দুর সঞ্চারে কল্যাণী এমসের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঞ্চে আছেন রাজ্যপাল-সহ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। রবিবার কল্যাণীতে। ছবি: প্রণব দেবনাথ।
নরেন্দ্র মোদী নিজেই কৃষ্ণনগরে জনসভা করতে উৎসাহ দেখিয়েছেন। আরামবাগ, বারাসতের পাশাপাশি তাই মোদীর এ বারের সফরে জায়গা পেয়েছে ক্রমশ ‘সম্ভবনাময়’ হয়ে ওঠা কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্র। বিজেপির দাবি তেমনই। রাজ্য বিজেপি আগেই জানিয়েছিল, এ বার লোকসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগর কেন্দ্রটি তাদের কাছে সম্মানের লড়াই। ওই কেন্দ্রে জিততে তারা সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে। জেলা নেতৃত্বের দাবি, বিজেপির সেই লড়াইয়ে শক্তি জোগাবে কৃষ্ণনগরে নরেন্দ্র মোদীর সভা।
জাতীয় রাজনীতিতে এ বার কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্র বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এই কেন্দ্রের সাংসদ তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র সংসদের ভেতরে ও বাইরে ঝাঁজালো বক্তৃতায় বিজেপিকে বারবার অস্বস্তিতে ফেলেছে। সেই মহুয়া মৈত্র ‘সংসদে অর্থের বিনিময়ে প্রশ্ন’-এর অভিযোগে সংসদ থেকে বহিষ্কৃত হন। মহুয়া যাতে ফের সাংসদ না-হতে পারেন, ফের যাতে তাঁর ঝাঁঝালো বক্তৃতার মুখোমুখি না-হতে হয়, সে কারণে কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে জিততে মরিয়া বিজেপি। জেলার রাজনৈতিক মহলের ধারণা তেমনই। তাই কৃষ্ণনগরে ইতিমধ্যে ঘুরে গিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। তাঁরা কোনও রাখঢাক না রেখেই ঘোষণা করেছেন, এ বার কৃষ্ণনগর কেন্দ্র তাঁদের কাছে সম্মানের লড়াই। অন্য দিকে, শান্তিপুরে প্রশাসনিক সভায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের মহুয়াকে তৃণমূলের প্রার্থী করার ইঙ্গিত দেন। তাই কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রকে ঘিরে দুই রাজনৈতিক দলের লড়াই যে কঠিন হতে তা কার্যত স্পষ্ট। এই আবহে নরেন্দ্র মোদী কৃষ্ণনগরে জনসভার আগ্রহ দেখানোয় সেই লড়াই অন্য মাত্রা পেল বলে মনে করছে জেলার রাজনৈতিক মহল। বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস বলছেন,“কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে এক ইঞ্চি জমি ছাড়া হবে না। মোদীজির জনসভা থেকেই সেই লড়াই শুরু হবে। কৃষ্ণনগর কেন্দ্রটি আমরা জিতবই।”
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, নরেন্দ্র মোদীর জনসভার কথা ঘোষণা হতে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি নেতাকর্মীদের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। শনিবারই রানাঘাট, কৃষ্ণনগর, বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ, জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি, কেন্দ্রগুলির ‘ইন চার্জ’ ও রাজ্য নেতৃত্ব বৈঠক করেন। বৈঠকে নদিয়া উত্তর সাংসঠনিক জেলার জেলা নেতৃত্বও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে মোদীর জনসভায় রানাঘাট ও কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্র থেকে ৫০ হাজার করে এবং মুর্শিদাবাদ জেলার তিনটি কেন্দ্র থেকে ৫০ হাজার লোক, সব মিলিয়ে দেড় লক্ষ লোক আনার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে। সেই মতো শনিবারই প্রতিটা সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তার এলাকার মণ্ডল সভাপতিদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। মণ্ডল সভাপতিরা কত জন লোক আনতে পারবেন তার রিপোর্ট সোমবারের মধ্যে জেলা সভাপতিকে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এত লোক নিয়ে আনতে ওই দিন কল্যাণী ও মুর্শিদবাদ থেকে ‘বিশেষ’ ট্রেন চালানোর পরিকল্পনাও রয়েছে। বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায় বলেন,“দেড় লক্ষ লোক তো হবেই, আমরা তারও বেশি লোক নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি। মানুষ স্বতঃস্ফুর্ত ভাবেই মোদীজির সভায় যেতে চাইছেন।”
যদিও নরেন্দ্র মোদীর জনসভাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র দেবাশিস রায় বলেন, “কৃষ্ণনগর তো দূরের কথা রানাঘাটেও এ বার বিজেপি হারবে। আগের নির্বাচনেও তো মোদী এসেছিলেন। তারপরেও হেরে ভূত হয়েছিল বিজেপি। বাংলার মানুষ মোদীর মিথ্যাচার ধরে ফেলেছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy