—ফাইল চিত্র।
লোকসভা নির্বাচনে বসিরহাটের প্রার্থী নির্বাচনে চমক দিয়েছে বিজেপি। গত রবিবার রাতে ঘোষণা করা হয় সন্দেশখালির প্রতিবাদী মুখ রেখা পাত্রকে। তখনই মনে করা হয়েছিল, বসিরহাটে জয়ের চেয়েও বিজেপির পক্ষে রেখাকে বাছার ক্ষেত্রে গুরুত্ব পেয়েছে ওই আসন এলাকার সন্দেশখালিতে মহিলাদের আন্দোলন। তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান, উত্তম সর্দার, শিবপ্রসাদ হাজরাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগে যে আন্দোলন হয়েছিল তাতে মুখর হতে দেখা যায় রেখাকে। কন্যাসন্তানকে কোলে নিয়ে মিছিলেও হাঁটেন তিনি। সেই রেখাকে গোটা রাজ্যেই নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের মুখ হিসাবে তুলে ধরতে চায় বিজেপি। প্রার্থী হিসাবে নাম ঘোষণার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ফোন পেলেন রেখা। আর সেই ফোনেই মোদী ‘শক্তিস্বরূপা’ বলে রেখাকে সম্বোধন করেন।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজনীতির অভিজ্ঞতা না-থাকা রেখা আপাতত কলকাতাতেই রয়েছেন। মঙ্গলবার সল্টলেকে বিজেপি দফতরে বসে রাজ্য নেতারা ঠিক করে দেন কী ভাবে লড়াই হবে বসিরহাটে। এরই মধ্যে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রেখার কাছে আসে মোদীর ফোন। অনেকটা সময় ধরেই কথা হয় দু’জনের। সেই কথোপকথনের সময়েই মোদী ‘দেবীশক্তি’র স্বরূপ বলে রেখাকে উল্লেখ করেন। মোদী তাঁকে ‘শক্তিস্বরূপা’ বলে সম্বোধন করে ভোটের প্রস্তুতি কেমন চলছে তা জানতে চান। একই সঙ্গে জানতে চান, সন্দেশখালিতে কী কী ঘটেছিল। জবাবে রেখা মোদীকে বলেন, ‘‘শুধু সন্দেশখালিতেই নয়, গোটা বসিরহাটেই মা-বোনের উপরে নির্যাতন হয়েছে। দোষীদের কঠোর সাজা হওয়া দরকার।’’ রেখা প্রধানমন্ত্রীর কাছে এমন নালিশ করেন বলেও জানা গিয়েছে যে, গত বিধানসভা এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনে সন্দেশখালিতে সাধারণ মানুষ ভোটই দিতে পারেননি। সেই সঙ্গে আর্জি জানান, এ বার যেন সবাই ভোট দিতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী সন্দেশখালির পাশে থাকায় তিনি খুশি বলেও জানান। এর পরে মোদী বসিরহাটে নির্বাচনের প্রচারের কেমন প্রস্তুতি চলছে সে বিষয়েও খোঁজ নেন।
প্রসঙ্গত, রেখাকে বিজেপি প্রার্থী করার পরে খোদ সন্দেশখালিতেই তাঁর বিরুদ্ধে পোস্টার পড়তে দেখা যায়। এ প্রসঙ্গেও জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। জবাবে রেখা বলেন, ‘‘তৃণমূলের চাপে কয়েক জন মহিলা সেটা করেছিলেন। কিন্তু তাঁরা এখন বিজেপির সঙ্গেই রয়েছেন। আমায় ভিডিয়ো কল করে সে কথা জানিয়েছেন তাঁরা। এর পরে আর তাঁরা এ সব করবেন না বলেও জানিয়েছেন। ক্ষমাও চেয়েছেন। কিন্তু ওঁদের সঙ্গে তো আমার কোনও শত্রুতা নেই। আমি সব মা-বোনের সম্ভ্রম রক্ষার লড়াই করব।’’
মোদীর সঙ্গে হিন্দিতেই কথা বলেন রেখা। তিনি বলেন, ‘‘আমার স্বামীও তামিলনাড়ুতে কাজ করেন। আমি চাই, এমন কিছু হোক যাতে সবাই যেন রাজ্যে থেকে কাজ করতে পারেন। কাউকে যেন বাইরে যেতে না হয় সেই কাজ করব আমি।’’ কী ভাবে তিনি এমন আন্দোলনে নেমেছিলেন? মোদীর এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘স্থানীয় মা-বোনের সমর্থন পেয়েই আন্দোলন চালানো সম্ভব হয়েছিল। আগামী দিনেও সকলের সমর্থন নিয়ে এবং সকলকে নিয়ে আমি আন্দোলনে থাকতে চাই।’’
মোদী যখন তাঁকে ‘শক্তিস্বরূপা’ বলে সম্বোধন করেন তখন কিছুটা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন রেখা। তিনি বলেন, ‘‘আপনার আশীর্বাদ নিয়ে আপনার ছোট মেয়ে হয়ে আমি কাজ করতে চাই।’’
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সবাইকে নিয়ে বসিরহাটে জয়ের লক্ষ্যে লড়াই করতে হবে বলে জানান রেখাকে। সেই সঙ্গে রাজ্যের পরিস্থিতিও জানতে চান। রেখা বলেন, ‘‘বাংলায় ভোট দেওয়ার স্বাধীনতা নেই। বিশেষ করে সন্দেশখালিতে মা-বোনের অত্যাচারের পাশাপাশি পুরুষদের উপরেও আক্রমণ হচ্ছে। মারধর করা হয়। কিন্তু তাঁরাও আমার ভাই। তাঁদের সুরক্ষার জন্যও আমি লড়াই করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy