Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

পরিবর্তনের কেতুগ্রামে নজরে তৃণমূলের দাদা-ভাই

ভোট এলেই কেতুগ্রামে যাঁকে নিয়ে সব থেকে বেশি চর্চা হত, সেই অনুব্রত মণ্ডল (তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি) এখন গরু পাচার মামলায় বন্দি তিহাড় জেলে।

কাজল শেখ।

কাজল শেখ। —ফাইল চিত্র।

প্রণব দেবনাথ
কেতুগ্রাম শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২৪ ০৯:১২
Share: Save:

সময়ের সঙ্গে অনেক কিছুই বদলেছে কেতুগ্রামে। এক সময় রাজনৈতিক সংঘর্ষ আর খুনোখুনি যেখানে গা-সওয়া হয়ে গিয়েছিল, সেই কেতুগ্রামে এখন বোমা-গুলির শব্দ তেমন একটা শোনা যায় না। লোকসভা ভোটের প্রচার-পর্বে অশান্তির বড় কোনও অভিযোগ এখনও পর্যন্ত ওঠেনি। সেই বদলে যাওয়া কেতুগ্রাম এ বার লোকসভা ভোটে কোন শিবিরের দিকে ঝুঁকবে, তা নিয়ে চর্চা চলছে অনবরত।

ভোট এলেই কেতুগ্রামে যাঁকে নিয়ে সব থেকে বেশি চর্চা হত, সেই অনুব্রত মণ্ডল (তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি) এখন গরু পাচার মামলায় বন্দি তিহাড় জেলে। তিনিই ছিলেন কেতুগ্রামের ‘শেষ কথা’। সংগঠন সাজিয়েছিলেন নিজের মনের মতো করে। তাঁর অনুপস্থিতিতে বীরভূমের জেলা সভাধিপতি কাজল শেখকে কেতুগ্রাম বিধানসভার দায়িত্ব দিয়েছে তৃণমূল। ঘটনাচক্রে, সেই কাজলের দাদা শেখ শাহনওয়াজ আবার কেতুগ্রামের বিধায়ক। কেতুগ্রামে তৃণমূল এ বার কেমন ফল করবে, তা মূলত নির্ভর করছে দাদা-ভাই জুটির উপরে, মানছেন দলের অনেকেই। বীরভূমের বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত কেতুগ্রাম। বোলপুরের তৃণমূল প্রার্থী অসিত মাল কেতুগ্রাম থেকে ষাট হাজার ভোটে প্রধান প্রতিপক্ষের থেকে এগিয়ে থাকবেন বলে আগেই জানিয়ে রেখেছেন কাজল। তাঁর এই মন্তব্যে ভোটের দিন ‘সন্ত্রাসের’ ইঙ্গিত রয়েছে বলে মনে করছে বিরোধীরা।

গত কয়েকটি নির্বাচনে মেরুকরণের তীব্র প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছিল ভোটে। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত কেতুগ্রাম ১ ব্লকে তৃণমূলের একছত্র আধিপত্য থাকলেও গত লোকসভা ভোটে বিজেপির থেকে তারা পিছিয়ে পড়েছিল কেতুগ্রাম ২ ব্লকে। তৃণমূলের ‘গোদে বিষফোড়া’ হয়েছিল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। তবে এ বার তৃণমূলকে অনেক ঐক্যবদ্ধ দেখাচ্ছে। কিছু জায়গায় চোরাস্রোত থাকলেও তার বহিঃপ্রকাশ নেই।

কেতুগ্রামে ভোটের চর্চায় উঠে এসেছে নারায়ণপুর, সুজাপুরের মতো গ্রামে ভাগীরথীর ভাঙনের প্রসঙ্গ। অনেকেরই অভিযোগ, ভাঙন-সমস্যার স্থায়ী সমাধানে কেন্দ্র বা রাজ্য—কোনও সরকারই তেমন তৎপর নয়। বিধানসভা এলাকার বেশির ভাগ বাসিন্দাই কৃষিকাজের উপরে নির্ভরশীল। সারের দামবৃদ্ধি,
ফসলের ন্যায্য দাম না-পাওয়ার মতো বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে চাষিদের মহল্লায়। চাষিদের সমর্থন পাওয়ার বিষয়ে প্রত্যয়ী যুযুধান তিন শিবিরই।

২০০৯ লোকসভা ভোটে সিপিএম ৫২.৮৮ শতাংশ ভোট পেয়েছিল এই কেন্দ্র থেকে। তার পরে ভাগীরথী দিয়ে যত জল গড়িয়েছে, ততই পিছিয়ে পড়েছে সিপিএম। গত লোকসভা নির্বাচনে সিপিএমের ঝুলিতে পড়ে মাত্র ৬.৯ শতাংশ ভোট। গত ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রায় সব আসনেই তৃণমূল জেতে। তবে এ বার ভোটের প্রচারে কেতুগ্রামে সিপিএম ও বিজেপিকে বেশ সক্রিয় দেখিয়েছে।

কেতুগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি জাহির শেখ খুনের পরে কেতুগ্রামে হানাহানি তেমন হয়নি বললেই চলে। ভোট এলেই যাদের মুখে অনবরত সন্ত্রাসের অভিযোগ শোনা যেত, সেই সিপিএম কিংবা বিজেপি এ বার বিনা বাধায় ভোটের প্রচার করেছে সেখানে। তবে দিন কয়েক আগে বাঁকড়া গ্রামে বিজেপির ৪ নম্বর মণ্ডল সভাপতি বিকাশ মাঝির বাড়িতে তৃণমূল হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছিল।

বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী পিয়া সাহা বলেন, “কেতুগ্রামের মানুষ আমাদের ভরসা করতে শুরু করেছেন। ২০১৪ এবং ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে এক ধাক্কায় আমাদের ভোট ২৩.১৯ শতাংশ বেড়েছে। শক্তিশালী দেশ নির্মাণে মানুষ আমাদের সমর্থন করবেন।” সিপিএম প্রার্থী শ্যামলী প্রধানের দাবি, “মেহনতি মানুষের কথা একমাত্র আমরাই সংসদে তুলে ধরতে পারি। তাই কেতুগ্রামের মানুষ আমাদের পাশেই থাকবেন বলে বিশ্বাস করি।” তৃণমূল প্রার্থীর দাবি, “প্রকৃত উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে কেতুগ্রামের মানুষ এ বারও আমাদেরই ভোট দেবেন।”

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 ketugram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy