ঝাড়গ্রাম ইন্দিরা দেবী কলেজে সিসি ক্যামেরার মনিটর পরিদর্শন করছেন বিজেপি প্রার্থী প্রণত টুডু। নিজস্ব চিত্র
তাঁর নামে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ভোটের ফল প্রকাশের পর ‘ন্যায়যাত্রা’ করে মানুষের কাছে বিচার চাইবেন ঝাড়গ্রাম লোকসভার বিজেপি প্রার্থী প্রণত টুডু। পুলিশের অতি সক্রিয়তা নিয়ে সবর হয়েছে বিজেপিও।
যদিও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের বক্তব্য, প্রণত তাঁর দেহরক্ষী ও সঙ্গীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতেও মামলা রুজু হয়েছে। প্রণতের অভিযোগের ভিত্তিতেও মামলা রুজু করে তদন্ত চলছে। পক্ষপাতের প্রশ্নই নেই। তবে বিজেপির অভিযোগ, প্রকৃত ঘটনা আড়াল করার জন্য সাজানো ঘটনার ভিত্তিতে প্রণতের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। বিজেপি সামনে আনছে সাম্প্রতিক নানা ঘটনাকে। তারা মনে করাচ্ছে, কখনও চোলাইয়ের বিরুদ্ধে খবর করার জন্য সাংবাদিককে জেল খাটতে হয়েছে। আবার মদ-কাণ্ডে একের পর এক শবরের মৃত্যুর ঘটনাকে আড়াল করতে সংবাদপত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধেই আদিবাসী নিপীড়ন প্রতিরোধ আইনে মামলা হয়েছে। গত এক দশকে ঝাড়গ্রামে একের পর এক অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন বিজেপি নেতা-কর্মীরাও। গেরুয়া শিবিরের ব্যাখ্যা, সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে প্রণত ভোটে লড়ছেন। তিনি স্বচ্ছ ভাবমূর্তির। তাঁকে নিয়ে প্রবল অস্তস্তি রয়েছে তৃণমূল শিবিরে। গত ১৭ মে ঝাড়গ্রামের গজাশিমূলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেছিলেন, ‘‘দাঁড় করিয়েছে একজন ডাক্তারকে। ডাক্তার থেকে তিনি ডাক্তারিটা না করে তিনি স্টাডি লিভে চলে গিয়েছিলেন। শুনলাম কোর্টে গিয়ে কেস করেছে।"
ভোটে লড়ার জন্য প্রণত ঝাড়গ্রাম মেডিক্যালের রেডিয়োলজি বিভাগের চিকিৎসক পদ থেকে ইস্তফা দেন। ইস্তফাপত্র গৃহীত না হওয়ায় হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। ইস্তফা গ্রহণের জন্য রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। স্টাডি লিভের সময় বেতন বাবদ প্রাপ্ত ২১ লক্ষ টাকা রাজ্য সরকারকে ফেরতও দেন প্রণত। ভোটের প্রচার পর্বে সাঁকরাইলের রগড়ায় প্রণতের উপর হামলায় অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ভোটের দিনও গড়বেতার মঙ্গলাপোতা বুথে গিয়ে আক্রান্ত হন প্রণত। জখম হন তাঁর দুই দেহরক্ষী ও বিজেপির কয়েকজন কার্যকর্তাও। সে দিনের ঘটনার পরে গড়বেতা গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বিজেপি প্রার্থী প্রণত। অভিযোগ করেন জখম তাঁর এক দেহরক্ষীও। এফআইআর করে মামলা রুজু করে গড়বেতা থানার পুলিশ। অন্য দিকে, সেদিনই বিকেলে গড়বেতা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মঙ্গলাপোতা গ্রামের বাসিন্দা তৃণমূল কর্মী মানিক পাঠান।
মানিকের অভিযোগ, ওইদিন তাঁর দিদি সবিলা ভুঁইয়া ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে প্রণত ও তাঁর দেহরক্ষী ও বিজেপির হাতে আক্রান্ত হন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত দু’পক্ষের কেউই গ্রেফতার হননি। ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপির সভাপতি তুফান মাহাতো বলেন, ‘‘সেদিন আমাদের প্রার্থী কীভাবে আক্রান্ত হন তা মানুষ দেখেছেন। দলের তরফে এই মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’’ প্রণত বলছেন, ‘‘হামলাকারীদের আড়ালের জন্য আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগে মামলা হয়েছে। ফল প্রকাশের পর ন্যায়যাত্রা করে বিচার চাইব।’’
সূত্রের খবর, এ বিষয়ে কর্মসূচির রূপরেখা তৈরির জন্য বিজেপির দলীয়স্তরে আলোচনা চলছে। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য সুখময় শতপথী বলছেন, ‘‘আইনি পদক্ষেপের পাশাপাশি, দলীয় কর্মসূচির মাধ্যমেও বিষয়টি জনসমক্ষে আনব।" ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মুর পাল্টা দাবি, ‘‘ওই বুথের ভোটাররা তৃণমূলের সমর্থক। তাই পরিকল্পিতভাবে বিজেপি প্রার্থী দলবল নিয়ে সেখানে হামলা করেছিলেন। জনতার প্রতিরোধ হয়েছিল। আইন আইনের পথে চলবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy