(বাঁ দিকে) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
সুকান্ত মজুমদার এবং শুভেন্দু অধিকারীকে একসঙ্গে বাংলার ‘কুলাঙ্গার’ এবং ‘গদ্দার’ বলে আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত এবং রাজ্যের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু বাংলার ভাল চান না। তাই দিল্লিতে গিয়ে বাংলার ১০০ দিনের টাকা এবং বাড়ির টাকা বন্ধ করে এসেছেন। অথচ উত্তরবঙ্গের ঝড়ে দুর্গত মানুষদের পাশে দেখা যায়নি তাঁদের। তাই মমতার কথায়, ‘‘ওরা বাংলার গদ্দার, বাংলার কুলাঙ্গার!’’ যদিও মমতার ওই বক্তব্য শুনে পাল্টা রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত বলেছেন, ‘‘ইয়ে ডর হামে অচ্ছা লগা!’’
শনিবার লোকসভা ভোটের প্রচারে বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের তপনে সভা করতে গিয়েছিলেন মমতা। সেখানেই ভূপতিনগরের ঘটনা এবং তার জেরে তৃণমূলের দুই নেতার গ্রেফতারি নিয়ে কেন্দ্রের সরকারকে আক্রমণ করছিলেন মমতা। সে প্রসঙ্গেই হঠাৎ বালুরঘাটের বিদায়ী সাংসদ সুকান্তকে আক্রমণ করেন তৃণমূল নেত্রী। তবে প্রথমে তাঁর নাম করেননি তিনি। মমতা বলেন, ‘‘আপনাদের এখানে ওই কুসান্তবাবু আছেন, আর ও দিকে আছে গদ্দার। এরা মনে করে, যা বলবে তা-ই করতে হবে। গায়ের জোরে চালাবে।’’
নাম না নিলেও মমতা কাদের লক্ষ্য করে ওই কথা বলছেন, তা বুঝতে বাকি ছিল না কারও। সুকান্তের নামের শব্দের ওলটপালট সহজেই বোঝা গিয়েছিল। আর শুভেন্দু দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই মমতা প্রকাশ্যে তাঁর নাম নেন না। বদলে তাঁকে অভিহিত করেন ‘গদ্দার’ বলে।
তবে শুভেন্দুর নাম না করলেও পরের বাক্যেই সুকান্তের নাম ধরে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘চ্যালেঞ্জ করছি সুকান্তবাবুকে। ভোট দেওয়ার আগে বলেননি আপনি আর গদ্দার? বাংলাকে ১০০ দিনের টাকা দেওয়া যাবে না? বাংলার বাড়ি দেওয়া যাবে না? রাস্তা দেওয়া যাবে না? কোনও দিন সারি-সারনা ধর্ম নিয়ে কথা বলেছেন দিল্লিতে গিয়ে?’’ এর পরেই চিৎকার করে মমতা বলেন, ‘‘আপনারা বাংলার টাকা বন্ধ করেছেন, আপনারা বাংলার গদ্দার। আপনারা বাংলার কুলাঙ্গার। আপনারা বাংলার ভাল চান না। আপনারা উত্তরবঙ্গের ভাল চান না। আপনারা দক্ষিণবঙ্গেরও ভাল চান না।’’
যদিও মমতার ওই আক্রমণের পাল্টা জবাব দেননি সুকান্ত। বরং আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে তাঁর কাছে মমতার কথার পাল্টা জবাব চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘‘ইয়ে ডর হামে আচ্ছা লগা। বালুরঘাট কেন, উত্তরবঙ্গেও গত বারে যেমন শূন্য হাতে তৃণমূল ফিরেছিল, এ বারও শূন্য হাতে ফিরবে। কংগ্রেসও তাই। উনি ১০০ দিনের টাকার কথা বলছেন, আমি এখনও বলছি, উনি হিসাব দিন, সব টাকা কেন্দ্র দেবে। হিসাব না দিলে একটি টাকাও পাবে না। কারণ, নরেন্দ্র মোদীর শপথ, উনি চুরি করবেন না। কাউকে করতেও দেবেন না। উনি আমাকে কুসান্ত বলুন বা যতই খারাপ কথা বলুন। আমি কোনও খারাপ কথা বলব না। তার জবাবও দেব না। আমার পারিবারিক শিক্ষা তেমন নয়।’’
সুকান্তকে শনিবার উত্তরবঙ্গের প্রচারসভা থেকে জলপাইগুড়ির ঝড় নিয়েও আক্রমণ করেছেন মমতা। এর আগে উত্তরবঙ্গের সভায় এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঝড় নিয়ে কোনও কথা বলেননি। সে কথাই মনে করিয়ে দিয়ে মমতা বলেন, এত বড় ঝড় হয়ে গেল, অথচ বিজেপির নেতারা সেখানে দেখতেও গেলেন না! মমতার ওই আক্রমণের জবাবে সুকান্ত বলেছেন, ‘‘উনি প্রশ্ন করেছেন, জলপাইগুড়িতে আমি কেন যাইনি? জলপাইগুড়ির ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে সেখানকার প্রার্থী, জেলা সভাপতি-সহ পুরো টিমকে ওখান নামিয়ে দিয়েছিলাম, যাতে ওরা কাজ করতে পারে। আমি রাজনীতি করতে চাইনি। তাই ওখানে গিয়ে ভিড়ের অংশ হইনি। মুখ্যমন্ত্রী রাজনীতি করতে চেয়েছেন, তাই কাজের কাজ না করে ভিড় বাড়িয়েছেন।’’
তবে মুখ্যমন্ত্রীর চ্যালেঞ্জের জবাব না দিলেও মুখ্যমন্ত্রীকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন সুকান্ত। পদ্মের রাজ্য সভাপতির প্রশ্ন, ‘‘উনি বরং বলুন, এত বাড়ি ভেঙে পড়ল কেন? কেন এই মানুষজনকে উনি বাড়ি বানানোর টাকা পেতে দেননি। আমার চ্যালেঞ্জ রইল ওঁর কাছে, উনি হিসাব দিন এবং বলুন কেন এত বাড়ি ভেঙে পড়ল?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy