মালবাজার জনসভা মঞ্চে জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী নির্মল চন্দ্র রায়ের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি - সন্দীপ পাল।
উত্তরবঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মিনিট তিরিশের বক্তব্যে চায়ের জন্য বরাদ্দ একটি মাত্র বাক্য, “বিজেপি চা বাগানের শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য কাজ করতে পারে।” কোচবিহারে প্রধানমন্ত্রীর সভার ঘণ্টাখানেক আগে, ১১৭ কিলোমিটার দূরে জলপাইগুড়ির মালবাজারের নির্বাচনী জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন সাজিয়ে রেখেছিলেন, “২০১৪ সালে বলেছিলেন, পাঁচটি বন্ধ চা বাগান খুলে দেব। ঝুট বলে কাউয়া কাটে।” চা পাতায় রাসায়নিক কীটনাশক নিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থা চা পর্ষদের নতুন নির্দেশিকা নিয়ে বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলেছেন মমতা। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপের পরদিনই সমাধান সূত্র মিলেছে। জলপাইগুড়িতে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসে চা পর্ষদ। আজ শুক্রবার থেকে ফের ছোট বাগানের পাতা নেবে কারখানাগুলি।
মোদীর বক্তব্যে চা বেশি না থাকায় হতাশ হয়েছেন বিজেপি নেতাদের একাংশ। যদিও গেরুয়া শিবিরের আর একটি অংশ মনে করাচ্ছে, কিছু দিন আগে শিলিগুড়ির সভায় মোদী চা নিয়ে অনেক আশ্বাস দিয়েছিলেন। চা বাগানের শ্রমিকদের সরাসরি সম্বোধনও করেছিলেন। তাঁদের দাবি, কোচবিহার যেহেতু তথাকথিত চা বলয়ের বাইরে, সে কারণেই হয়তো প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে বিশদে কিছু ছিল না। তাঁদের বক্তব্য, ৭ এপ্রিল জলপাইগুড়িতে ফের সভা রয়েছে মোদীর। সেখানে বক্তব্যে চা থাকতে পারে। যদিও শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র তথা জলপাইগুড়িতে তৃণমূলের সংগঠন দেখার দায়িত্বপ্রাপ্ত গৌতম দেবের দাবি, “প্রধানমন্ত্রী চা নিয়ে যদিও বা কিছু বলেন, সেটি মিথ্যাই বলেন। মুখ্যমন্ত্রী মালবাজারের সভা থেকে সেই সত্য স্পষ্ট করে দিয়েছেন।”
গত কয়েক দিন ধরেই ছোট চা বাগানের সমস্যা নিয়ে হস্তক্ষেপ করেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রের নতুন রাসায়নিক কীটনাশক বিধির জেরে উত্তরবঙ্গের চা উৎপাদনে সংশয় তৈরি হয়েছিল। ছোট চা পাতা বিক্রেতাদের থেকে নমুনা পরীক্ষার শংসাপত্র ছাড়া পাতা নেওয়া হবে না বলে কারখানাগুলি জানিয়ে দিয়েছিল। তাঁদের দাবি ছিল, নতুন বিধি অনুযায়ী, তৈরি চা পাতায় কীটনাশক পাওয়া গেলে লাইসেন্স বাতিল হতে পারে। মালবাজারের সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “২০১৫ সালে কেন্দ্র সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করে চা বাগানে কোন কোন কীটনাশক দিতে হবে। তার পরে এত দিন কিছু হল না। হঠাৎ করে টি বোর্ড কড়াকড়ি করে বন্ধ করে দিল। অসমে কেন এগুলো হয় না? প্রশাসন টি বোর্ডের সঙ্গে বৈঠক করেছে। আগামীকাল থেকে কারখানাগুলি চা পাতা নেবে।” মাথাভাঙার সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “ভোটের সময় ১০ লক্ষ লোকের রুটি রোজগার বন্ধ করে দেবে, এটা আমরা মানব না। আমি মানুষের অধিকার কেড়ে নিই না।“
এ দিন মালবাজারের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “চা শ্রমিকেরা জমির পাট্টা পেয়েছেন. বাড়ির জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পাচ্ছেন। যাঁরা পাননি, তাঁরাও পাবেন।” ভোটের আগে একই দিনে মোদী-মমতা সভার শেষে, চা-অস্ত্রে মুখ্যমন্ত্রী এক ধাপ এগিয়েই থাকলেন বলে দাবি তাঁর দলের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy