তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মৌসম নুর। —ফাইল ছবি।
তিন বছর আগে এই জেলাতেই ছিল তৃণমূলের জয়জয়কার। ১২টির মধ্যে আটটি বিধানসভা আসনে জিতেছিল তারা। তার মধ্যে সুজাপুরে ১,৩০,১৭৩, মালতীপুরে ১,০৬,৩৩০, মোথাবাড়িতে ৮০,৬৮৮ ভোটের ব্যবধানে। তৃণমূলে আলোচনা হচ্ছিল, গনি খানের জেলায় তাঁর পরিবারের বদলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেগ কি তবে কাজ শুরু করল? এ বারের লোকসভা ভোটে কিন্তু ছবি পুরো ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়েছে।
বিধানসভাভিত্তিক পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে ১২টি আসনের ছ’টিতে এগিয়ে বিজেপি, ছ’টিতে কংগ্রেস। তৃণমূলে বরাতে একটি আসনেও ‘লিড’ জোটেনি। তার পরেই বৃহস্পতিবার রাতে দলের জেলা কার্যালয়ে বসে জেলা নেতৃত্বের প্রতি নিজের ক্ষোভ উগরে গিয়েছেন গনি পরিবারের অন্যতম সদস্য তথা তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মৌসম নুর। একই সুর শোনা গেল জেলা তৃণমূলের আর এক প্রাক্তন সভাপতি দুলাল সরকারের গলাতেও। দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে দায়ী করে মৌসমের দাবি, “এই ফলের দায় তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বকে নিতে হবে।”
এ বারের লোকসভা ভোটের ফলে দেখা যাচ্ছে, বিধানসভাভিত্তিক পরিসংখ্যানের নিরিখে সুজাপুর, মোথাবাড়ি, মালতীপুর, রতুয়া, হরিশ্চন্দ্রপুর ও চাঁচলে কংগ্রেস এবং ইংরেজবাজার, হবিবপুর, মালদহ, গাজল, মানিকচক এবং বৈষ্ণবনগরে এগিয়ে বিজেপি।
বিধানসভা ভোটের সময় তৃণমূলের জেলা সভাপতি ছিলেন মৌসম। তিনি কংগ্রেসের দু’বারের সাংসদ ছিলেন। তৃণমূলে যোগ দিয়ে উত্তর মালদহ আসনে বিজেপির কাছে তিনি হেরে যান। এ বার নিজেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে ধরে নিয়ে কার্যত তিনি প্রচারও শুরু করেছিলেন। যদিও দল উত্তরে প্রাক্তন পুলিশকর্তা প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দক্ষিণে লন্ডনে গবেষণারত ছাত্র শাহনওয়াজ আলি রায়হানকে প্রার্থী করে।
মৌসম বলেন, “প্রার্থী নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। মানুষ বহিরাগত প্রার্থীদের মেনে নিতে পারেনি। ফলে এই পরাজয়। যদিও দু’টি আসনই জেতা উচিত ছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় চেষ্টাও করেছেন। এটা কী ভাবে হয়?” দুলালের দাবি, “জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। পুরনোদের কাজে লাগানো হয়নি। জেলার দু’টি আসনেই দল জেতার জায়গায় ছিল।”
যদিও এই পরিস্থিতিতে আগামী দিনে দল ঘুরে দাঁড়াবে বলে দাবি করেন তৃণমূলের রাজ্য নেতা তথা ইংরেজবাজারের পুরপ্রধান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। তিনি বলেন, “ধর্মীয় মেরুকরণের ভোট হয়েছে। উন্নয়নের কথা তাই পিছনে চলে গিয়েছে। মানুষ তা বুঝতে পারবেন।”
তৃণমূলের জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী বলেন, “লোকসভা ভোটে আমরা ভাল ফল করতে পারিনি। কেন এমন ফল হয়েছে, তা নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক হবে। তার পরেই ভরাডুবির কারণ স্পষ্ট হবে। আর কারও মন্তব্যের ব্যাপারে আমার কোনও মন্তব্য নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy