গড় শালবনী এলাকায় তৃণমূলের মিছিল। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলার অভিযোগ উঠেছিল ঝাড়গ্রামের গড় শালবনীতে। ঘটনাটি ঘটেছিল গত বছর ২৬ মে। তারপর অবশ্য গড় শালবনী এলাকায় তৃণমূল প্রচার তো দূরের কথা পতাকা লাগাতে পারেনি। রবিবার ঘটনার প্রায় এক বছরের মাথায় তূণমূল প্রার্থীকে নিয়ে মিছিল করল তৃণমূল। এ দিন এই কর্মসূচির দায়িত্বে ছিলেন তৃণমূলের কুড়মি সম্প্রদায়ের নেতারা। তবে মিছিল করতে বেগ পেতে হয় তৃণমূলকে। যারজেরে উষ্মা প্রকাশ করেন তৃণমূল প্রার্থী কালীপদ সরেন। এমনকি মিছিলে তিনি সামান্য হেঁটে পরবর্তী প্রচার পর্বে চলে যান।
গত বছর ২৬ মে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলা ও মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদার গাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছিল গড় শালবনীতে। ওই ঘটনায় কুড়মি নেতা রাজেশ মাহাতো, শিবাজী মাহাতো, অনুপ মাহাতো-সহ মোট ১৫ জন গ্রেফতার হন। যদিও পরে তাঁরা জামিন পান। তারপর গড় শালবনী এলাকায় তৃণমূল কোনও কর্মসূচি করতে পারেনি। এমনকি পঞ্চায়েত ভোটে দেওয়ালও লিখতে পারেনি। গত পঞ্চায়েতে শালবনী গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল চারটি, কুড়মি সমাজ চারটি ও বিজেপি দু’টি আসনে জয়ী হয়েছিল। কুড়মিদের সমর্থনে বিজেপি বোর্ড গঠন করে। তারপর ফের এক বছরের মাথায় দলীয় প্রার্থীর কর্মসূচি ঠিক করে তৃণমূল। রবিবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ প্রার্থী পৌঁছন গড় শালবনী এলাকায়। সঙ্গে ছিলেন জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অজিত মাহাতো। সেই সময় গড় শালবনী এলাকায় সিভিক ভলান্টিয়ার মিলিয়ে প্রায় ৮০ জন পুলিশকর্মী ছিলেন। রাবণ পোড়া মাঠে হাতে গোনা তৃণমূলের লোকজন ছিলেন। প্রার্থী ও তৃণমূলে নেতারা দোকানে বসে জলযোগ সারেন। ঝাড়গ্রাম ব্লক তৃণমূলের সভাপতি নরেন মাহাতো ফোন করে লোকজন জোগাড় শুরু করেন। সাড়ে ৯ টা নাগাদ প্রার্থী রাবণ পোড়া মাঠে যান। সেখানে আসেন তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি
চূড়ামণি মাহাতো।
চূড়ামণি বলেন, ‘‘আমি বাগানে কাজু তুলছিলাম নরেন মাহাতো কিছুক্ষণ আগে ফোন করে আসার কথা জানালেন। তাড়াহুড়ো করে এলাম।’’
একই ভাবে তৎক্ষণাৎ খবর পেয়ে আসেন কুড়মি উন্নয়ন পরিষদের রথীন্দ্রনাথ মাহাতো। অবশ্য সকাল থেকে এসেছিলেন জেলা পরিষদের প্রাক্তন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শুভ্রা মাহাতো। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে প্রার্থী বিরক্ত হন। তিনি জানান, প্রচারের জন্য জামবনি ব্লকের গিধনিতে মানুষজন অপেক্ষা করছেন। এমনকি দেরি হওয়ায় তৃণমূলের পরামর্শাদাতার কর্মীদের ফোন করে উষ্মা প্রকাশ করেন কালীপদ। ততক্ষণে গড়শালবনী অঞ্চল সভাপতি সুনীল মাহাতো বার বার বুথ সভাপতিদের তাড়াতাড়ি আসার ফোন করেন। তাঁদের আসতে দেরি হওয়ায় ধমকও দেন সুনীল। তিনি বলেন, ‘‘পিকআপ ভ্যান ও মারুতিতে চেপে জিতুশোল, বাঘমুড়ি, শিরষি, বামুনমারা গ্রাম থেকে লোকজন এসেছিলেন। গড় শালবনী এলাকার কুড়ি জন মত ছিলেন। সব মিলিয়ে দেড়শো লোক হয়েছিল।’’ ব্লক সভাপতি নরেন মাহাতো বলেন, ‘‘এখন এই এলাকার মহিলারা সকলে কাজু কুড়োতে ব্যস্ত। সে জন্য সকালে লোকজন আসতে দেরি হয়েছে।’’
দেরি হলেও পৌনে দশটা নাগাদ রাবণ পোড়া মাঠে কর্মসূচি শুরু হয়। প্রথমে বিজেপির এক প্রাক্তন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য ঝর্ণারানি পাল তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন অজিত। প্রার্থী কালীপদও বলেন, ‘‘এক সময় প্রতিন্ধকতা ছিল। এখন সেই প্রতিবন্ধকতা আর নেই। দিদির উন্নয়নের বার্তা সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে। সব ঠিক হয়ে গিয়েছে।’’ তারপর মিছিল শুরু হয়। বেলনু নিয়ে সুসজ্জিত মিছিলে কিছুক্ষণ হেঁটে প্রার্থী পরবর্তী প্রচার কর্মসূচিতে যান। জিতুশোল পর্যন্ত মিছিল করেন তৃণমূল নেতারা। এ নিয়ে কটাক্ষ শুরু করেছে গেরুয়া শিবির।
বিজেপির ঝাড়গ্রাম লোকসভার লোকসভার সহ আহ্বায়ক সঞ্জিত মাহাতো বলেন, ‘‘এই অঞ্চলে তৃণমূল সাংগঠনিক ভাবে ভেঙে পড়েছে। তাই অন্য গ্রাম থেকে লোক থেকে এনে পুলিশ দিয়ে মিছিল করাতে হয়েছে।’’ অজিত বলেন, ‘‘ গত বছর পঞ্চায়েতে এই এলাকায় সমস্যা ছিল। তখন কোনও কর্মসূচি করতে পারিনি। কুড়মি মানুষজন ভুল বুঝতে পেরেছেন। কুড়মিদের সম্মান দিয়েছেন একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন সুসজ্জিত ভাবেই মিছিল সফল হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy