—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মুখে যা-ই দাবি করা হোক, লোকসভা নির্বাচনে ২০০৪-এর ফলের পুনরাবৃত্তির আশা করছে না কংগ্রেস। ২০০৪-এর লোকসভা ভোটে কংগ্রেস ১৪৫টি আসন জিতেছিল। সেবার অটলবিহারী বাজপেয়ীর এনডিএ সরকারকে হঠিয়ে কংগ্রেসের নেতৃত্বে ইউপিএ সরকার গঠন হয়। কংগ্রেস শিবির মনে করছে, এ বারের নির্বাচনে কংগ্রেস শ’খানেক আসন জিততে পারে। অন্তত ৮৫টি আসনে কংগ্রেসের জয় নিশ্চিত। কংগ্রেসের আসনের সংখ্যা যদি ১২০টি-তে চলে যেতে পারে, তা হলেই কংগ্রেস কেন্দ্রে ইন্ডিয়া জোটের সরকার গড়ার জন্য ঝাঁপাতে পারবে। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভের যে চোরাস্রোত রয়েছে, তা ভোটের বাক্সে উঠে এসে বিজেপির আসন সংখ্যা ২৩০-এর নীচে চলে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে এনডিএ-র শরিক দলগুলির সমর্থনেও বিজেপি লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ২৭২টি আসনে পৌঁছতে পারবে না।
সপ্তম ও শেষ দফার ভোটগ্রহণের প্রচারের মেয়াদ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় শেষ হয়ে গিয়েছে। একই সঙ্গে এ বারের লোকসভা নির্বাচনের প্রচার পর্বেও ইতি পড়েছে। আজ কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে দাবি করেছেন, “আগামী ৪ জুন দেশের জনতা বিকল্প সরকার গঠনের পক্ষে রায় দেবে বলে আমাদের বিশ্বাস। ইন্ডিয়া জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার তৈরি করবে। আমরা সবাই মিলে প্রথম ও দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের মতো সকলের উন্নয়নের জন্য, জাতীয়তাবাদী, উন্নয়নমুখী সরকার তৈরি করব।” রাহুল গান্ধীও রাতে এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, শেষ দফার নির্বাচনের প্রচার শেষ হওয়ার পরে তিনি নিশ্চিত যে সরকার পরিবর্তন হচ্ছে। ‘ইন্ডিয়া’ জয়ের পথে। বিজেপির বিরুদ্ধে যে সব কর্মীরা পথে নেমে প্রচার করেছেন, তাঁদের ধন্যবাদও জানান রাহুল।
কংগ্রেস কত আসন পাবে, তা নিয়ে খড়্গে কোনও ভবিষ্যদ্বাণীতে যেতে না চাইলেও, কংগ্রেসের সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল দাবি করেছেন, “ইন্ডিয়া জোট ৩০০ আসন জিততে চলেছে।” ২০০৪-এ ১৪৫টি আসন জিতেই কংগ্রেস ইউপিএ সরকারে নেতৃত্ব দিয়েছিল। ২০০৯-এ কংগ্রেসের আসন সংখ্যা বেড়ে ২০৬-এ পৌঁছে যায়। কিন্তু ২০১৪-য় ১৬২টি আসন কমে কংগ্রেসের লোকসভার সাংসদ সংখ্যা ৪৪-এ নেমে আসে। ২০১৯-এ তা সামান্য বেড়ে ৫২ হয়েছিল।
মল্লিকার্জুন খড়্গের মতে, মোদী সরকার ফের ক্ষমতায় এলে সংবিধান বদলে দিতে পারে, দেশের গণতন্ত্র শেষ করে দিতে পারে বলে মানুষ বুঝতে পেরেছেন। তাই এই ভোটে দেশের নাগরিকরা জাতি, ধর্ম, অঞ্চল, লিঙ্গ, ভাষার ভেদাভেদ ভুলে গণতন্ত্র ও সংবিধান বাঁচাতে এককাট্টা হয়েছেন। এই কারণেই অষ্টাদশ লোকসভার নির্বাচন সবাই মনে রাখবেন। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা বার বার মানুষের সমস্যা থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করলেও মানুষ আসল প্রশ্নেই ভোট দিয়েছেন। খড়্গে বলেন, “গত ১৫ দিনে মোদী তাঁর বক্তৃতায় ২৩২ বার কংগ্রেসের নাম করেছেন। ৫৭৩ বার ইন্ডিয়া জোট ও বিরোধী দলের সমালোচনা করেছেন। কিন্তু এক বারও মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্ব নিয়ে কথা বলেননি।”
এ বার লোকসভা ভোটের প্রচারে নরেন্দ্র মোদী ২০০-র বেশি জনসভা, রোড-শো করেছেন। তার মোকাবিলায় কংগ্রেসের হিসেব অনুযায়ী, বিজেপির মোকাবিলায় রাহুল গান্ধী ১০৭টি জনসভা, রোড-শো, আলাপচারিতা, প্রচার অনুষ্ঠান করেছেন। প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা ৫৫ দিনে ১০৮টি জনসভা ও রোড-শো করেছেন। প্রিয়ঙ্কা প্রচারে ১৬টি রাজ্য ও ১টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে গিয়েছেন। কংগ্রেস সভাপতির দাবি, নরেন্দ্র মোদীকে এ বারের ভোট প্রচারে কংগ্রেসের যাবতীয় অভিযোগের জবাব দিতে হয়েছে। তিনি কংগ্রেসের ইস্তাহার নিয়ে মিথ্যা প্রচার করেছেন। কংগ্রেসকে বার বার দোষারোপ করেছেন।
অমিত শাহ বার বার লোকসভা ভোটের প্রচারে প্রশ্ন তুলেছিলেন, ইন্ডিয়া জোটের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী কে? অমিত শাহ কটাক্ষ করেছিলেন, ইন্ডিয়া জোট সরকারে এলে পাঁচ বছরে পাঁচ জন প্রধানমন্ত্রী হবেন। আজ খড়্গেকে প্রশ্ন করা হয়েছে, ইন্ডিয়া জোট সত্যিই সরকারে এলে প্রধানমন্ত্রী বাছাই করা কতটা কঠিন হবে? খড়্গে বলেন, সকলের সঙ্গে আলোচনা করে জোট শরিকরা যা বলবেন, তার ভিত্তিতেই প্রধানমন্ত্রী ঠিক হবে। অতীতেও যখন ইউপিএ সরকার গঠন হয়েছিল, তখন সনিয়া গান্ধীকে সবাই প্রধানমন্ত্রী হতে বলেছিলেন। কিন্তু তিনি মনমোহন সিংহকে প্রধানমন্ত্রী করেছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy