কালনায় অভিষেক। নিজস্ব চিত্র ।
লোকসভো ভেটের মুখে ঘরের ‘বিভীষণেরা’ দলকে ভাবাচ্ছে। তার আঁচ পৌঁছেছে শীর্ষ মহলেও। বৃহস্পতিবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বর্ধমান পূর্ব লোকসভার সাতটি বিধানসভার বিধায়কদের নিয়ে দীর্ঘ বৈঠকে তেমন বার্তাই দিলেন। তাঁর দাবি, পুরসভা ও পঞ্চায়েতে জয় আর লোকসভায় হার, এটা হবে না। যে বুথে দল পিছিয়ে থাকবে, তার সভাপতি বা পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেবে। আবার, ভাল ফল হলে মিলবে পুরস্কারও।
এ দিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ হেলিকপ্টারে কালনার ১২ নম্বর ওয়ার্ডে চালকলের মাঠে নামেন অভিষেক। খানিক দূরে এক প্রেক্ষাগৃহে শুরু হয় বৈঠক। ছিলেন এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শর্মিলা সরকার, রাজ্যের প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, রাজ্য মুখপাত্র দেবপ্রসাদ বাগ-সহ দলের বিধায়ক, পুরপ্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরা। বৈঠকের প্রথমার্ধে শুধু বিধায়কদের সঙ্গে আলোচনা করেন। পরের অংশে বসেন সবার সঙ্গে। বৈঠক শেষে অভিষেক বলেন, ‘‘বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রে দলের নবগঠিত নির্বাচনী কমিটির সঙ্গে বৈঠক ছিল। প্রার্থী, জেলা নেতৃত্ব-সহ সব স্তরের নেতৃত্ব ছিলেন। আমরা অত্যন্ত ইতিবাচক ও দৃঢ়বিশ্বাসী, গত বারের থেকে ব্যবধান বাড়বে এই কেন্দ্রে।’’
সম্প্রতি কালনা শহরে গোষ্ঠীকোন্দল বার বার সামনে এসেছে। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিষেক শহর সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চান, কেন পুর-সদস্যেরা তাঁর কথা শোনেন না। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নিতে বলেন। পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে সময়ে কার্যালয়ে না আসা, মিউটেশনের নামে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। পুরপ্রধান আনন্দ দত্তের উত্তরে অভিষেক সন্তুষ্ট হননি বলে দলের একাংশের দাবি। বৈঠকে হাজির এক নেতার কথায়, ‘‘বার্তা মিলেছে, শহরে ফল খারাপ হলে বোর্ড ভেঙে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নিতেও পিছপা হবেন না নেতৃত্ব।’’ কালনার পুর-সদস্যদের নিয়ে ২০ এপ্রিল বর্ধমানে দলীয় কার্যালয়ে একটি বৈঠকের জন্য জেলা সভাপতি এবং প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীকে নির্দেশ দেন অভিষেক।
দল সূত্রের দাবি, দাঁইহাটের প্রাক্তন পুরপ্রধান শিশির মণ্ডল ও তাঁর অনুগামীদের মাঠে নামানোর জন্য জেলা নেতৃত্বকে বলেন অভিষেক। কালনা ১ ব্লকের তিনটি পঞ্চায়েতের দায়িত্ব স্থানীয় নেতা শান্তি চালকে দেওয়ার নির্দেশ দেন। এলাকার নেতৃত্ব জানান, সে ভাবেই কাজ হবে। পূর্বস্থলী উত্তর নিয়ে প্রশ্ন উঠলে বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, ১০ হাজার ভোটে ‘লিড’ হবে।
বৈঠক সূত্রের খবর, মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্যকে ব্লক সভাপতি (মেমারি ১) ও মেমারির পুরপ্রধানের সঙ্গে ‘মনোমালিন্য’ দূর করার নির্দেশ দেন অভিষেক। পরে সভায় বিধায়ক, শহর সভাপতি, ব্লক সভাপতি, পুরপ্রধানদের সঙ্গে বসে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলেন। রায়নার বিধায়ক শম্পা ধাড়াও দ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ তোলেন। রায়না ১ ব্লকে নির্বাচনী কমিটি গঠনের জন্য জেলা নেতৃত্বকে নির্দেশ দেওয়া হয়। সেখানে শম্পার অনুগামীদেরও রাখার কথা বলা হয়। তবে রায়না ২ ব্লকের দায়িত্ব শম্পার হাতেই। জামালপুরের বিধায়ক অলোক মাজি এলাকার দুই নেতার কাজকর্মের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। বিধানসভা ভোট থেকেই পুরনোরা দূরে রয়েছে বলে অলোক দাবি করেন। অভিষেক পুরনোদের ভোটের কাজে নামানোর নির্দেশ দেন।
পরে জেলা সভাপতি বলেন, ‘‘সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কর্মীদের উজ্জীবিত করেছেন। বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের সাত বিধানসভা এলাকার মধ্যে কাটোয়ায় শুধু পিছিয়ে রয়েছি। সেখান থেকে যাতে জয় পাওয়া যায়, তা উনি জানিয়েছেন।’’
বিজেপির এই কেন্দ্রের প্রার্থী অসীম সরকারের কটাক্ষ, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রোজ বৈঠক করলেও এ বার এই কেন্দ্র জিতবে বিজেপি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy