তৃতীয় বারও ভূমিপুত্রকে জিতিয়েছে কেশপুর। ভোট শেষেও এলাকায় দেবের কাট আউট। কেশপুরের আনন্দপুরে। বুধবার। ছবি: কিংশুক আইচ।
কোথাও ঝুলিতে একটা-দুটো ভোট, কোথাও ‘নোটা’র থেকে পিছিয়ে, কোথাও বা প্রাপ্তি শূন্য।
বিজেপিকে এ ভাবেই ধরাশায়ী করে এ বারও ভূমিপুত্র দেবকে লক্ষাধিক লিড দিয়েছে কেশপুরের বুথগুলি। কোন বুথে কত লিড হল, তা নিয়েই বুধবার সকালে সাহসপুরে তৃণমূল কার্যালয়ে কর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় মশগুল ছিলেন দলের কেশপুর ব্লক সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ বরদোলুই। ভোটের দিন সাহসপুরের অদূরে খেড়ুয়াবালিতে বিজেপি প্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায়কে আটকেছিল তৃণমূলের যে মারমুখী বাহিনী, তার নেতৃত্বে ছিলেন বিশ্বজিৎই। হিরণ কতগুলি বুথে শূন্য পেলেন? বিশ্বজিতের জবাব, “শূন্য পেয়েছে। তবে কোথায় কোথায়, দেখা হয়নি।” পদ্ম-শিবির সূত্রে খবর, কেশপুর বিধানসভার ৩০টিরও বেশি বুথে বিজেপি প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট এক থেকে ন’টি। একাধিক বুথে ঝুলি শূন্য। কেশপুরে মোট ২৮২টি বুথ। ভোটের দিনে শতাধিক বুথে এজেন্টই বসাতে পারেনি বিজেপি।
ভোটের আগেই দেব বলেছিলেন, “আমি এখানকার ভূমিপুত্র। কেশপুরের মানুষের বিশ্বাস আমার প্রতি গত দু’বারই ছিল। আমি নিশ্চিত, এ বারও থাকবে।” নির্বাচনী প্রচারে এসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “২০১৯ সালে আপনারা প্রায় ৯০ হাজারের বেশি ব্যবধানে দেবকে জিতিয়েছিলেন। এ বারে ব্যবধানটা এক লক্ষ করতে হবে।”
‘কথা রেখেছে’ কেশপুর। ঘাটাল লোকসভার অধীন এই বিধানসভা থেকে এ বার দেবের লিড এক লক্ষ তিন হাজার ভোটের। কেশপুরে তৃণমূল পেয়েছে ১,৬২,১৩০ ভোট, সেখানে বিজেপি পেয়েছে ৫৮,৭৭২ ভোট। একদা ‘লালদুর্গে’ বামেদের প্রাপ্তি মাত্র ৭৯৪৭টি ভোট। একটি বুথের ভোটের পরিসংখ্যান বলছে, মোট ভোট পড়েছে ৮৯৭টি। তৃণমূল পেয়েছে ৮৮৭টি, বাম পেয়েছে আটটি, ‘নোটা’য় দু’টি আর বিজেপি শূন্য।
সালটা ২০০১। সে বার বিধানসভা ভোটে কেশপুর থেকে রাজ্যের মধ্যে সব থেকে বেশি ব্যবধানে জয়ী হন সিপিএমের নন্দরানি ডল। প্রায় এক লক্ষ আট হাজার ভোটের। তৎকালীন বিরোধী তৃণমূল প্রশ্ন তুলেছিল, অবাধ ভোটে কি এত ‘লিড’ সম্ভব?
রাজনৈতিক মহল মনে করাচ্ছে, বাম ও তৃণমূল, দুই আমলের ভোটগুলির মধ্যে শুধু গত একুশের বিধানসভায় সবচেয়ে কম ব্যবধানে হার-জিত নির্ধারণ হয়েছিল কেশপুরে। ২১ হাজার ভোটে জিতেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী শিউলি সাহা। দু’বছরের মধ্যেই ছবিটা ঘুরে যায়। বিজেপি প্রার্থী হিরণের অভিযোগ, “কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘুম পাড়িয়ে বিজেপিকে শূন্য পাওয়ানো হয়েছে। যারা গণতন্ত্রকে অপমান করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আমার লড়াই থামবে না।”
১৯৯৮-২০০০ সালে কেশপুরে তৃণমূলের ‘রবিনহুড’ ছিলেন মহম্মদ রফিক। এখন তিনি জেলা পরিষদে তৃণমূলের দলনেতা। রফিক বললেন, “এ বারে আমাদের লক্ষ্যই ছিল এক লক্ষ পার।” দেবের দাবি, “ভালবাসা বেড়েছে, তাই মার্জিন বেড়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy