রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। —নিজস্ব চিত্র।
কেমিক্যাল হাব হোক রেল। নন্দীগ্রামে ঘুরেফিরে আলোচনায় আসে সেই জমি। সেই সূত্রে জুড়ে যায় রাজনীতিও। যেমনটা হল বৃহস্পতিবার। রেলবাজেটে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব অভিযোগ করলেন, রাজ্যের সহযোগিতা না মেলায় বহু প্রকল্প আটকে। তুলে আনলেন নন্দীগ্রাম রেল প্রকল্পের প্রসঙ্গও।
এ দিন সাধারণ বাজেটের সঙ্গে পেশ হওয়া রেলের বাজেট নিয়ে ভিডিয়ো কনফারেন্স করেন রেলমন্ত্রী। সেই ভিডিয়ো কনফারেন্সে যোগ দেয় রেলের বিভিন্ন জ়োন ও ডিভিশন। অন্যদের মতোই ছিলেন খড়্গপুর ডিভিশনের আধিকারিকরাও। খড়্গপুর ডিআরএম অফিসের সভাগৃহে জায়ান্ট স্ক্রিনে সম্প্রচারিত বক্তৃতায় এই রাজ্যে রেলের উন্নয়নের নানা খতিয়ান তুলে ধরেন রেলমন্ত্রী। তাঁর মূল সুর ছিল কেন্দ্র চেষ্টা করলেও রাজ্যের ‘অসহযোগিতা’র জন্যই এখানে আটকে আছে একাধিক প্রকল্প। এ ক্ষেত্রে দিল্লি-বালুরঘাটের সঙ্গেই অশ্বিনী উল্লেখ করেন নন্দীগ্রাম রেল প্রকল্পের কথা। তিনি বলেন, “নন্দীগ্রাম রেল স্টেশনকে রেলপথে যুক্ত করতে কত ফলো আপ চলছে। দিল্লি-বালুরঘাটের জন্য কত ফলো আপ চলছে!”
২০০৭ সাল থেকে জমি নিয়ে রক্তপাত শুরু হয় নন্দীগ্রামে। সিঙ্গুরের পরে নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনের মাধ্যমেই বিরোধী নেত্রী হিসেবে স্বীকৃতি আদায় করে নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর ২০০৯ সালে ইউপিএ ২ সরকারের রেলমন্ত্রী হিসেবে মমতা নন্দীগ্রামকে রেলপথে যুক্ত করতে উদ্যোগী হন। পরবর্তী সময়ে রেল বাজেটে ঘোষিত হয় নন্দীগ্রাম-দেশপ্রাণ রেল প্রকল্প। এর জন্য খাতায় কলমে অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ। তা হলে জমি জট কেন? প্রতিশ্রুতি ছিল, জমিদাতা পরিবার পিছু একজনকে চাকরি দেওয়া হবে। অল্প কিছু জমিহারা চাকরি পাননি। তাঁরা জমি ছাড়েননি। দ্বারস্থ হয়েছেন আদালতের। সে মামলা বিচারাধীন। ফলে জমি আটকে প্রকল্প। রেলমন্ত্রীর দাবিকে মান্যতা দিয়ে খড়্গপুরের ডিআরএম কে আর চৌধুরী বলেন, “দেশপ্রাণ থেকে নন্দীগ্রাম প্রায় ৩০কিলোমিটারের বেশি রেলপথ বসানোর ক্ষেত্রে জমি একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে রাজ্যের সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না।”
নন্দীগ্রামকে রেলে জুড়তে আরও প্রকল্প রয়েছে। জমি সঙ্কট সেখানেও। রাজ্যের বিরুদ্ধে তোলা রেলের অসহযোগিতার অভিযোগও পুরনো। এর আগে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব একটি চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। ওই চিঠিতে দাবি করা হয়েছে রাজ্য সরকারের সহযোগিতা ছাড়া কোনভাবেই রেল প্রকল্পগুলি এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এবং চিঠির সঙ্গে নতুন ও পুরাতন রেল প্রকল্পগুলির একটি তালিকা পাঠানো হয়েছে। এ দিন রেলমন্ত্রী ফের বলেছেন, “দুর্ভাগ্যের বিষয় রেলের উন্নয়নে এই রাজ্যের কোনও আগ্রহ নেই। বিভিন্ন থমকে যাওয়া প্রকল্প নিয়ে প্রচুর চিঠি লেখা হয়েছে রাজ্যকে। সাড়া মেলেনি।” যদিও বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে এ দিন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক তনভির আফজল বলেন, “গত পাঁচ মাসে আমি এমন কোনও অভিযোগ শুনিনি বা রেলের পক্ষ থেকেও আমাকে এই বিষয়ে কোনও চিঠি দিয়ে সহযোগিতা চাওয়া হয়নি।”
রেল মানচিত্র নন্দীগ্রামের ঠাঁই না হলেও রাজনৈতিক চাপানউতোরে খামতি নেই। তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান বলেন, ‘‘শুধুমাত্র রাজনৈতিক স্বার্থে প্রচার করা হচ্ছে নন্দীগ্রামের রেল প্রকল্পের কথা।" আর বিজেপি নেতা মেঘনাদ পালের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কেন্দ্র সরকারকে সহযোগিতা করছে না রাজ্য সরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy