প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: ফেসবুক থেকে।
নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘‘আপনারা শুধু সরকার নির্বাচন করবেন না, বাংলার ভবিষ্যৎ, বাংলার সুরক্ষা নির্বাচন করবেন। অনেক বড় দায়িত্ব। হাওড়া থেকে রথীন চক্রবর্তী এবং উলুবেড়িয়া থেকে উদয় পাল চৌধুরীকে প্রার্থী করা হয়েছে। তাঁদের ভোট দিন।’’ এর পর ‘বন্দে মাতরম’ বলে সভা শেষ করেন মোদী।
মোদী বলেন, ‘‘বিকশিত ভারতের প্রতিশ্রুতি এক মাত্র বিজেপি পূরণ করতে পারে। আজ আমরা বাংলায় বিশ্বমানের পরিকাঠামো আনছি। হাওড়ায় জলের নীচ দিয়ে মেট্রো চালু। আগে পশ্চিমবঙ্গের জন্য ৪ হাজার কোটি টাকার রেল বাজেট বরাদ্দ করা হত। আমাদের সরকার ১৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করে। আমরা শালিমার এবং সাঁতরাগাছি স্টেশনকে বিশ্বমানের তৈরি করছি। এটা করেছে মোদী সরকার। হাওড়া সেতুতে লাইট অ্যান্ড সাউন্ড করার পরিকল্পনা করেছি। আজ পর্যটকদের তা আকর্ষণ করছে।’’
মোদী বলেন, ‘‘তোষণের রাজনীতিতে তৃণমূল এবং কংগ্রেস পাল্লা দিচ্ছে। কংগ্রেসের শাহজাদা দেশে সকলের সম্পত্তি পরখ করতে চান। আপনাদের সম্পত্তি, জমি সব খতিয়ে দেখতে চান। তার পর তা তাঁদের মধ্যে বিলি করতে চান, যাঁরা ইন্ডি-জোটের হয়ে ভোট জিহাদ করেন। আপনাদের সম্পত্তি ছিনিয়ে নিতে চান। বলছে ইনহেরিটেন্স কর আনতে চায়। কংগ্রেস তফসিলি জাতি, জনজাতি, অনগ্রসর শ্রেণির সংরক্ষণও মুসলিমদের দিতে চায়। এ সব লোককে সংসদে পাঠানো উচিত? তাঁদের জমানত জব্দ করা উচিত নয় কি?’’
মোদী বলেন, ‘‘আজ তৃণমূল সরকারের আমলে আমাদের বোনেরা সুরক্ষিত নন। মহিলা অত্যাচারিত। সন্দেশখালিতে কী হয়েছে, গোটা দেশ দেখেছে। মেয়েদের উপর অত্যাচারীকে বাঁচাতে নেমে পড়েছে তৃণমূলের গোটা দল। কোর্টকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। কিন্তু তৃণমূল এখনও ওঁর জন্য ব্যাটিং করছে।’’
মোদী বলেন, ‘‘কংগ্রেস এবং তৃণমূল বাংলার পরিচিতি সঙ্কটে ফেলে দিয়েছে। অনেক এলাকায় এখানকার লোক অল্পসংখ্যক হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলের বিধায়কেরা হিন্দুদের হুমকি দিচ্ছেন। বলছেন, এখানে হিন্দুর সংখ্যা কম। আমরা হিন্দুদের ভাগীরথীতে ডুবিয়ে দেব। তৃণমূল তাঁদেরও রক্ষা করে। তোষণের এই অমানবিক চেহারা কমই দেখা যায়।’’
মোদী বলেন, ‘‘গরিবদের অধিকার ছিনিয়ে নিচ্ছে তৃণমূল। তাদের ২০ মে সাজা দেবেন তো? তুলে ফেলে দেবেন তো? তৃণমূল আপনাদের হিত চায় না। ওরা শুধু অনুপ্রবেশকারীদের হিতসাধন করতে চায়। এরা ভারতের লোককে বহিরাগত বলে। অথচ অন্য দেশ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের বাংলায় কব্জা করতে দেয়। এরা কি বহিরাগত নয়? এরা বাংলার জন্য বিপদ নয় কি?’’
মোদী বলেন, ‘‘তৃণমূল তাঁদেরই টাকা দেয়, যাঁরা ওই দলের সঙ্গে যুক্ত বা তাদের কাটমানি দেয়। গরিবদের কেন্দ্রীয় যোজনার সুবিধা পেতে দেয় না তৃণমূল। আমরা সব ঘরে জল দিতে চাই। ওরা দিচ্ছে না। রাজনৈতিক ফায়দার জন্য বঙ্গবাসীকে জলকষ্ট দিচ্ছে।’’
মোদীর কথায়, ‘‘তৃণমূল দুর্নীতিকে নিজের ব্যবসা করে নিয়েছে। তৃণমূল হোক বা ইন্ডিয়া জোটের দল— দুর্নীতি সকলে করে। জোটের অন্য দল লুকিয়ে দুর্নীতি করে। তৃণমূল খোলাখুলি করে। এখানকার লটারি দুর্নীতি তার প্রমাণ। সেই ফল যুবকেরা ভুগছে। সেই দুর্নীতির নেপথ্যে কারা? তৃণমূলের দুর্নীতিগ্রস্ত নেতা। এর শিকড় অনেক দূর পর্যন্ত গিয়েছে। কিন্তু তৃণমূল সরকার তাঁকে বাঁচাচ্ছেন।’’
মোদী বলেন, ‘‘তৃণমূলের নেতাদের কাজ গণ্ডগোল করা। ওদের পালিত গুন্ডাদের কাজ হল জমি দখল করা। প্রকাশ্যে জমি দখল করে ওরা। বলুন? লুঠ করে কি না! সব কিছু সরকারের কৃপায় হয় কি না! আপনারাই বলুন? সরকার কী করে? গন্ডগোল।’’
মোদী বলেন, ‘‘কৃষক মান্ডিতে ফসল বিক্রি করতে পারছে না। সেখানে তৃণমূলের তোলাবাজেরা কব্জা করে রেখেছে। তোলাবজদের কমিশন না দিয়ে কোনও কিছু বিক্রি করা যায় না।’’
মোদী ভাষণ থামিয়ে এক শিশুকন্যার আঁকা নিজের ছবির প্রশংসা করেন। জানান, তাঁর প্রতিনিধিরা গিয়ে সভা শেষে ছবি নিয়ে আসবেন। বলেন, ‘‘এক সময় হাওড়া হাব ছিল। কারখানা ছিল। সব ছিল। কিন্তু আগে বাম, পরে তৃণমূল সব উদ্যোগ, শিল্প বন্ধ করে দিয়েছে। এখানকার রেডিমেড বস্ত্র শিল্পও বন্ধ করা হয়েছে।’’
মোদী বলেন, ‘‘কংগ্রেসে দুর্নীতি, পরিবারবাদ এবং তোষণের রাজনীতি করে। অন্য দিকে, রয়েছে বাম। বামেদের অত্যাচার। এই সকলকে মিলিয়ে, সকলের খারাপ জিনিস এক জায়গায় জড়ো করলে তৈরি হয় তৃণমূল।’’
মোদী বলেন, ‘‘আগে গরিবেরা দূর থেকে ব্যাঙ্কের দিকে তাকাতে পারতেন না। মোদী সেই ব্যবস্থা করেছে। ৫০ লক্ষ মানুষ বাংলায় কৃষক সম্মান নিধি পেয়েছেন। বাংলায় কৃষকদের জন্য ৯ হাজার কোটি টাকা পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে।’’
মোদী মনে করিয়ে দিলেন, উজ্জ্বলা যোজনায় বিনামূল্যে গ্যাস পাচ্ছেন মহিলারা। আগে মহিলারা উনুনে রান্না করতেন। ১০০টি সিগারেটে ধোঁয়া যেত শরীরে। তাঁর কথায়, ‘‘আর চিন্তা নেই। দিল্লিতে আপনার ছেলে রয়েছে।’’
মোদি বলেন, ‘‘কেন্দ্রের বিজেপি সরকার সব দেশবাসীর দরজায় পৌঁছচ্ছেন। আজ তাই বাংলার কোটি কোটি মানুষ বিনামূল্যে রেশন পাচ্ছেন। তাই কোনও গরিব মাকে আর নিজের বাচ্চাকে ক্ষুধার্ত দেখতে হবে না।’’
মোদী বলেন, ‘‘জনজাতির সেবার জন্য আমার জন্ম। আগের প্রার্থীরা ভোট নিলেও সরকার হওয়ার পর ভাষা বদলে যেত। নেতার কাছে আপনারা গেলে নেতা বলতেন, আপনারা কে? এই ভাবনা মোদী বদলে দিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy