পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে ইস্তাহার প্রকাশ। নিজস্ব চিত্র।
‘পিছিয়ে’ পড়া জেলা পুরুলিয়ার উন্নয়নে সত্তরের দশকে তাঁর বাবা দেবেন্দ্রনাথ মাহাতো স্লোগান তুলেছিলেন, ‘ফাইট ফর পুরুলিয়া’। তার পরে কংসাবতী নদী দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। তাঁর ছেলে, সে দিনের কিশোর নেপাল মাহাতো এ বারে পুরুলিয়া লোকসভায় লড়ছেন ‘ইন্ডিয়া’ জোটের প্রার্থী হিসেবে। ‘ইন্ডিয়া’ জোট ক্ষমতায় এলে কী কী প্রতিশ্রুতি পালন করা হবে, তা নিয়ে জাতীয় কংগ্রেসের তরফে ইতিমধ্যে ইস্তাহার প্রকাশিত হয়েছে। তার পাশাপাশি, কেবলমাত্র পুরুলিয়ার জন্য দশ দফা দাবি নিয়ে ‘দশে-দশ’ শীর্ষক পৃথক ইস্তাহার প্রকাশ করেছেন নেপাল।
ইস্তাহারে কুড়মি ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের ন্যায্য দাবি প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে জানিয়ে নেপাল বলেন, “কুড়মালি ভাষা যে আজ রাজ্যে স্বীকৃতি পেয়েছে, বিধানসভায় সেই প্রস্তাব আমিই পেশ করেছিলাম। পাশাপাশি, কুড়মিদের জাতিসত্তার মূল যে দাবি, তা নিয়ে লোকসভায় সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী।” তাঁর সংযোজন, “কুড়মি সম্প্রদায়ের দাবি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের পাশাপাশি ২০০৬ সালে কেন্দ্রের ইউপিএ সরকার যে বনাধিকার আইন তৈরি করেছিল, তা বর্তমান সরকারের আমলে বিপন্ন। ওই আইনে জল, জঙ্গল, জমির উপরে আদিবাসীদের অধিকারের কথা বলা হয়েছে। ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় এলে সেই অধিকার সুরক্ষিত থাকবে। একই সঙ্গে আরও কয়েকটি জাতির সামাজিক দাবির ন্যায় প্রতিষ্ঠার কথাও রয়েছে ইস্তাহারে।”
এর সঙ্গে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ও শিল্পোন্নয়নে পুরুলিয়ার ছড়রার এয়ারস্ট্রিপ চালু করতে পদক্ষেপ, পুরুলিয়া-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে এমসের মতো সরকারি হাসপাতাল গড়ে তোলা, পুরুলিয়ার মাটির প্রকারভেদ মাথায় রেখে বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে পরিকল্পনা করে বৃহৎ জলাধার গড়ে সেচ ব্যবস্থা গড়ে তোলা ও একাধিক ফসল ফলানোর ব্যবস্থা করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ, মাসিক মিটার রিডিংয়ের মাধ্যমে মাসিক বিলের ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। তাঁর উদ্যোগেই এয়ারস্ট্রিপের জমি প্রতিরক্ষা মন্ত্রক থেকে রাজ্য সরকারের হাতে এলেও আজও তা চালু হয়নি অভিযোগ করে নেপালের দাবি, ভারতীয় রেলপথের মানচিত্রে জেলার রেল যোগাযোগ-বিহীন এলাকাকে যুক্ত করা হবে। আদ্রা-ঝাড়গ্রাম ভায়া হুড়া, পুঞ্চা, মানবাজার, বান্দোয়ান যে রেলপথের দাবি দীর্ঘদিনের, তা বাস্তবায়িত করার অঙ্গীকার করা হয়েছে। তিনি বলেন, “যে এলাকা দিয়ে ওই রেলপথের দাবি রয়েছে, সেখানকার সাধারণ মানুষকে নিয়ে দেড় দশক আগে বান্দোয়ান থেকে আদ্রা পদযাত্রা করেছিলাম। ওই রেলপথ গড়ার স্বপ্ন এলাকাবাসীর সঙ্গে আমাদেরও দীর্ঘদিনের।”
এর সঙ্গে পুরুলিয়াকে দেশের পর্যটন-মানচিত্রে তুলে আনার লক্ষ্যে কেন্দ্রের সহায়তায় পরিকল্পনা করে পদক্ষেপ নেওয়া, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে পুরুলিয়ার বঞ্চনার কথা উল্লেখ করে শিক্ষকতার চাকরিতে স্থানীয়দের অগ্রাধিকার সুনিশ্চিত করা এবং বলরামপুরকে পুরসভা, ‘নোটিফায়েড এরিয়া’ আদ্রা রেলশহরের নাগরিক স্বাচ্ছন্দ্য, মানবাজার ও ঝালদায় মহকুমাগত সুবিধার পরিকাঠামো গড়ে তোলার কথা রয়েছে ইস্তাহারে। নেপাল বলেন, “বিধায়ক থাকাকালীন জেলার স্বার্থে পুরুলিয়ার মানুষ আমার সংগ্রামকে কাছ থেকে দেখেছেন। পুরুলিয়ার যে সমস্ত দাবি দীর্ঘদিন পূরণ হয়নি, সেগুলিই ইস্তাহারে রাখা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy