Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

বামেদের ভোট বাড়লেই বাজিমাত, আশা তৃণমূলে

বামেদের কাছে বেশ কয়েক বার হারের পরে বনমালী ভাতারের বিধায়ক হন। ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকেই ‘ভাই’ মানগোবিন্দর সঙ্গে মনোমালিন্য দেখা দেয়।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

সৌমেন দত্ত
ভাতার শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২৪ ০৯:০৬
Share: Save:

১৯৮২ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ভাতারে টানা জিতেছে সিপিএম। তার মধ্যে ১৯৯৮ সালে সদ্য ফোটা ঘাসফুল হারিয়ে দেয় বামেদের।

পরিবর্তনের হাওয়ায় ২০১১ সালেই ভাতার বিধানসভায় জেতেন তৃণমূলের বনমালী হাজরা। তারপর থেকে ভোটের সঙ্গে জয়ের ব্যবধানও বেড়েছে। গত বিধানসভা ভোটে ‘ভূমিপুত্র’ মানগোবিন্দ অধিকারী প্রার্থী হয়ে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে বিধানসভায় যান। তার পরেও তৃণমূল নিশ্চিন্তে নেই। পদ্ম তৃণমূলকে যতটা না চিন্তায় ফেলছে তার চেয়ে বেশি বিঁধছে দলের অন্দরের ‘চোরা-কাঁটা’। এ বার তৃণমূলের জয়ের গতি শ্লথ হবে কি, সেটাই প্রশ্ন। খাসতালুকে পুরনো সংগঠনের জেরে বামেরা কিছুটা ভোট নিজেদের ঝুলিতে ফেরাতে পারলে লাভ যে তাঁদের, বলছেন তৃণমূলের নেতাদের একাংশ।

বামেদের কাছে বেশ কয়েক বার হারের পরে বনমালী ভাতারের বিধায়ক হন। ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকেই ‘ভাই’ মানগোবিন্দর সঙ্গে মনোমালিন্য দেখা দেয়। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে প্রকাশ্যে মানগোবিন্দ বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। বিধায়কের বিরুদ্ধে সভাও করেন। দল বাধ্য হয়ে তৃতীয় চরিত্র আনে। আউশগ্রামের সুভাষ মণ্ডল ভাতারে প্রার্থী হন। তিনি জেতার কয়েক মাসের মধ্যেই ফের মানগোবিন্দর সঙ্গে ‘বিরোধ’ তৈরি হয়। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে বনমালীর সঙ্গেও বিধায়কের ‘দূরত্ব’ দেখা দেয়। দুই নেতা মিলে যাওয়ায় বিধানসভায় ভূমিপুত্রকে প্রার্থী করার দাবি জোরালো হয়। তবে মানগোবিন্দ বিধায়ক হওয়ার পরে ফের পঞ্চায়েতের প্রার্থী দেওয়া নিয়ে মন কষাকষি হয়। মুখ দেখাদেখিও কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। লোকসভা ভোটের মুখ্যমন্ত্রীর প্রচারেও ডাক পাননি দলের প্রবীণ নেতা বনমালী। সভাতেই তাঁর খোঁজ করেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, ‘বনমালীদা অসুস্থ’। পরের দিন বুদবুদের সভায় তিনি দেখা করেন।

রাজনৈতিক মহলের দাবি, গত পঞ্চায়েত ভোটের পরে বনমালী-গোষ্ঠী একটু নিষ্ক্রিয়। বিধায়কও তাঁদের ডেকে কাজ করাচ্ছেন না। বনমালীর অনুগামীদের দাবি, “আমাদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে ভোটে ভাল ফল করবে, আর ওরা (বিধায়ক-গোষ্ঠী) নাম কিনবে, সেটা করতে দেব না।” বিধায়ক-অনুগামীদের দাবি, “বনমালীদা রাজনৈতিক অবসর নিয়ে ফেলেছেন। পঞ্চায়েতে তাঁর লোকেরা সিপিএম-কংগ্রেসের হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তাঁদের কে মেনে নেবে?” তৃণমূলের এই কোন্দলে পদ্ম ফোটাতে চাইছে বিজেপি। বিজেপির দাবি, প্রধানমন্ত্রীর সভায় ভাতার থেকে ভাল লোক এসেছিল। ভাতারের বিজেপির নেত্রী সুচিস্মিতা হাটি বলেন, “উপর থেকে বিজেপি বাড়ছে কি না বোঝা যাবে না। গোকুলে বাড়ছে। ভোট-বাক্সে তার ফল মিলবে।”

২০১৬ সালে ভাতারে বিজেপি ভোট পেয়েছিল ৬.৬%, সিপিএম পেয়েছিল ৪৪%। তিন বছর পরে বিজেপির ভোট পৌঁছে যায় ৩৬%তে। সেই বছর লোকসভা ভোটে সিপিএমের ভোট কমে দাঁড়ায় ১১%। তার পরের ভোটগুলোতেও বামেদের ভোট কমে। অনেকে মনে করছেন, বিধানসভায় সিপিএমের ভোট কমায় তৃণমূল লাভবান হয়। যদিও তৃণমূল মনে করছে, শেষ পঞ্চায়েত নির্বাচনের হিসেবে ভাতারে সাংগঠনিক ভাবে বিজেপির তুলনায় সিপিএম ‘এগিয়ে’ রয়েছে। ১৪টি পঞ্চায়েতের ২৪২টি আসনে সিপিএম ২৯টিতে জিতেছে। সেখানে বিজেপি কোথায়?

তৃণমূলের ভাতারের ব্লক সভাপতি বাসুদেব যশ বলেন, “গত বিধানসভায় দলমত নির্বিশেষে বাংলার জন্য, লক্ষ্মী ভান্ডারের জন্য তৃণমূলকে মানুষ ঢেলে ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু গত লোকসভার পরিসংখ্যানই বলছে বামের ভোট রামে গিয়েছে। বিজেপির থেকে সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী বামেরা তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ করলেই আমাদের জয়ের ব্যবধান বিধানসভাকে ছাড়িয়ে যাবে।” সিপিএম নেতা নজরুল হকের দাবি, “তৃণমূল ও বিজেপির উপরে মানুষ বীতশ্রদ্ধ। আমাদের ভোট বাড়বেই।”

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Bhatar CPIM TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy