আসানসোলে সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপি প্রার্থী সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। নিজস্ব চিত্র।
ভোট পরিচালনায় নির্বাচন কমিশন ও জেলা প্রশাসনের ভূমিকার প্রশংসা করে হারের জন্য মূলত ভুয়ো ভোটকেই দায়ী করলেন আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। একই সঙ্গে আসানসোল পুরসভার সিংহভাগ ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়ে থাকায় তাঁদের নৈতিক জয় হয়েছে বলেই দাবি সুরেন্দ্রর। তবে তৃণমূলের দাবি, কে কোথায় এগিয়ে থাকল তার চেয়ে বড় কথা আসানসোল পুনরুদ্ধার করেছে তৃণমূল।
ভোট গণনা শুরু হওয়ার প্রথম দু’রাউন্ডে এগিয়ে ছিলেন সুরেন্দ্র। আসানসোলে হোটেলে বসে গণনা নজরে রেখেছিলেন তিনি। তৃতীয় রাউন্ড থেকে ক্রমাগত পিছিয়ে পড়তে থাকেন। এর পর দুপুর পৌনে ১টা নাগাদ গণনাকেন্দ্রে আসেন করেন সুরেন্দ্র। সে সময় তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, কয়েকটি বিষয়ে জেলা নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে আলোচনা করবেন। গণনার একেবারে শেষলগ্নে কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তৃণমূলের সদস্য-সমর্থকদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। তাঁর হারের কারণ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, সুরেন্দ্র পরে বলবেন বলে জানিয়েছিলেন।
শনিবার বার্নপুর রোডে দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন সুরেন্দ্র। হারের প্রথম কারণ হিসেবে তিনি মনে করেন, “গণনায় যে সব বুথে অস্বাভাবিক ব্যবধানে হার হয়েছে, সেই বুথগুলির বিস্তারিত বিবরণ জেলা নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে জানতে চাই। দেখলাম, যে সব বুথে আমাদের দল পোলিং এজেন্ট বসাতে পারেনি, সেখানেই প্রচুর ভোটে এগিয়েছে তৃণমূল। অর্থাৎ, ওই বুথগুলি পুরোপুরি অসংরক্ষিত ছিল।” সুরেন্দ্র জানান, প্রায় ৩৪৫ বুথে পোলিং এজেন্ট বসাতে পারেনি বিজেপি। সেখানে শুধুমাত্র তৃণমূল ও এক নির্দল প্রার্থী পোলিং এজেন্ট বসেছিলেন। অন্য কোনও বিরোধী দলের এজেন্ট ছিলেন না। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক বুথে দু’জন পোলিং এজেন্ট বসতেই হবে। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল নির্দল প্রার্থীর সঙ্গে যোগসাজস করে নিজেদের ও এক জন নির্দলের পোলিং এজেন্ট বসিয়েছিল। জোর খাটিয়ে বিরোধীদের পোলিং এজেন্ট বসতে দেয়নি। তাই ওই বুথগুলি অসংরক্ষিত থেকে গিয়েছে।
দ্বিতীয় কারণ হিসেবে সুরেন্দ্র ভুয়ো ভোটকেই দায়ী করেছেন। তাঁর অভিযোগ, বর্ধমান-দুর্গাপুর ও আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের একাধিক বুথে এক জন ভোটারের একাধিকবার নাম তোলা হয়েছে। বিস্তারিত বিবরণ-সহ তাঁদের নাম বাদ দিতে গত মার্চ তিনি দেশের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে আবেদন করেন বলে দাবি। তাঁর দাবি, “আমি জানি মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক রাজ্য নির্বাচনী আধিকারিককে আমার আবেদনটি পাঠিয়ে পদক্ষেপের পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তার পর কী হয়েছে জানি না।” তবে তিনি বলেন, “আসানসোল পুরসভার ১০৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৭৬টি ওয়ার্ডেই তৃণমূলের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। এটা বিজেপির নৈতিক জয়।” তবে সুরেন্দ্রর দাবিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের জেলা সভাপতি নরেনদ্রনাথ চক্রবর্তী জানান, সর্বশেষ ফলে মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাক্ষাণ করেছেন। সেটাই বড় কথা। তবে কিছুক্ষেত্রে দলের অবস্থান পর্যালোচনা করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy