যাচ্ছে না।

লোকসভা নির্ঘণ্ট ঘোষণা হওয়ার কথা আজ, শনিবার। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের জোট হবে কি না, স্পষ্ট নয়। বামফ্রন্ট প্রথম দফায় যে ১৬টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে, তাতে বীরভূম ও বোলপুর কেন্দ্রের নাম নেই। ফলে, এই জেলার কোনও আসনে জোট হতে পারে বলে মনে করছেন জেলা সিপিএম নেতৃত্ব। কিন্তু, নিচুতলার কর্মীদের প্রশ্ন, কবে বাকি আসনগুলিতে প্রার্থী ঘোষণা হবে? কবে জানা যাবে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা হচ্ছে কি হচ্ছে না?

২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর থেকেই অন্য অনেক জেলার মতো এক সময় ‘দুর্গ’ হিসাবে পরিচিত বীরভূমেও সংগঠন ক্রমেই তলানিতে ঠেকেছে সিপিএমের। তবু, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম একক ভাবে এবং ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে জোটের (বাম-কংগ্রেস) ভোট-প্রাপ্তির নিরিখে কিছুটা ভাল জায়গায় ছিল। তার পর থেকেই অবশ্য ক্রমশ নিম্নগামী হয়েছে রেখাচিত্র।

’১৯-এর লোকসভা এবং ’২১-এর বিধানসভা নির্বাচন ধরলে একক ভাবে তো নয়ই, কংগ্রেসের সঙ্গে মিলিত ভাবেও দাগ কাটতে পারেনি বামেরা। তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসাবে উঠে এসেছে বিজেপি। বীরভূমে তাদের ভোটও বেড়েছে অনেকটাই। যদিও এই অবস্থা থেকে বাম-কংগ্রেস জেলায় কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছিল গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকে। সাগরদিঘি উপনির্বাচনের ফলের পরে উজ্জীবিত হয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনেও একই ফর্মুলা কাজে লাগিয়েছিল বাম-কংগ্রেস। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সিউড়িতে এক সভায় মহম্মদ সেলিম ও অধীর চৌধুরীর সভায় চোখে পড়ার মতো ভিড় হয়।

অলিখিত জোট বেঁধে ভোটের শতাংশ বাড়িয়ে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে বেশ কিছু আসন পায় বাম এবং কংগ্রেস। একাধিক পঞ্চায়েতও দখলে আসে। উল্লেখযোগ্য ভাবে ভোট বেড়েছিল বামেদের। বিজেপি যেখানে ১৯.৪০ শতাংষ ভোট পায়, সিপিএম পেয়েছিল ১২.৬৭ শতাংশ। বামেদের ঘরে ফিরেছিল সংখ্যালঘু ভোটের একাংশও। তবে, নিচুতলার নেতা-কর্মীদের আক্ষেপ, পঞ্চায়েত নির্বাচনের ‘সুফল’ ধরে রাখা যায়নি। জেতা সদস্যদের অনেকেই শাসকদলে যোগ দিয়েছেন। সেই সময় তাঁদের আটকানোর ক্ষেত্রে দলের ‘খামতি’ ছিল।
ওই কর্মীদের কথায়, ‘‘নেতারা কখন আসবেন, কখন ঠিকঠাক কর্মসূচি হবে, সেই ভরসায় কি দল চলে? পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরেই দল কেমন ‘ঝিমিয়ে’ গেল।’’ সেই নভেম্বরে দলের ইনসাফ যাত্রা এবং মার্চে রামপুরহাটে জনজোয়ার সভার বাইরে তেমন বড় কর্মসূচি হয়নি জেলায় বলেও ওই অংশের দাবি।

যদিও একথা মানতে নারাজ জেলা সিপিএম নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে জয়ী ১৫১ জনকে নিয়ে সভা করা হয়েছিল। জেলার মহিলা সদস্যদের নিয়ে মহকুমা ভিত্তিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। বিরোধী দলের সদস্য হিসেবে মান্যতা পেতে ব্লক অফিসগুলিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। নলহাটি ২ ব্লকে দু’টি সভা হয়েছিল ।যুবদের কর্মশালা ও ছাত্র সম্মেলন হয়েছে। বাড়ি বাড়ি জনসংযোগ এবং বুথস্তরের সংগঠনকে মজবুত করা নিয়েও কাজ হয়েছে বলে দাবি জেলা সিপিএমের নেতাদের।

সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলছেন, ‘‘কংগ্রেসের ভোট ব্যাঙ্ক বলে কিছু নেই। তবে, এটাও ঠিক, বিজেপি ও তৃণমূল, দুই শক্তির বিরুদ্ধে লড়তে ঐক্যবদ্ধ হলে তার আলাদা একটা শক্তি থাকে। কার ভোটব্যাঙ্ক কত, কার কত সমর্থন, তা বিচার্য নয়।’’ জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ভোটে আমাদের লিড বাড়বে, কমবে না। কে কী করল, বড় কথা নয়। মানুষ খুব সচেতন। রাজ্য সরকার কী করেছে, সেটা সকলে জানেন। কেউ চাইবেন না তাঁর ভোট নষ্ট করতে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 CPIM Suri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy