মাথায় কালো মেঘ নিয়েই ভোট কেন্দ্রের পথে। শুক্রবার মেদিনীপুরে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
আজ, শনিবার ভোট পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামে। সাগরের বুকে আজই তৈরি হতে পারে ঘূর্ণিঝড় 'রেমাল'। তেমনই পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের। ঝড় সামলে ভোট উতরোতে যাবতীয় প্রস্তুতি সেরেছে দুই জেলার প্রশাসন।
পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সারা হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলার দল প্রস্তুত থাকছে। রাস্তায় গাছ পড়লে, সরাতে বেশি সময় লাগবে না।’’ ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসুও জানাচ্ছেন, ‘‘বিভিন্ন ব্লকে বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থা ৫৮৯টি ডিজি জেনারেটর প্রস্তুত রেখেছে। ফলে, বৈদ্যুতিক সমস্যা হবে না। সব ব্লকে সিভিল ডিফেন্সের টিমও প্রস্তুত। রাস্তায় গাছ ভেঙে পড়লে, ওই টিম দ্রুত সরিয়ে দেবে।’’
কমিশন জানিয়েছে, একশো শতাংশ বুথে ওয়েব কাস্টিং হবে। ঝড়বৃষ্টি হলে সমস্যা হবে না? প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, হবে না। নেটওয়ার্কের ওঠাপড়া যাতে না হয়, সে জন্যও পদক্ষেপ করা হয়েছে।
হাওয়া অফিস জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরের উপর যে ঘূর্ণাবর্ত ছিল, তা শক্তি বৃদ্ধি করে ইতিমধ্যেই নিম্নচাপ অঞ্চলে পরিণত হয়েছে। নিম্নচাপ যদি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়, তা হলে তা আরও উত্তরে অগ্রসর হয়ে রবিবার সন্ধ্যা নাগাদ বাংলাদেশ এবং তৎসংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের কাছাকাছি প্রবল ঘূর্ণিঢঝড় হিসাবে আছড়ে পড়তে পারে। এই আবহে শনিবার দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই মাঝারি বৃষ্টিপাত হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। শনিবার রাত থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়বে।রবিবার ঝড়বৃষ্টির সঙ্গে প্রতি ঘণ্টায় ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার বেগে ঘূর্ণিঝড় হতে পারে। ভারী বৃষ্টি হতে পারে উপকূলবর্তী দুই ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে। যার রেশ থাকবে সোমবারেও।
ভোট প্রস্তুতির ফাঁকে ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতির মোকাবিলায় বৈঠক হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। কোথায় কী ব্যবস্থা রয়েছে, খতিয়ে দেখা হয়েছে। ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনায় বুথে ত্রিপল ও আলোর ব্যবস্থা করছে প্রশাসন। অনেক জায়গায় জেনারেটরের ব্যবস্থাও থাকছে। বিদ্যুৎ দফতরকে বলা হয়েছে আলোর সংযোগ দিতে। গড়বেতা, গোয়ালতোড়, চন্দ্রকোনা রোডের অনেক বুথেই রোদে-জলে ভোটারদের লাইনে দাঁড়াতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেজন্য সামনে ত্রিপলের ছাউনি করে দেওয়া হচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। ব্লক প্রশাসনের অফিসে খোলা হচ্ছে কন্ট্রোল রুম। সেখানে দায়িত্বে থাকছেন আধিকারিক পদমর্যাদার এক অফিসার। এ দিন সন্ধ্যার মধ্যেই বুথগুলিতে ভোটকর্মীরা পৌঁঁছে গিয়েছেন। জেলাতেও কন্ট্রোল রুম থাকছে।
ভোট ঘিরে ঝাড়গ্রাম জেলাতেও সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলায় ২,০১৮টি বুথেই ওয়েব কাস্টিং করা হয়েছে। জেলাশাসক মৌমিতা বলেন, ‘‘বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্ক দিয়ে চেক করা হয়েছে। তাতে কোনও না কোন নেটওয়ার্ক পাওয়া গিয়েছে।’’ এ দিন ভোটকর্মীদের জিনিসপত্র বিতরণের সময় বারবার মাইকে জানানো হয়, ভোটের দিন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্ভাবনা রয়েছে। দুর্যোগের সময় ভোটাররা যেন বাইরে দাঁড়িয়ে না থাকে। ভোটারদের বারন্দায় দাঁড় করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে রেখেছে নির্বাচন কমিশন। এ ছাড়াও পূর্ত দফতরের টিম প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে জেলায় থাকবে এনফোর্সমেন্ট টিম। প্রতিটি ব্লকের বিডিওকে ত্রিপল প্রস্তুত করে রাখতে বলা হয়েছে। যাতে বুথ-সহ যে কোনও কেন্দ্রে ত্রিপল পৌঁছনো যায়। জেলায় খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। জেলাশাসক জানান, যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য কোনও সমস্যা ঘটে তাহলে আধ ঘণ্টার মধ্যে সমাধান করার জন্য সব রকম প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে রোদ থাকলেও দুপুর থেকে আকাশের মেঘ কালো করে আসে। সেই সঙ্গে ঝড় ও সামান্য বৃষ্টিও হয়। ডিসিআরসি-তে ভোট কর্মীদের বারবার অবশ্য মাইকিং করে শেডের তলায় থাকার জন্য সচেতন করা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে ডিসিআরসি রয়েছে ৬টি। এ দিন এই ৬টি কেন্দ্র থেকে ভোটের সামগ্রী নিয়ে বুথে বুথে গিয়েছেন ভোটকর্মীরা। মেদিনীপুর কলেজ চত্বরে যেমন তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রের ডিসিআরসি হয়েছে। মেদিনীপুর, শালবনি এবং গড়বেতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy