মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
কলকাতা দক্ষিণের দলীয় প্রার্থী সায়রা শাহ হালিমকে নিয়ে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাড়া, হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে প্রচার করতে গিয়ে রবিবার ফের পুলিশের বাধার মুখে পড়ার অভিযোগ করলেন সিপিএমের যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মীনাক্ষী। সেই সঙ্গে যাদবপুর, ডায়মন্ড হারবারে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ করেছেন সেখানকার দুই সিপিএম প্রার্থী যথাক্রমে সৃজন ভট্টাচার্য ও প্রতীক-উর রহমান। লোকসভা নির্বাচনের শেষ দফায় এই তিনটি-সহ রাজ্যের ৯টি কেন্দ্রে ভোট রয়েছে। সেই ভোট যত এগিয়ে আসছে, কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকাগুলিতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিরোধীদের অভিযোগের সংখ্যাও বাড়ছে। তৃণমূল অবশ্য অভিযোগে আমল দেয়নি।
সায়রাকে সঙ্গে নিয়ে হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে প্রচারপত্র বিলি করতে গিয়েছিলেন হাওড়ার সিপিএম প্রার্থী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়, ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী। রাস্তায় ঢোকার মুখে ব্যারিকেড রয়েছে। সেখানেই ভোটারদের কাছাকাছি পৌঁছতে যান মীনাক্ষীরা। কিন্তু পুলিশ ১৪৪ ধারা রয়েছে জানিয়ে তাঁদের বাধা দেয় বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের মধ্যে বাদানুবাদ, ধস্তাধস্তি বাধে। ভোটারদের সঙ্গে কেন কথা বলতে দেওয়া হবে না, সেই প্রশ্ন তুলে মীনাক্ষীর তোপ, “প্রার্থী-সহ তিন জন প্রচারপত্র বিলি করতে যাবেন বলা হয়েছিল। যে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলেন, তাঁর পাড়াতেই গণতন্ত্রের এই হাল!”
‘দলদাস’ আখ্যা দিয়ে পুলিশের উদ্দেশে মীনাক্ষী বলতে থাকেন, “বাড়িতে উর্দি পরার সময় মেরুদণ্ডটাও লাগিয়ে নেবেন। না হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন বলেছিলেন লিউকোপ্লাস্ট লাগাতে, আমাদের বলবেন, আমরা বাঁশ-দড়ি বাঁধতে জানি! বেঁধে দেব!” পাশাপাশি, নির্বাচন কমিশনকে চার বার ফোন করেও লাভ হয়নি বলে দাবি তাঁর। সায়রারও অভিযোগ, “আমার হাতে কিছুই নেই। তা-ও আটকানো হচ্ছে। ভোটারদের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না।” ঘটনাচক্রে, পুলিশের বিরুদ্ধে আগেও এই এলাকায় এবং হরিশ মুখার্জি স্ট্রিটে তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেছিল সিপিএম।
কালীঘাটে এ দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের মন্তব্য, ‘‘হাজার হাজার দলদাস পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে পিসি-ভাইপো সর্বত্র তামাশা দেখাবেন আর তাঁদের নকল কেল্লায় কেউ ভোট-প্রচারে গেলে যুক্তিহীন বাধা। কীসের ভয়?’’ প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায়ও বলেছেন, ‘‘রানির রাজত্ব চলছে! গণতন্ত্র নিয়ে এত কথা যাঁরা বলছেন রোজ, সেই পিসি-ভাইপোর এলাকায় বিরোধীরা প্রচার করতে পারবে না! এটা কীসের গণতন্ত্র?’’
পুলিশ তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে, এমন অভিযোগ করেছেন যাদবপুরের সিপিএম প্রার্থী সৃজনও। তিনি, ডায়মন্ড হারবারের সিপিএম প্রার্থী প্রতীক-উর, প্রাক্তন সাংসদ শমীক লাহিড়ী এ দিন বারুইপুরে দলীয় দফতরে অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস তৈরির। সৃজনের অভিযোগ, “তৃণমূল বুঝতে পারছে যাদবপুরে পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে। তাই মানুষ যাতে ভোট-কেন্দ্রে যেতে না পারেন, সেই জন্য ভয় দেখাচ্ছে। সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে।” ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক সওকাত মোল্লা ও বিভাস সর্দারের নেতৃত্বে ভাঙড়ে ও বারুইপুর পূর্বে গুন্ডামি চলছে বলে অভিযোগ করে তাঁদের নজরবন্দি করার দাবি জানিয়েছে সিপিএম। ডায়মন্ড হারবারেও সন্ত্রাসের পরিবেশ চলছে অভিযোগ করে রাজ্যের মন্ত্রী দিলীপ মণ্ডল, জাহাঙ্গির খান-সহ বেশ কয়েক জনকে নজরবন্দি করার দাবি তুলেছে তারা। যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সওকাতের বক্তব্য, “আমাদের এমন খারাপ অবস্থা হয়নি যে, মানুষকে ভোট না দেওয়ার জন্য ভয় দেখাব। আসলে ওঁরা ভয় পেয়েছেন। সৃজনেরা বুঝে গিয়েছেন, ওঁদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। তাই বাজার গরম করতে এই সব কথা বলছেন। এটাই সিপিএমের সংস্কৃতি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy