নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল ছবি।
মঙ্গলে মোদী কলকাতায়। দিল্লিবাড়ির লড়াইয়ে প্রথম বার কলকাতা উত্তরের প্রচারে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর তা নিয়ে বিজেপি শিবিরে উত্তেজনা তুঙ্গে। ঝড়বৃষ্টি মিটে যেতেই সল্টলেকে বিজেপি দফতরে সোমবার সন্ধ্যায় বিশেষ বৈঠকে বসেন রাজ্য নেতারা। আগেই ঠিক হয়েছিল, কলকাতায় প্রধানমন্ত্রীর প্রথম কর্মসূচিকে রঙিন চেহারা দেওয়া হবে। প্রস্তুতি কেমন হয়েছে, কোথায় এখনও ঘাটতি রয়েছে, তা নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক হয়।
প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে মোদীর রোড-শো কোন পথে যাবে, তা চূড়ান্ত করে ফেলেছিল রাজ্য বিজেপি। মোদীর নিরাপত্তা-সহ অন্যান্য দিক খতিয়ে দেখেই ঠিক হয় যাত্রাপথ। তবে শেষ মুহূর্তে সামান্য রদবদল হয়েছে। যেখানে শুরুর কথা ছিল সেখানে শেষ হবে। আর শুরু হবে যেখানে শেষ হওয়ার কথা ছিল। মোদীর রোড-শো হবে শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড় থেকে সিমলা স্ট্রিটের কাছে স্বামী বিবেকানন্দের জন্মভিটে পর্যন্ত। অর্থাৎ, নেতাজি ও স্বামীজির স্মৃতি ছুঁয়েই হবে রোড শো।
তবে তার আগে মোদীর যাওয়ার কথা কলকাতার আর এক স্মৃতিসরণিতে। উত্তর কলকাতার বাগবাজারের কাছে এক নম্বর উদ্বোধন লেনে রামকৃষ্ণ মঠের বাড়িটিই ‘মায়ের বাড়ি’ হিসাবে পরিচিত। এই বাড়ি রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের মুখপত্র ‘উদ্বোধন’ পত্রিকারও অফিস। দক্ষিণেশ্বর থেকে কলকাতায় এসে রামকৃষ্ণ-জায়া সারদাদেবী এই বাড়িতেই থাকতেন। বাড়ির ছাদ থেকে দক্ষিণেশ্বরের মন্দির দেখা যেত। রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক রয়েছে মোদীর। তবে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে তিনি কখনও বাগবাজারের এই বাড়িতে আসেননি। মঙ্গলবারই তিনি প্রথম বার সেখানে যেতে পারেন।
প্রথমে যখন মোদীর রোড-শোর পথ নিয়ে আলোচনা হয়, তখনই এই বাড়ির সামনে থেকে যাত্রা শুরু করার প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু নিরাপত্তাজনিত কারণে পথ বদল করা হয়েছিল। তবে আদতে মোদীর সফর বাগবাজারের ঐতিহাসিক মায়ের বাড়ি থেকেই শুরু হচ্ছে। যদিও সেখানে বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের আসতে বারণ করা হয়েছে। বাগবাজার থেকে গাড়িতে অল্প দূরের শ্যামবাজারে গিয়ে রোড-শো শুরু করবেন প্রধানমন্ত্রী। যা ঠিক আছে, তাতে মঙ্গলবার দুপুরে মোদী বারাসত লোকসভা আসনের অন্তর্গত অশোকনগরে একটি সভা করবেন। এর পরে তাঁর সভা রয়েছে যাদবপুর আসনের বারুইপুরে। সেখান থেকে ফিরে মায়ের বাড়ি হয়ে রোড-শো। রাজ্য বিজেপি ঠিক করেছে, রোড-শোয়ের দু’কিলোমিটার পথে মোট ৪০টি জায়গায় মঞ্চ বেঁধে মোদীকে স্বাগত জানানো হবে। এ জন্য প্রতিটি মঞ্চে বাংলার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক বৈচিত্র তুলে ধরারও পরিকল্পনা রয়েছে। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সোমবার বলেন, ‘‘আয়োজনে এবং সমাগমে মঙ্গলবার কলকাতায় এক ঐতিহাসিক রোড-শো হবে।’’
প্রসঙ্গত, মমতার ‘সন্ন্যাসী’ মন্তব্যের পরে পাল্টা সরব হয়েছেন মোদী। বদলে গিয়েছে পদ্মশিবিরের প্রচারের বক্তব্যও। রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত যোগাযোগের কথাও তুলে ধরেছেন মোদী। সেই সূত্রে তিনি বাংলায় প্রচারে এসে বার বার রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে স্বামী বিবেকানন্দের কথা বলেছেন। সেই স্বামীজিকে শ্রদ্ধা জানিয়েই হবে তাঁর কলকাতা উত্তরের রোড-শো। মনে করা হচ্ছে, স্বামীজি এবং রামকৃষ্ণ মিশন নিয়ে আপামর বাঙালির আবেগ ছোঁয়ার লক্ষ্যই রোড-শো শুরুর স্থান নির্বাচনে গুরুত্ব পেয়েছে। যা আরও বাড়িয়ে দেবে মায়ের বাড়িতে মোদীর সফর। যেখান থেকে মমতার বক্তব্যের জবাব দিতে সন্ন্যাসীদের খালিপায়ে মিছিল শুরু হয়েছিল গত সপ্তাহে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy