Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

ভাঙড়ে রক্তপাতহীন ভোট করাতে জোর প্রস্তুতি, থাকছে সংশয়ও

লালবাজার সূত্রের খবর, আগামী পয়লা জুনের ভোট নির্বিঘ্নে করতে গত জানুয়ারি মাস থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছে ভাঙড় ডিভিশনের আটটি থানা।

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২৪ ০৭:৩৮
Share: Save:

গত বছরের পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজনৈতিক সংঘর্ষ ঘিরে বার বার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়। চলেছিল যথেচ্ছ বোমা-গুলি। মৃত্যু হয়েছিল পাঁচ জনের। ঠিক এক বছর পরে দোরগোড়ায় আরও একটি ভোট। এ বার ভাঙড়ের দায়িত্ব রাজ্য পুলিশের হাত থেকে নিয়ে তুলে দেওয়া হয়েছে লালবাজারের হাতে। এলাকা শান্ত রেখে সেখানে ভোট করানোই এই মুহূর্তে তাই বড় চ্যালেঞ্জ কলকাতা পুলিশের কাছে।

লালবাজার সূত্রের খবর, আগামী পয়লা জুনের ভোট নির্বিঘ্নে করতে গত জানুয়ারি মাস থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছে ভাঙড় ডিভিশনের আটটি থানা। ভোটারদের আস্থা ফেরাতে এক দিকে যেমন জনসংযোগে জোর দেওয়া হয়েছে, অন্য দিকে, দাগি দুষ্কৃতীদের তালিকা তৈরি করে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, ভাঙড় এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে গোলমাল পাকিয়ে এসেছে, এমন দুষ্কৃতীদের বাগে আনতে চলেছে ধরপাকড়ও।

লালবাজারের এক পুলিশকর্তা জানান, এলাকায় কোনও ভাবেই তারা শান্তিভঙ্গ করবে না, এই মর্মে দুষ্কৃতীদের দিয়ে আদালতের কাছে মুচলেকা আদায় করেছে ভাঙড়ের প্রতিটি থানা। এর পাশাপাশি, বুথভিত্তিক দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে তাদের উপরে চলছে কড়া নজরদারি। গোলমালের কোনও খবর পাওয়া মাত্র দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছচ্ছে পুলিশ।

সূত্রের খবর, ভাঙড় ডিভিশনের অধীনে রয়েছে ৪৫০টি বুথ। ভোট গ্রহণ কেন্দ্র আছে ২৪৬টি। এর মধ্যে জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রে বুথ এবং ভোট গ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা যথাক্রমে ১২৪ এবং ৮০। আবার, ভাঙড় ডিভিশনে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের বুথ রয়েছে ২৮৪টি। ভোট গ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা ১৬৬।

পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মূলত তৃণমূল কংগ্রেস এবং আইএসএফের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘিরে বার বার শিরোনামে এসেছিল ভাঙড়ের উত্তর কাশীপুর থানার বিজয়গঞ্জ বাজার-সহ একাধিক এলাকা। এ বারও ভোটের আগে গত কয়েক মাসে শুধু ভাঙড় থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে ৮৬টি বোমা! পতাকা লাগানোকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিনে ছোটখাটো সংঘর্ষও ঘটেছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশকর্মী থেকে শুরু করে ভাঙড়ের সাধারণ মানুষ বলছেন, রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ভাঙড়ে শান্তিপূর্ণ ভোট করানোই দুষ্কর হয়ে দাঁড়াবে।

লালবাজার অবশ্য জানিয়েছে, কোনও হিংসাত্মক রাজনৈতিক কার্যকলাপকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে না। উদাহরণ হিসাবে তারা বলছে, আরাবুল ইসলামের মতো শাসকদলের নেতাকে ভোটের আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে যে দুষ্কৃতীরা গত বছর গোলমাল পাকিয়েছিল, তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। অশান্তিপ্রবণ এলাকায় বসানো হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ পিকেট। এ ছাড়া, এ বার পুলিশের সঙ্গে থাকছে বিপুল সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী।

তবে, লালবাজার এ হেন দাবি করলেও ভোটের দিন এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা কত দূর বজায় রাখা যাবে, তা নিয়ে সন্দিহান পুলিশের নিচুতলার কর্মীরা। কারণ হিসাবে তাঁদের বক্তব্য, ভাঙড়ে বোমা তৈরি কার্যত কুটিরশিল্পের পর্যায়ে পড়ে। আর এই গোলমালের নেপথ্যে হাত থাকে রাজনৈতিক দলগুলির। ফলে নিচুতলার পুলিশকর্মীদের আশঙ্কা, রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে সব আয়োজন বৃথা হতে পারে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy