নির্বাচনী বন্ড থেকে টাকা পেয়েছে বিজেপি ও তৃণমূল। নিতুড়িয়ায় দেওয়াল লিখনে উল্লেখ সিপিএমের। নিজস্ব চিত্র।
নির্বাচনী বন্ড থেকে সারা দেশে সব থেকে বেশি অনুদান পেয়েছে বিজেপি। তৃতীয় স্থানে রয়েছে তৃণমূল। এ বার নির্বাচনী বন্ডকে হাতিয়ার করে দুর্নীতির প্রশ্নে একই বন্ধনীতে ওই দুই দলকে রেখে সমাজ মাধ্যমে প্রচারে ঝাঁঝ বাড়াতে চাইছে সিপিএম। এ নিয়ে রিল, মিম তৈরি করছেন সিপিএমের সমাজ মাধ্যম ইউনিট।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, অতীতে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে বেকারত্ব, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির মতো বিষয়গুলিই বামেদের প্রচারে ঘুরে ফিরে আসত। এ বার সেই জায়গা অনেকটাই দখল করেছে নির্বাচনী বন্ড।
ঘটনা হল, সিপিএম ওই বন্ড থেকে কোনও অনুদান নেয়নি। তাদের দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নির্বাচনী বন্ড থেকে কোন দল কত অনুদান পেয়েছে সেই তথ্য প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। সিপিএমের মামলার ভিত্তিতেই এই বন্ডের দুর্নীতি সামনে এসেছে বোঝাতে চাইছেন দলের নানা স্তরের নেতা-কর্মীরা।
সিপিএমের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায়ের অবশ্য দাবি, ‘‘লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে অন্য আরও বিষয় আছে। সেই সঙ্গে বিজেপি ও তৃণমূলের দুর্নীতির কথাও উঠছে। সেক্ষেত্রেই এসেছে নির্বাচনী বন্ডের প্রসঙ্গ। দুই দলই দুর্নীতির প্রসঙ্গে একই বন্ধনীতে অবস্থান করছে। এটাই সামনে আনা হচ্ছে।’’
কোন সংস্থা বিজেপিকে বন্ডে কত অনুদান দিয়ে, বিনিময়ে কী সুবিধা পেয়েছে তা সমাজ মাধ্যমে প্রচার করছেন সিপিএমের নেতা-কর্মীরা। সম্প্রতি কয়েকশো ওষুধের দাম বেড়েছে। এর পরেই কোন ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা নির্বাচনী বন্ডে বিজেপিকে কত পরিমাণ টাকা দিয়েছে তারবিশদ তথ্য সমাজ মাধ্যমে তুলে ধরতে শুরু করেছে সিপিএম। এক কথায়, নির্বাচনী বন্ডে দেওয়া টাকাই ঘুরপথে দাম বাড়িয়ে আমজনতার কাছ থেকে ওই সংস্থাগুলি তুলে নিতে চাইছে— এই প্রচারও জোরদার করতে চাইছে বামেরা।এ ছাড়া কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এজেন্সিগুলিকেও নানা সংস্থার বিরুদ্ধে কাজে লাগিয়ে চাপ দিয়ে নির্বাচনী বন্ডের টাকা আদায় করেছে বিজেপি, এই প্রচারও করছে বামেরা।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, অন্য দলগুলির থেকে বামেরা যে পৃথক।নির্বাচনের আবহে সেটা আরও বেশি মাত্রায় জনসমক্ষে আনতেই এই কৌশল নিয়েছে তারা।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায় বলেন, ‘‘একটা রাজ্যে ক্ষমতায় থেকেই নির্বাচনী বন্ড থেকে প্রচুর পরিমাণে টাকা পেয়েছে তৃণমূল! অথচ কেরলে বামেরা ক্ষমতায় থাকলেও কানাকড়ি নির্বাচনী বন্ড থেকে নেয়নি সিপিএম। আমরা এখনও সাধারণ মানুষজনের কাছ থেকে সংগ্রহ করা অর্থেই নির্বাচনের খরচ জোগাড় করি।এটাই অন্য দলগুলির সঙ্গে আমাদের তফাত গড়ে দিয়েছে। গৌরবের এই বিষয়টাই প্রচারে স্বভাবতই সামনে আনছেন দলের নেতা-কর্মীরা।’’
জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার দাবি, ‘‘নির্বাচনী বন্ড থেকে দুর্নীতি করেছে একমাত্র বিজেপি। কয়েক হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। বিনিময়েসরকারি সুবিধা পাইয়ে দিয়েছে নানা বেসরকারি সংস্থাকে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে বেসরকারি সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কোনও অভিযোগ নেই।’’ সিপিএমের প্রতি তাঁর কটাক্ষ, যে দলটা সাড়ে তিন দশক ধরে দুর্নীতিতে ডুবে ছিল, তাদের মুখে এ নিয়ে অভিযোগ মানায় না।
বিজেপির রাজ্য নেতা বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীও বলেন, ‘‘যে দলটাকে জনগণ লোকসভা ও বিধানসভা দুই নির্বাচনেই শূন্যে পোঁছে দিয়েছে, তাদের প্রচারের কি মূল্য আছে? চাইলেওরা নির্বাচনী বন্ড নিয়ে আবার আদালতে যাক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy