দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী গোপাল লামা। —ফাইল চিত্র।
গত দেড় বছরের মধ্যে দার্জিলিং পাহাড়ে ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ), দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা, এক জন বিধায়ক থেকে প্রত্যেকটি পুরসভার পুর-প্রশাসন শাসক দলের দখলে থাকলেও, লোকসভায় হার কেন? শুধু হার নয়, পাহাড়ে এক লক্ষের মতো ভোটের ‘লিড’ থাকবে বলে ভাবা হলেও, কার্যত উল্টোটাই হয়েছে। বিজেপির রাজু বিস্তা তৃণমূলের গোপাল লামার থেকে পাহাড়ে ৯৩ হাজারের কিছু ভোট বেশি পেয়েছেন। গত লোকসভায় তুলনায় বিজেপি-তৃৃণমূলের ব্যবধান অনেকটা কমলেও কেন এমন ফলাফল, এই প্রশ্ন মঙ্গলবার থেকে ঘুরছে তৃণমূলের সঙ্গী পাহাড়ের শাসক, প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার অন্দরে।
প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি অনীত থাপা বলেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করে জিততে পারিনি। তবে আগের থেকে ব্যবধান কমেছে। জেতা বা লিড কেন এল না, তা দলীয় স্তরে পর্যালোচনা অবশ্যই হবে।’’
দলীয় সূত্রের খবর, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে পাহাড়ে চিন্তন বৈঠক বা পর্যালোচনা বৈঠক ডাকতে চলেছেন দলের সভাপতি তথা জিটিএ প্রধান অনীত থাপা। তবে ভোটের ফলাফলের পরে প্রাথমিক বিশ্লেষণে দলের অনুমান দু’টি। প্রথমত, তৃণমূলের প্রতীককে পাহাড়ের মানুষ পুরোপুরি এখনও গ্রহণ করেনি। দ্বিতীয়ত, জিটিএ সদস্য থেকে পঞ্চায়ত স্তরের জনপ্রতিনধিরা গা ঘামিয়ে ভোট করেননি বলে অভিযোগ। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রথম সারির বেশ কয়েক জন নেতা-নেত্রীর সঙ্গে মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার দিনভর কথা বলেছেন অনীত। বিভিন্ন এলাকা থেকে ফলাফলের রিপোর্ট নিয়েছেন। দলের নেতা-কর্মীদের বাইরেও নিজের যোগাযোগে সাধারণ পাহাড়বাসীর মতামত শুনেছেন।
তাতে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার দাবি, তৃণমূলের প্রতীক নিয়ে জনপ্রতিনিধিরা পাহাড়ের গ্রামে বা শহরে পুরোপুরি সক্রিয়তা দেখাননি। পাহাড়ে বরাবর রাজ্যের ক্ষমতাসীন দলের বিপক্ষে থাকার প্রবণতা রয়েছে। স্থানীয় দলের বাইরে পাহাড়বাসীর পছন্দ জাতীয় দল। স্থানীয়দের সমর্থনে কংগ্রেস, বিজেপি এ ভাবে এই আসনে একাধিক বার জিতেছে। বিমল গুরুং থেকে মন ঘিসিং বিজেপির সঙ্গে মিলে রাজ্যের বিপক্ষেই বেশিরভাগ সময় থেকেছেন। সেখানে অনীত থাপা, বিনয় তামাংয়ের রাজ্যের সঙ্গে হাত মেলানোয় তাঁদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ তকমাও পেতে হয়েছে। তাই জোটে থাকলেও, অনীতেরা পাহাড়ে প্রতিটি ভোটে নিজেদের ‘মোমবাতি’ প্রতীকে লড়েছেন। তাতেও মন ভেজেনি পাহাড়বাসীর, মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা।
ধীরে ধীরে পরিস্থিতি বদলে অনীতেরা ভোট পেয়ে বিভিন্ন স্তরে ক্ষমতায় এসেছেন। কিন্তু তৃণমূলকে নিয়ে সমস্যা থেকেই গিয়েছে। তৃণমূলের প্রতীক নিয়ে তাই প্রথম থেকেই মোর্চার নেতাদের একাংশেই উদ্বেগ, আশঙ্কা ছিল। পাহাড়ের জনপ্রতিনিধিরা তৃণমূলের প্রতীক নিয়ে ঠিকঠাক প্রচার করেননি বলে অভিযোগ। তাঁদের আশঙ্কা, বেশি তৃণমূল-সখ্য দেখালে নিজেদের পায়ের তলায় মাটি সরতে পারে। অনেকেই প্রার্থীর পরিচয় নিয়ে প্রচার সেরেছেন। কালিম্পংয়ে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার
প্রথম সারির এক নেতা জানান, পাহাড়ের তিনটি বিধানসভা মিলিয়ে বিজেপির ৮০ হাজারের মতো ভোট কমছে। আর তাঁদের ৬২ হাজারের মতো বেড়েছে, এটাই আপাতত দলের প্রাপ্তি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy