—প্রতীকী চিত্র।
তিন বড় দলের প্রার্থীই বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দা। তাই ঘরের মাঠে বড় ব্যবধানে ‘লিড’ পেতে মরিয়া তিন জনই।
গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রামাঞ্চলের ভোটে এগিয়ে গেলেও জেলা সদরের মাটিতে বসে গিয়েছিল তাঁর রথের চাকা। এ বার বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দা অরূপ চক্রবর্তী তালড্যাংরার বিধায়ক হওয়া সত্ত্বেও তাঁকেই লোকসভা ভোটে প্রার্থী করেছে তৃণমূল।
বিজেপির প্রার্থী, বিদায়ী কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারও বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দা। সর্বোপরি, চিকিৎসক হিসেবেও তাঁর পরিচিতি রয়েছে। সিপিএমের প্রার্থী নীলাঞ্জন দাশগুপ্ত বাঁকুড়া আদালতের আইনজীবী। তাই বাঁকুড়া শহর তথা বাঁকুড়া বিধানসভা কাকে ভিকট্রি স্ট্যান্ডে দেখতে চায়, তা নিয়ে জল্পনা চলছে অলিতেগলিতে।
শহরে গুরুত্ব দিলেও ‘লিড’ বাড়াতে তৃণমূলের নজর গ্রামেই। গত পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি বাঁকুড়া বিধানসভার গ্রাম-গঞ্জে তেমন দাগ কাটতে পারেনি। বাঁকুড়া ১ ব্লকের আন্ধারথোল পঞ্চায়েতে তৃণমূল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও সংরক্ষণের গেরোয় প্রধান হয় বিজেপির। অন্যদিকে দলেরই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বাঁকুড়া ২ ব্লকের পুরন্দরপুর পঞ্চায়েত বিজেপির কাছে হারতে হয়েছে তৃণমূলকে। তৃণমূলের বাঁকুড়া ১ ব্লক সভাপতি অংশুমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “আমাদের ব্লক থেকে যতটা বেশি সম্ভব ‘লিড’ দেওয়ার চেষ্টা করছি।’’ বাঁকুড়া ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি বিধান সিংহের দাবি, “দলে ফাঁকফোঁকর যা ছিল, অরূপদা নিজে আলোচনায় বসে মিটিয়ে দিয়েছেন।’’ বাঁকুড়া শহর নিয়েও আশাবাদী পুরপ্রধান অলকা সেন মজুমদার, উপপুরপ্রধান হিরণ চট্টরাজেরা।
বাস্তবে শহরে কি এতটাই স্বস্তিতে ঘাসফুল? ধন্দ দলেরই একাংশে। কারণ বিজেপির চোরা স্রোত। শহরের এক চায়ের দোকানি খোলসা করেন, ‘‘মানুষ জেনে গিয়েছেন কোনটা দাদার (প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী) ভোট, কোনটা দিদির (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ভোট। ইভিএমেও সে মতোই ছাপ মারবেন।’’ ফুঁসে ওঠেন বাঁকুড়া শহরের এক তৃণমূল নেতা। বলেন, ‘‘কী বলছেন, লক্ষ্মীর ভান্ডারের সুফল দল পাবে না?” শহরের এক বিজেপি নেতার পাল্টা দাবি, “নিয়োগ দুর্নীতি, সন্দেশখালি, সরকারি প্রকল্পে যোগ্য উপভোক্তাদের বঞ্চিত করার মতো ঘটনায় লক্ষ্মীর ভান্ডার চাপা পড়ে গিয়েছে।’’
বাঁকুড়া শহরে হাওয়া থাকলেও বিজেপির সংগঠন অতটা পোক্ত নয় বলে মানছেন শহরবাসীর একাংশ। ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এক শিক্ষক বলেন, “আমাদের এলাকায় সিপিএম, তৃণমূল বাড়ি বাড়ি ভোট প্রচার করলেও বিজেপিকে দেখলাম না।’’ তবে ২০১৯ সালে বামেদের ভোট একচেটিয়া ভাবে বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছিল। এ বার তেমনটা হবে না বলেই দাবি করছেন সিপিএম প্রার্থী নীলাঞ্জন দাশগুপ্ত। নীলাঞ্জনের কথায়, ‘‘যেখানেই যাচ্ছি মানুষ তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভের কথা শোনাচ্ছেন।” নীলাঞ্জন ভোট পেলে বিজেপি বেকায়দা পড়বে বলে আশায় তৃণমূল।
সুভাষের বিরুদ্ধে অরূপের প্রচার, ‘‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েও তিনি জেলার জন্য কিংবা এই শহরের জন্য কী করেছেন? পুরভোটেও সুভাষবাবুর ওয়ার্ডেই বিজেপি প্রার্থী হেরেছেন। কেবল হাওয়ায় এ বারের ভোট হবে না।” পাল্টা সুভাষ বলছেন, “রাজ্যে প্রথম দফাতেই বাঁকুড়া মেডিক্যালে করোনা নির্ণয় কেন্দ্র, কেশড়া-কাটজুড়িডাঙা হল্ট স্টেশন, বাঁকুড়া মেডিক্যালে সুপার স্পেশালিটি ব্লক, বাঁকুড়া স্টেশনে লিফট-সহ নানা পরিষেবা চালু করেছি। মানুষ দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন ভাবনাচিন্তা করেই করবেন।” বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতিসুনীলরুদ্র মণ্ডলের দাবি, “যাঁরা পঞ্চায়েত নির্বাচনের সঙ্গে এই ভোটকে মেলানোর চেষ্টা করছেন, তাঁরা ভুল করছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy