Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

স্ত্রীকে অপমান! অভিষেকের তির সৌমিত্রকে

বৃহস্পতিবার একযোগে তারই জবাব দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল। যদিও সৌমিত্র তাতে গুরুত্ব দিতে নারাজ।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বেলিয়াতোড় শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২৪ ০৯:১৫
Share: Save:

গতবার বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁকে সাংসদ করার মূল কাণ্ডারিই এ বার ভোটে তাঁর প্রতিপক্ষ। সৌমিত্রর সেই প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল এ বার তৃণমূল প্রার্থী হওয়ায় প্রচারে দলের কর্মীদের এ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। বেলিয়াতোড়ের সভামঞ্চ থেকে বৃহস্পতিবার একযোগে তারই জবাব দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল। যদিও সৌমিত্র তাতে গুরুত্ব দিতে নারাজ।

এ দিন অভিষেক বলেন, “এই সৌমিত্র খাঁকে ২০১৯-এ বাঁকুড়ায় আদালত ঢুকতে দেয়নি। ওর হয়ে প্রচার করেছিল সুজাতা। আর যেখানে ও (সৌমিত্র) নিজে প্রচার করেছিল, সেই খণ্ডঘোষে ৩০ হাজার ভোটে হেরেছিল। আর এ বার সব জায়গায় যাচ্ছে আর মিথ্যা কথা বলে বেড়াচ্ছে। যে নিজের সহধর্মিনীকে অপমান করে, সে কোনও দিন নারীদের উন্নয়ন করতে পারে? সে কোনও দিন পিছিয়ে পড়া মানুষের কথা বলতে পারে?”

তার আগে মঞ্চে কান্নাভেজা গলায় সুজাতা বলেন, “রাত সাড়ে ৩টায় আমাকে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যেতে বাধ্য করেছিল। আদালতে বিচার পেয়েছি। জনতার আদালতে বিচার চাই, আপনারা বিচার করবেন তো?” সৌমিত্রর সম্পত্তির হিসাব নিয়ে কটাক্ষ করে তাঁর সংযোজন, “সম্পত্তি দেখেছেন! হলফনামায় ৬ কোটি টাকার সম্পত্তি দেখিয়েছে। ওটা সরকারি ভাবে দেখিয়েছে। তাহলে ‘আনঅফিসিয়ালি’ কত আছে! আমার নিজের বাড়ি, জমিজমা কিছুই নেই। এক কাপড়ে বেরিয়ে এসেছিলাম। সাংসদ হয়ে বিষ্ণুপুরের মানুষের জন্য একটা কাজও করেননি, কেবল ফূর্তি করেছেন।” সৌমিত্রের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিষেকও। তিনি বলেন, “দু’নম্বরি, চরিত্রহীন, লম্পট বিজেপির প্রতিনিধিকে তাড়ান, সুজাতাকে দিল্লিতে পাঠান।”

বিজেপি সাংসদ হিসেবে সৌমিত্রর কাজেরও সমালোচনা করেন অভিষেক। দাবি করেন, ‘‘বলেছিল গঙ্গাজলঘাটিতে স্টেডিয়াম করবে, এক কুড়ুল মাটি পর্যন্ত ফেলতে পারেনি। চোখে দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, কানে শুনে নয়।”

বছর খানেক আগে সৌমিত্র জঙ্গলমহলকে পৃথক রাজ্যের দাবি তুলে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন। এ দিন সেই প্রসঙ্গ তুলে অভিষেকের খোঁচা, “সৌমিত্র দু’বছর আগে নীলাদ্রিশেখর দানা (বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক) আর ওন্দার বিধায়ক অমরনাথ শাখাকে পাশে নিয়ে বলেছিল, বাঁকুড়াকে আলাদা রাজ্য হিসেবে কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। জঙ্গলমহলকে ভাগ করা হোক। আপনারা চান বাংলা থেকে বাঁকুড়াকে ভাগ করা হোক? প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করবেন, যে বলেছিল বাংলাকে ভাগ করবে, বাঁকুড়াকে ভাগ করবে, আপনি তাকেই আবার প্রার্থী করেছেন। এ নিয়ে আপনার অবস্থান স্পষ্ট করে বলুন।”

সৌমিত্রের জবাব, “আমি আজও বলছি রাঢ়বঙ্গের প্রাকৃতিক সম্পদ লুট করে মুনাফা লুটছে কলকাতার লোকেরা। আর এখানকার মানুষ বাড়ি করার জন্য একটু বালিও পাচ্ছেন না। এর বিরুদ্ধেই প্রতিবাদ ছিল। আজও আমার দাবি, রাঢ়বঙ্গের মানুষের অধিকার সুনিশ্চিত করতে হবে।”

সুজাতার প্রশ্নের প্রেক্ষিতে সৌমিত্র বলেন, “আজকের এই পরিণতির জন্য কে দায়ী সেটা ২০২১-এই মানুষ বুঝে গিয়েছেন। তাই ওনার কোনও প্রশ্নের জবাব দেওয়ার দরকার আমার নেই। উনি নাটক করছেন।’’ সৌমিত্রর দাবি, তাঁর বাবা প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তাঁর পারিবারিক সম্পত্তি অনেক দিনের। তিনি বলেন, ‘‘ওনার (সুজাতা) ক্ষমতা থাকলে একটাও অবৈধ লেনদেনের সঙ্গে আমি জড়িত, এমন প্রমাণ দেখান।’’ অভিষেকের উদ্দেশে তাঁর জবাব, “আমার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলার আগে তিনি আয়নায় নিজের মুখ দেখে নিন।’’

এ দিনের সভার ভিড়ের প্রশংসা করেছেন অভিষেক। তৃণমূলের বড়জোড়া ব্লক সভাপতি কালীদাস মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “সভায় প্রায় ৫০ হাজার মানুষ এসেছেন।’’ তবে সৌমিত্রের দাবি, “আমি শুনেছি ওদের সভাস্থলের বড় অংশই ফাঁকা ছিল। ভুল বুঝিয়ে কিছু মানুষকে সভায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। মাঝপথে অনেকেই সভাস্থল ছাড়েন।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy