শুক্রবার তৃণমূলের পোস্ট করা ওই ‘মিম’। ছবি: এক্স।
বিজেপি নেতাদের ‘বহিরাগত বলে তোপ দেগে আক্রমণের সুর আরও চড়া করল তৃণমূল কংগ্রেস। এ বার তাদের প্রচারের হাতিয়ার ‘মিম’। সমাজ মাধ্যমে তৃণমূলের পোস্ট করা ওই ব্যঙ্গচিত্রে দেখানো হয়েছে, মই বেয়ে উঠে রাজ্যে পা রাখার চেষ্টা করছেন চার বিজেপি নেতা। সেই মই লাথি মেরে ফেলে দিচ্ছেন এক জন। ব্যঙ্গচিত্র অনুযায়ী বিজেপি নেতাদের আদল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের (কারও কারও মতে প্রাক্তন বিচারপতি ও তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়) সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। আর লাথি মেরে যিনি মই ফেলছেন, তাঁর চেহারা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতোই। এই ‘মিম’-এর জেরে বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ রাজনীতি করার অভিযোগ করেছে। তৃণমূল অবশ্য বিজেপির কিছু অতীত ব্যঙ্গচিত্রের প্রসঙ্গ তুলে এই মিমটিতে আপত্তিজনক কিছু দেখেনি।
রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, রাজনৈতিক ব্যঙ্গচিত্র অতীতে বাংলার সংস্কৃতির একটি অঙ্গ ছিল। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তৈরি করা ‘মিম’গুলি অনেক সময়েই বাংলার সেই সংস্কৃতির ঐতিহ্যের পরিপন্থী কি না, তা নিয়ে চর্চার অবকাশ রয়েছে। সেই সঙ্গেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, ভোটের দিন যত কাছে আসছে, কেন্দ্র ও রাজ্যের দুই শাসক দলের তরজা তত কদর্য আকার নিচ্ছে। আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণ অনেক সময়েই সাধারণ সৌজন্যের স্বীকৃত রীতি-নীতি মানছে না।
তৃণমূল শুক্রবার ওই ‘মিম’ পোস্ট করে লিখেছে, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাহারা দিচ্ছেন, বাংলার দরজা সুরক্ষিত। যে বহিরাগত বিজেপি জমিদারেরা হামাগুড়ি দিয়ে ঢোকার চেষ্টা করছে, তারা হুমড়ি খেয়ে পড়বে।’ তৃণমূলের এই ‘মিম’ ও বহিরাগত বক্তব্যের সূত্রেই সুকান্তের পাল্টা অভিযোগ, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গে একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী রাজনৈতিক আখ্যান তৈরি করার চেষ্টা করছেন। শুধু প্রকৃতিগত ভাবেই অবমাননাকর নয়, এটি বাংলা এবং সামগ্রিক ভাবে জাতির ভবিষ্যতের পক্ষেও অত্যন্ত বিপজ্জনক।”
বিজেপির রাজ্যের সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালবীয় আবার ‘মিম’-এ যে লাথি মারা দেখানো হয়েছে, তা নিয়ে অভিযোগ করেছেন। তাঁর অভিযোগ, “প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিজেপির বাংলার নেতাদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে!” নির্বাচন কমিশনের কাছে এই ‘অশুভ চক্রান্ত’ খতিয়ে দেখারও আর্জি জানান মালবীয়। যদিও তৃণমূল ওই ‘মিম’-এ বিতর্কের কিছু দেখছে না। দলের নেতা কুণাল ঘোষের পাল্টা বক্তব্য, “যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ের প্লাস্টার নিয়ে ‘মিম’ বানিয়েছিলেন, তখন মনে ছিল না? এখন বুকে ব্যথা হচ্ছে? যা হয়েছে, খুব ভাল হয়েছে! খুব সুন্দর হয়েছে!”
‘মিম’-এ মমতার সঙ্গেই একটি মেয়ের ছবি রয়েছে। বিজেপি এই সূত্রেই টেনে এনেছে সন্দেশখালির নারী-‘নির্যাতনের’ প্রসঙ্গ। বিজেপির পাল্টা পোস্ট করা ‘মিম’-এ মুখ্যমন্ত্রীর মুখে ‘বার্তা’ হিসেবে লেখা হয়েছে, ‘শেখ শাহজাহান এই মেয়েটিকে ধর্ষণ করে মুক্ত হয়ে যাবেন। আপনারা বিজেপির লোকজন ওঁকে বাঁচাতে পারবেন না। আমি প্রত্যেক মহিলাকে ত্যাগ করতে এবং বাংলাকে ভোটের জন্য সন্দেশখালি করতে রাজি আছি!’ তৃণমূলের ‘মিম’ নিয়ে সরব হয়েছেন রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যও। তাঁর বক্তব্য, “যাঁরা এমন পোস্ট করছেন, তাঁরা শুধু দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা পুরো রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে অপমান করছেন, তা নয়। গোটা দেশের সামনে পশ্চিমবঙ্গের ভাবমূর্তিকে কলুষিত করছেন। এঁরা মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক উচ্চতার সঙ্গেও সুবিচার করছেন না। ছি!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy