অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী। ছবি: সমাজমাধ্যম।
ভোট এলে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা সাধারণ মানুষের কাছে ভোট চাইবেন, এটাই দস্তুর। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের প্রচার পর্বের শুরুতেই উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সভাধিপতি তথা অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামীর ‘দলীয় কর্মীরা ভোট চাইতে লজ্জা পাচ্ছেন’ বলে মন্তব্যে অস্বস্তিতে তৃণমূল কংগ্রেস। এই সংক্রান্ত একটি ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) ‘ভাইরাল’ হয়েছে। সেখানে ওই মন্তব্য নারায়ণ তাঁর বলে মেনে নিলেও সেটির ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন। যদিও তাতে বিতর্ক এড়ানো যায়নি।
শনিবার অশোকনগরের রাজীবপুর-বিড়া এলাকায় হাবড়া ২ ব্লক তৃণমূলের কর্মিসভা ছিল। সেখানেই কর্মীদের উদ্দেশে নারায়ণকে বলতে শোনা যায়, ‘ট্রেনে বাদাম বিক্রেতা যদি বাদাম নিয়ে চুপ করে থাকেন, যদি ভাবেন সম্মান নষ্ট হবে, তা হলে তাঁর বাদাম বিক্রি হবে? তৃণমূল কর্মী মানে ফেরিওয়ালা। কিন্তু পাড়ার লোককে গিয়ে তৃণমূলকে ভোট দিন বলতে লজ্জা পাচ্ছি’!
রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গ্রেফতার হওয়া, সন্দেশখালি-কাণ্ড, অর্জুন সিংহের দলত্যাগ— সব মিলিয়ে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলে অস্বস্তি ছিলই। নারায়ণ শনিবার কর্মিসভায় ওই মন্তব্য করে অস্বস্তি আরও বাড়ালেন বলে মনে করছেন জেলা নেতাদের অনেকে।
নারায়ণ পরে অবশ্য দাবি করেন, তাঁর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘কিছু বুথে কর্মীদের নিষ্ক্রিয়তার জন্য হার হয়। তাঁদের উৎসাহিত করতে ওই কথা বলেছি। তার মানে কি তৃণমূল খারাপ?’’ কিন্তু কেন তৃণমূল কর্মীরা ভোট চাইতে লজ্জা পাবেন, সে প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি নারায়ণের কাছে।
ওই কর্মিসভায় নারায়ণের সঙ্গে ছিলেন বারাসত কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী কাকলি ঘোষ দস্তিদারও। তিনি বলেন, ‘‘এটা ওঁর ব্যক্তিগত মত।’’ জেলা তৃণমূল কোর কমিটির চেয়ারম্যান নির্মল ঘোষ বলেন, ‘‘কর্মিসভায় নারায়ণ কী বলেছেন, না জেনে মন্তব্য করব না।’’ তবে, জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘‘নারায়ণবাবু ও কথা না বললেই পারতেন।’’
নারায়ণের মতো জেলা তৃণমূলের এক গুরুত্বপূর্ণ নেতার ওই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস মিত্র বলেন, ‘‘নারায়ণবাবু যে কথাটা বলেছেন, তা রাজ্যের মানুষের মনের কথা। তিনি কর্মিসভায় প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন, তৃণমূল দলটা করলেও অনেকে পরিচয় দিতে লজ্জা পান। এর থেকে প্রমাণিত হয়, রাজ্যের মানুষ তৃণমূলকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তৃণমূলের নেতারা রাস্তায় বেরোলে সাধারণ মানুষ ‘চোর’ বলে দেগে দিচ্ছেন।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সত্যসেবী কর বলেন, ‘‘নারায়ণ যা বলেছেন, তা ওঁর এবং কিছু নেতা ছাড়া, সাধারণ তৃণমূল কর্মীদের মনের কথা। যাঁরা চুরি-জোচ্চুরি মেনে নিতে পারছেন না।’’
বিরোধীদের সমালোচনার জবাবে নারায়ণ বলেন, ‘‘বিরোধীরা তৃণমূলের কোনও কথার সঙ্গেই সহমত হন না। তাঁরা আমার কথার মধ্যে আরও কিছু খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। এতে লাভ হবে না। এই বাংলা মমতাময় ছিল, থাকবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy