—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
এ বার কোচবিহার লোকসভা আসনে প্রার্থী দেবে ‘গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন’। অবশ্য এই গ্রেটার নগেন্দ্র রায় তথা অনন্ত মহারাজ শিবির বা বংশীবদন বর্মণ গোষ্ঠীর গ্রেটার নয়। বংশীবদনের গোষ্ঠী থেকে বেরিয়ে গিয়েই আলাদা ভাবে কাজ শুরু করে এই গ্রেটার। যার নেতা অমল দাস। তিনি নিজেই এ বার ভোট যুদ্ধে নামছেন। আর তা নিয়েই পড়ে গিয়েছে শোরগোল। পুরনো মিত্র অনন্ত ও বংশীবদনের কাছেও ভোট প্রার্থনাও করবেন অমল। তিনি বলেন, ‘‘আমার লড়াই কোচবিহারের অধিকার নিয়ে। ভারতভুক্তি চুক্তি নিয়ে অনুযায়ী, কোচবিহারের মানুষের অধিকার পাওয়ার লড়াইয়ে লক্ষ্যেই আমি ভোটযুদ্ধে নেমেছি। সে জন্য প্রত্যেকের কাছেই ভোট চাইব।’’ বংশীবদন বর্মণের বক্তব্য, "এই বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। আমরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে প্রার্থী রয়েছেন, তাঁর হয়েই ভোট প্রচার করব।’’ অনন্ত রায় বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ। তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তাঁর ‘অনুগামী’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রেটার নেতা বলেন, ‘‘আমরা ভোটের লড়াইয়ে নেই।’’
গ্রেটার সংগঠনে অনন্ত মহারাজ ও বংশীবদনের গুরুত্ব সব থেকে বেশি বলে ধরা হয়। রাজনৈতিক দলগুলিই মনে করে, রাজবংশী ভোটারদের মধ্যে অনন্ত ও বংশীবদনের প্রভাব বেশি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, এই জন্যই তাঁদের সমর্থন পেতে মরিয়া তৃণমূল ও বিজেপি। বিজেপি সরাসরি অনন্ত মহারাজকে রাজ্যসভার সাংসদ করেছে। তৃণমূল সরকারও বংশীবদনকে রাজবংশী ভাষা অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যান ও রাজবংশী উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিয়েছে। ভোটের মুখে বংশীবদন সরাসরি জানিয়েছেন, তাঁরা তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নামবেন। অনন্ত অবশ্য কিছু বিষয় নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন। বিশেষ করে তিনি দাবি করেছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তাঁকে জানিয়েছেন কোচবিহার কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হবে না। তিনি বিজেপির প্রার্থী নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বিজেপির হয়ে কতটা প্রচার করবেন তা নিয়ে ধোঁয়াশা রেখেছেন।
এই অবস্থায় গ্রেটারের আর একটি গোষ্ঠী সরাসরি ভোটযুদ্ধে নামার কথা ঘোষণা করায় চিন্তিত তৃণমূল ও বিজেপি দুই শিবির। মুখে অবশ্য তা কেউ স্বীকার করছে না। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ বলেন, ‘‘ভোটে যে কেউই লড়তে পারেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নে প্ৰত্যেক মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছেন।" বিজেপির কোচবিহার জেলা সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসুর দাবি, ‘‘মানুষ আমাদের সঙ্গে আছেন। তাই অন্য কোনও প্রার্থীর বিষয়ে ভাবার কিছু নেই।’’
অমল দাবি করেন, তিনি শুরুর দিকে তৃণমূলে ছিলেন। পরে, গ্রেটারে যোগ দেন। অনন্ত ও বংশীবদনের মধ্যে বিবাদে এক সময়ে গ্রেটার ভাগ হয়ে যায়। সে সময়ে তিনি বংশীবদনের সঙ্গে ছিলেন। সংগঠনের আন্দোলনে যুক্ত হয়ে সাত বছর জেল খেটেছেন তিনি। কিছু দিন আগে, বংশীবদনের বিরুদ্ধে একনায়কতন্ত্রের অভিযোগ তুলে আলাদা ভাবে সংগঠনের কাজ শুরু করেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘‘ছোট ছোট বৈঠকের মধ্যে দিয়ে আমাদের ভোট প্রচার চলবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy