নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সুকান্ত মজুমদার। —ফাইল চিত্র।
দলের অন্দরের ‘ভারসাম্য’ বজায় রেখে সঙ্ঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠ সুকান্ত মজুমদারকে উত্তরবঙ্গের ছয় সাংসদের মধ্যে মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে বেছে নিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রবিবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় রাজ্য থেকে শুধু সুকান্ত এবং শান্তনু ঠাকুরের জায়গা পাকা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বুঝিয়ে দিলেন, রাজ্যে দলের পারফরম্যান্সের ভিত্তিও এ বার মাপা হয়েছে। দীর্ঘদিনের অধ্যাপক সুকান্তর ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি দলের অন্দরে ভাল। গতবার উত্তরবঙ্গ থেকে দু’জন মন্ত্রী থাকলেও এ বার তা নেমে এল এক জনে। তা নিয়ে অবশ্য উত্তরের বিজেপির অন্দরে কিছু ক্ষোভ রয়েছে। সেই সঙ্গে ওই নেতাদের অবশ্য আশা, ক্যাবিনেট সবে শুরু হচ্ছে। পরে সংযোজনের
সুযোগ তো থাকেই।
দলীয় সূত্রের খবর, রাজ্য সভাপতি হওয়ার পর থেকেই সুকান্ত দলের রাজ্যের একাধিক ‘গোষ্ঠী’র মধ্যে সমন্বয় রেখে কাজ করার চেষ্টা করেছেন। শুভেন্দু অধিকারী এবং দিলীপ ঘোষের মতো নেতারা যখন বিভিন্ন বিতর্কে জড়িয়েছেন, সুকান্ত বরাবর তাঁর নিজের মতো চলেছেন। পাশাপাশি, সাংসদ হিসেবে বালুরঘাটের মতো এলাকায় একাধিক ট্রেন চালু করা, ‘অমৃত ভারত স্টেশন’ প্রকল্প আনা, বালুরঘাট স্টেশনের পরিকাঠামো বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি রেখেছেন। তার উপর এ বার হাড্ডাহাড্ডির লড়াইয়ে বিপ্লব মিত্রের মতো ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থীকে হারাতে পেরেছেন। দলে জেপি নড্ডা এবং প্রধানমন্ত্রীর খুব ‘কাছের লোক’ সুকান্ত তাই স্বাভাবিক কারণেই মন্ত্রিত্বের দাবিদার হিসেবে এগিয়ে ছিলেনই। তা ছাড়া, রাজ্য সভাপতি পদের গুরুত্বও কাজ করেছে। সুকান্ত এ দিন বলেন, ‘‘স্বাধীনতার পরে দক্ষিণ দিনাজপুরের মতো পিছিয়ে থাকা জেলা প্রথমবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পাচ্ছে। এটা আমার কাছে তো বটেই, জেলাবাসীরকাছেও গর্বের।’’ রবিবার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানকে ঘিরে দক্ষিণ দিনাজপুর ছাড়া উত্তরের বাকি জেলাগুলিতে গেরুয়া শিবিরেও খুব বেশি উৎসাহ দেখা যায়নি। কারণ, রাজ্য জুড়ে এ বার দলের মন্দা ফলের মধ্যেও শুধু উত্তরবঙ্গই অর্ধেক আসন দিয়েছে বিজেপিকে। কিন্তু তার পরেও এখান মাত্র এক জনকে মন্ত্রী করা হবে বলে এ দিন খবর পেয়ে নিষ্প্রভ হয়ে পড়ে অন্য জেলার নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রের খবর, গত বারের মন্ত্রিসভায় আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লা, কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তবে পাঁচ বছরে মন্ত্রী হিসাবে তাঁদের কাজকর্ম নিয়ে দলের অন্দরেই নানা প্রশ্ন উঠেছিল। জনকে এ বার দল টিকিটই দেয়নি। আর নিশীথ ভোটে হেরেছেন। সেখানে আলিপুরদুয়ারে মনোজ টিগ্গা জিতলেও ব্যবধানও কমেছে। মন্ত্রিত্বের আশা মনোজের অনুগামীদের ছিলই। এ বার নিয়ে দু’বারের সাংসদ জলপাইগুড়ির জয়ন্ত রায় এবং দার্জিলিঙের রাজু বিস্তাকে নিয়ে অনেকে আশাবাদী ছিলেন। এর মধ্যে সঙ্ঘ এ বার জয়ন্তকে টিকিটের বিপক্ষে ছিলেন। আর রাজুকে শেষ সময় হর্ষবর্ধন শ্রিংলাকে সরিয়ে টিকিট দেওয়া হয়। তাঁদের নাম আগে বিবেচিত হয়নি বলে সূত্রের খবর।
আবার রাজবংশী মুখ হিসেবে নিশীথের বদলে জয়ন্ত মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাবেন, এমনটাও ভাবা হয়েছিল। তা করা হয়নি। এর আগে রায়গঞ্জ থেকে মন্ত্রী হয়েছিলেন দেবশ্রী চৌধুরী। সেখানে এ বার প্রথমবার জিতেছেন কার্তিক পাল। মালদহ উত্তর আসনে ফের নির্বাচিত হয়েছেন খগেন মুর্মু। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট থেকে সুকান্ত মজুমদারকে মন্ত্রী করায় রায়গঞ্জ, মালদহ নিয়ে আর ভাবেননি বিজেপি নেতৃত্ব।
ভোটের আগে কংগ্রেস থেকে বহিষ্কারের পরে বিজেপিকে সমর্থনের কথা বলেছিলেন দার্জিলিঙের পাহাড়ের গোর্খা নেতা বিনয় তামাং। রবিবার বললেন, ‘‘এতগুলি সাংসদ দিলেও বিজেপি উত্তরবঙ্গের প্রতি সুবিচার করল না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy