প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।
ভোট এগিয়ে এলেও রাজ্যে রাজ্যে ঘরোয়া কোন্দল ও শরিকি দ্বন্দ্বে জেরবার কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি। তার ফলে সবার আগে কিছু আসনের প্রার্থী ঘোষণা করে চমক দেওয়ার পরে এ বিষয়ে থমকে গিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। দক্ষিণ ও পশ্চিমাংশের দুই প্রতিবেশী রাজ্য মহারাষ্ট্র ও কর্নাটকে পরিস্থিতি খুবই জটিল আকার নিয়েছে বলে মনে করছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্ব অমান্য করে শিবসেনার একটি বড় অংশ একনাথ শিন্দের নেতৃত্বে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনের পর থেকেই তাদের ভয়ানক চাপে রেখেছেন মোদী-শাহেরা। অজিত পওয়ারের নেতৃত্বে এনসিপি-কে ভাঙিয়ে আনার পরে বিজেপি প্রতি পদেই শিন্দের শিবসেনাকে বুঝিয়ে দিচ্ছে, তাদের অস্তিত্ব বিজেপির হাতেই। লোকসভা নির্বাচনের আগে এই চাপ প্রবল আকার নিয়েছে ৪টি আসনে শিন্দের শিবসেনার জয়ী প্রার্থীদের বদলে বিজেপি তাদের প্রার্থী দেওয়ার কথা বলায়। অথচ, দল ভাগ হওয়ার সময়ে শিন্দের কাছ থেকে আসনের নিশ্চয়তা আদায় করেই উদ্ধবের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে বিজেপিকে সমর্থনে এগিয়ে এসেছিলেন এই ৪ সাংসদ। এখন বিজেপি বলছে— তারা নাকি নিজেদের মতো সমীক্ষা করে দেখেছে, ওই ৪ আসনে শিবসেনার প্রার্থীদের হার অবধারিত। একমাত্র বিজেপি প্রার্থীরাই সেখানে জিততে পারে। শিন্দেরও এই কথা শোনা ছাড়া উপায় নেই, কারণ বিজেপি সমর্থন তুলে নিলে তাঁর সরকার যাবে, হয়তো দলও। আর মুখ্যমন্ত্রী কুর্সির দিকে যে তাঁর নজর রয়েছে, তা নিয়ে লুকোছাপা করছেন না এনসিপি ভেঙে আসা শরদ পওয়ারের ভাইপো অজিত।
এই পরিস্থিতিতে বিজেপির কথামতো জেতা ৪ আসন তাদের ছেড়ে দিতে গিয়ে খুবই বিপদে পড়েছেন একনাথ শিন্দে। আগের বারে জেতা কোনও সাংসদ নিজের স্ত্রী বা ভাইয়ের জন্য পছন্দের অন্য আসন দাবি করে চাপ দিচ্ছেন, কেউ আবার নির্দল হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। বিজেপির সমীক্ষাকে গুরুত্ব না দেওয়ার জন্যও শিন্দেকে পরামর্শ দিচ্ছেন অনেকে।
কর্নাটকে আবার প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী কে এস ঈশ্বরাপ্পা বিদ্রোহী হয়ে ঘুম ছুটিয়েছেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আলোচনার জন্য তাঁকে দিল্লিতে ডেকে পাঠান। ঈশ্বরাপ্পা দিল্লি পৌঁছলে শাহ তাঁকে জানিয়ে দেন, তিনি দেখা করবেন না। ঈশ্বরাপ্পা যেন কর্নাটকে ফিরে যান। ঈশ্বরাপ্পা রাজ্যে ফিরে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে এই আচরণের জন্য শাহকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, পরোক্ষে তিনি লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার নির্দেশই দিলেন। ঈশ্বরাপ্পা বলেন, এর পরে তিনি নির্দল প্রার্থী হিসাবে শিবমোগা থেকে ভোটে জিতে দিল্লি যাবেন। তখন হয়তো কেন্দ্রীয় নেতারা তাঁর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কর্নাটকের বিজেপিকে ইয়েদুরাপ্পা পরিবারের হাতে ছেড়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ প্রাক্তন এই উপমুখ্যমন্ত্রী। শিবমোগায় ঈশ্বরাপ্পার যথেষ্ট প্রভাব থাকায় তাঁর ভোটে লড়ার ঘোষণায় বিপাকে পড়েছেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy