মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
শুক্রবার হাবড়ার পুরপ্রধানকে সঙ্গে নিয়ে মমতার সভাস্থল ঘুরে দেখলেন পুলিশ সুপার, জেলাশাসক।
জেলায় দলের দুই ‘তাবড়’ নেতা শ্রীঘরে। আর এক বর্ষীয়ান নেতা সদ্য দল ছেড়েছেন। তার উপরে সন্দেশখালি কাণ্ড নিয়ে এখনও রাজ্য রাজনীতি সরগরম। এই অবস্থায় আগামী মঙ্গলবার সন্দেশখালির জেলা উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ায় জনসভা করতে আসছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা ভোটের মুখে জেলায় দলীয় সংগঠনে পর পর ‘ধাক্কা’ সামলাতে নেত্রী কী বার্তা দেন, সে দিকেই তাকিয়ে বহু তৃণমূল নেতা-কর্মী।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হাবড়ার বাণীপুরে মুখ্যমন্ত্রীর সভা হওয়ার কথা। শুক্রবার সভাস্থল ঘুরে দেখেন জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী, বারাসতের পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খরিয়া, হাবড়ার পুরপ্রধান নারায়ণ সাহা-সহ প্রশাসনের কর্তারা। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সভার দিন সদ্য চূড়ান্ত হয়েছে। ১২ মার্চ সকাল ১১টায় তিনি জনসভা করতে আসছেন। আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’
রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় ইডি-র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা হাবড়ার তৃণমূল বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য। সন্দেশখালি-কাণ্ডে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান এখন সিবিআই হেফাজতে।
সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন বরাহনগরের বিধায়ক তাপস রায়। এই পরিস্থিতিতে জেলার বহু তৃণমূল কর্মীর মনোবল অনেকটা ভেঙে পড়েছে বলে মানছেন নেতাদের অনেকেই।
সামগ্রিক ভাবে জেলা তো বটেই, বনগাঁ, বারাসত ও বসিরহাট মহকুমায় দলের সাংগঠনিক দায়িত্ব জ্যোতিপ্রিয়ের উপরেই মূলত ছেড়ে রেখেছিলেন মমতা। সন্দেশখালির শাহজাহানও এক সময়ে জ্যোতিপ্রিয়ের হাত ধরেই দলে এসেছিলেন বলে শোনা যায়। বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সন্দেশখালি বিধানসভা সামলাতেন শাহজাহান। লোকসভা ভোটর প্রস্তুতি শুরু হলেও এখন আ তাঁদের পাচ্ছে না তৃণমূল। অন্য দিকে, ব্যারাকপুরে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে। জ্যোতিপ্রিয় গ্রেফতারের পরে দলের কাজকর্ম দেখভালের জন্য কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন মমতা স্বয়ং। তারপরেও যে দল খুব মসৃণ ভাবে চলছে, তেমনটা নয়। ঠারেঠোরে তা মেনেও নিচ্ছেন জেলার অনেক নেতা।
এই পরিস্থিতিতে দলনেত্রীর সভা যথেষ্ট বার্তাবহ হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। তার উপরে গত ৬ মার্চ জেলা সদর বারাসতে সভা করে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই কারণে মুখ্যমন্ত্রী হাবড়ায় তার পাল্টা সভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এমন কথাও শোনা যাচ্ছে। হাবড়া ছিল জ্যোতিপ্রিয়ের খাসতালুক।
মুখ্যমন্ত্রী সেখানেই জনসভা করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পুরপ্রধান নারায়ণ বলেন, ‘‘বালুদা’র (জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক) অনুপস্থিতিতে সভা সফল করতে আমরা জান লড়িয়ে দেব।’’ তবে, সভা করেও মুখ্যমন্ত্রীর লাভ হবে না বলেই দাবি করেছেন বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস মিত্র।
তিনি বলেন, ‘‘জ্যোতিপ্রিয় ও শাহজাহান গ্রেফতার হওয়ার পরে তৃণমূল এখন ব্যাকফুটে। তৃণমূল এবং দুর্নীতি সমার্থক। সন্দেশখালি-কাণ্ডের পরে মুখ্যমন্ত্রী ১০০ বার সভা করলেও কোনও লাভ হবে না।’’
তৃণমূলের জেলা কোর কমিটির চেয়ারম্যান তথা পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষের পাল্টা দাবি, ‘‘উত্তর ২৪ পরগনায় দল এখন আরও শক্তিশালী। সেটা ১২ মার্চ মুখ্যমন্ত্রীর সভা হলে সকলে বুঝতে পারবেন। এটা ভুলে গেলে চলবে না, শাহজাহানকে কিন্তু রাজ্যের পুলিশই গ্রেফতার করেছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy