ভাতারের সভায় প্রার্থী শর্মিলা সরকারের সঙ্গে মমতা। ছবি: সুদিন মণ্ডল।
মঞ্চে তাঁকে দেখতে না পেয়ে বক্তব্য বন্ধ রেখে জেলা নেতৃত্ব ও স্থানীয় নেতাদের কাছে ভাতারের প্রাক্তন বিধায়ক, বনমালী হাজরার খোঁজ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আসেননি জানার পরে বললেন, “দীর্ঘদিন ধরে বনমালীদা এই এলাকায় ছিলেন। এখনও আছেন। শরীরটা হয়তো একটু খারাপ। অসুস্থ থাকায় আসতে পারেননি। কাল দেখা হবে।”
মঙ্গলবার দুপুরে ভাতারের এরুয়ারে (বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারির ‘খাসতালুক’) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সভা করেন। তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, ওই মঞ্চে ডাক পাননি বনমালী। ২০০১ সাল থেকে টানা তিনবার ভাতারে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন তিনি। ২০১১ সালে বিধায়ক হন। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকে বনমালী ও মানগোবিন্দর মধ্যে ‘দূরত্ব’ তৈরি হয়। ভাতার থেকে বিধায়ক হন আউশগ্রামের বাসিন্দা সুভাষ মণ্ডল। তারপরে কিছুদিন ‘দাদা-ভাই’কে একসঙ্গে দেখা গেলেও ২০১৯ সালের পর থেকে কার্যত মুখ দেখাদেখি ‘বন্ধ’। গত পঞ্চায়েত ভোটে মনোমালিন্য চরম আকার নেয়। বিধায়ক-গোষ্ঠীর অভিযোগ ছিল, পঞ্চায়েত ভোটে বনমালীর অনুগামীরা বিজেপি-সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল। অনেকে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে ভোটে লড়েছিল। তারপর থেকেই ‘বসে রয়েছেন’ বনমালী। তাঁর অনুগামীদের দাবি, বয়স্ক মানুষটাকে আর কেউ সম্মান দিয়ে রাজনৈতিক-কর্মসূচিতে ডাকেন না।
তবে তাঁর খোঁজ যে মুখ্যমন্ত্রী করতে পারেন, আন্দাজ করেছিলেন বনমালী। সোমবার রাতে তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী আমার খোঁজ করবেন। আমি অত্যন্ত ভাগ্যবান। আমি তাঁকে মাতৃজ্ঞানেই সম্মান করি।’’ মঙ্গলবার তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। বাড়িতে গেলেও পরিজনেরা দেখা করতে দেননি। তাঁর ছেলে মহেন্দ্র বলেন, “গত তিন বছরে বাবা একদিনের জন্যও অসুস্থ হননি। কলকাতায় ধর্ণামঞ্চের সভাতেও যান। সে ছবি আছে।”
তৃণমূলের দাবি, এ দিনের সভা কানায় কানায় ভরেছিল। অনেকেই এরুয়ারের রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন। সভা শুরুর কথা ছিল দুপুর ১টায়। কিন্তু শুরু হয় সাড়ে ৩টেয়। মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, “১১টা ২০ থেকে রোদের মধ্যে মমতাদিকে দেখার জন্য মাঠভর্তি লোক বসেছিল। তাঁদের ধৈর্যকে আমার প্রণাম।” যদিও বিজেপির ভাতারের আহ্বায়ক সুচিস্মিতা হাটির দাবি, সভায় লোক হয়নি। বাড়ির মহিলাদের সভায় যেতে বাধ্য করা হয়েছে। আর সিপিএমের সুভাষ মণ্ডলও বলেন, “রোদে গরিব মহিলাদের বসিয়ে রাখা হয়েছিল। কয়েক জন অসুস্থ হন।’’
সভায় বর্ধমান-দুর্গাপুরের প্রার্থী কীর্তি আজাদ ও বর্ধমান পূর্বের শর্মিলা সরকার ছিলেন। তাঁদের বাঙালি সাজের প্রশংসা করেন মমতা। পুলিশ জানিয়েছে, হাজার খানেকের উপরে পুলিশ কর্মী ছিলেন। সভাস্থলে প্রায় ১৬টি সিসি ক্যামেরা ছিল। দুর্গাপুরে বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, “উনি যেখানে এসেছেন, সেখানাকার একজন বিধায়ক, গুন্ডা। নিজের পাড়ায় কাউকে ঢুকতে দেয় না। সেই গুন্ডাকে সংরক্ষণ দিতে উনি এসেছেন। আমি ওই গ্রামে (এরুয়ার) গিয়েছিলাম। আবার যাব। এই গুন্ডার রাজনীতি আমরা বর্ধমানে বরদাস্ত করব না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy