শ্চিম বর্ধমানের কুলটির কিশোর সঙ্ঘ মাঠে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ, শনিবার সভা করবেন। শুক্রবার তারই প্রস্তুতিতে ব্যস্ত কর্মীরা। ছবি: পাপন চৌধুরী।
এক দিকে, দলের ‘গোষ্ঠী-বিবাদ’ মেটানো, আর এক দিকে অবাঙালি ভোটব্যাঙ্ক নিজেদের দিকে ধরে রাখা— এই দুই লক্ষ্য পূরণে কী দাওয়াই দেন নেত্রী, আজ সে দিকে তাকিয়ে খনি-শিল্পাঞ্চলের তৃণমূল কর্মীরা। আজ, শনিবার আসানসোলে দলের প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিন্হার সমর্থনে দু’টি সভা করতে আসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সভাস্থল হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে কুলটি ও আসানসোলকে। সভার আগের দিন তৃণমূলের অনেক কর্মীর দাবি, অভ্যন্তরীণ ‘কোন্দল’ মেটাতে মমতা কোন ঐক্যের সুর বেঁধে দেন, সে দিকেই নজর থাকবে তাঁদের।
আসানসোলে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব নতুন নয়। দলের নানা কর্মসূচিতে তার ছবি প্রকাশ্যে উঠে এসেছে। কোনও কোনও নির্বাচনের আগে তা আরও প্রকট হয়েছে। ২০১৪ ও ২০১৯-র লোকসভা ভোটে এই কেন্দ্রে বিজেপির কাছে হারের পিছনে ‘অন্তর্দ্বন্দ্ব’ বড় কাঁটা হয়েছিল বলে মনে করেছিলেন দলের শীর্ষ নেতৃত্বও। সে জন্য কোনও কোনও নেতাকে তোপের মুখেও পড়তে হয়েছিল।
এর পরেও ‘অন্তর্কলহ’ থেমে নেই, দাবি তৃণমূলের নিচুতলার কর্মী-সমর্থকদের অনেকেরই। ২০২১-এ বিধানসভা ভোটে আসানসোল দক্ষিণ ও কুলটি কেন্দ্রে হারের পিছনেও তা কারণ হয়েছে বলে ঘাসফুল শিবিরের অনেকে মনে করেন। এ বারের লোকসভা ভোটের আগে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব পিছু ছাড়ছে না। সম্প্রতি আসানসোল দক্ষিণে দলের কর্মসূচি ও একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন এক পুর-প্রতিনিধি এবং এক বিধায়ক। বারাবনিতে দলের প্রার্থীর রোড-শোয়ে এক বড় নেতার যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও, শেষ পর্যন্ত তাঁকে সেখানে দেখা যায়নি। কর্মীদের একাংশের ধারণা, ওই কর্মসূচিতে আর এক নেতার উপস্থিতির কারণে সেই নেতা কর্মসূচিটি এড়িয়ে গিয়েছেন। আবার, আসানসোল শহরে প্রার্থীর সমর্থনে আয়োজিত কোনও কর্মসূচিতে দলের এক জেলা নেতাকে দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। ২২ এপ্রিল কুলটিতে রোড-শো কর্মসূচিতে দলের প্রবীণ নেতাদের অনেককে দেখা যায়নি বলে স্থানীয় কর্মীরা জানান।
তৃণমূলে এই ‘দ্বন্দ্বের’ ছবি দেখে খুশি বিজেপি। দলের জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘এ তো সূত্রপাত। ভোটে হারের পরে ওদের খুঁজে পাওয়া যাবে না।’’ যদিও এ সব কোনও ঘটনাই ‘অন্তর্কলহের’ কারণে নয় বলে পাল্টা দাবি তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর। তাঁর বক্তব্য, ‘‘প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে নির্দিষ্ট দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা সেগুলি পালন করছেন। আমরা পরিবারের মতো। বিরোধীরা চেষ্টা করেও ভাঙন ধরাতে পারবে না।’’
সরকারি ভাবে প্রার্থী ঘোষণার বেশ কিছু দিন আগেই আসানসোল কেন্দ্রে শত্রুঘ্নই ফের প্রার্থী হবেন বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের অনেকে মনে করছেন, আসানসোল কেন্দ্রে অবাঙালি ভোট নিজেদের দিকে টেনেই বিজেপি পর পর দু’বার জয় পেয়েছিল। তা জানেন বলেই মমতা সেই ভোটারদের কাছে টানার লক্ষ্যে পরিকল্পনা করেছেন। তারই অঙ্গ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে কুলটির সভাস্থল। আজ তিনি শিল্পাঞ্চলের দুই সভা থেকে কী বার্তা দেন, তার অপেক্ষায় রয়েছেন দলের নেতা-কর্মীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy