মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। —ফাইল চিত্র ।
সামগ্রিক ভোটার হারের তথ্য দিতে এত দেরি কেন করছিল কমিশন? উত্তরে রাজীব বলেন, ‘‘সাত দফার তথ্য কেন এখনও দেওয়া হয়নি কেন, এই প্রশ্নের উত্তর এখনও দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কারণ সোমবার পুর্নর্নিবাচন হচ্ছে কয়েকটি বুথে। প্রথমে তথ্য আসার পর তা খতিয়ে দেখা হয়। প্রথমে দিনে ভোটিং মেশিন সংরক্ষিত করা হয়। পরের দিন ভোটদানের হার খতিয়ে দেখা হয়। তার পরের দিন দেখা হয় পুর্নর্নিবাচন হবে কি না। চতুর্থ দিনে তথ্য প্রকাশিত হয়। অনেকগুলি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। প্রতি দফাতেই ভোট হওয়ার চতুর্থ দিনে তথ্য দেওয়া হয়েছে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘নির্বাচনের সময় যে ত্রুটিপূর্ণ ভোটার তালিকা এবং ভোটদানের হার সংক্রান্ত ভুয়ো বিবরণ দেওয়া হয়েছিল তা আমরা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছি। কিন্তু আমরা এখন তা বুঝতে পেরেছি।’’
পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে কী ভাবছে কমিশন? উত্তরে রাজীব কুমার বলেন, ‘‘আমরা আশাবাদী এবং আত্মবিশ্বাসী যে, সে ভাবে হিংসা হবে না। তবে যদি হয়, তা মাথায় রেখে কয়েকটি রাজ্যে সিআরপিএফ থাকবে। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গও রয়েছে। আমরা নিশ্চিত যে রাজ্য সরকার এবং সিআরপিএফ ভোট পরবর্তী হিংসা হতে দেবে না।’’
গুজরাতের সুরাতে এক জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন। নোটা থাকা সত্ত্বেও তাঁকে জয়ী ঘোষণা করা কি আদালতের নির্দেশ অমান্য নয়? উত্তরে রাজীব বলেন, ‘‘সব জায়গাতেই ভোট হওয়া উচিত। কিন্তু প্রার্থীরা যদি স্বেচ্ছায় নিজেদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন, তা হলে আমাদের কী করার আছে?’’
পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘‘আমরা খুব শীঘ্রই জম্মু এবং কাশ্মীরে বিধানসভা ভোটের প্রক্রিয়া শুরু করব। আমরা জম্মু ও কাশ্মীরে ভোটারদের ভোটদানের হার দেখে খুব উৎসাহী।’’
রাজীব বলেন, ‘‘ভোটগণনা খুবই বলিষ্ঠ একটি প্রক্রিয়া। দেশে মোট সাড়ে ১০ লক্ষ বুথ রয়েছে। ৩০-৩৫ লক্ষ পোলিং এজেন্ট থাকবেন বাইরে। এ ছাড়াও নজরদারি দল থাকবেন। গণনা অফিসারেরা থাকবেন। কোনও ভুল হতেই পারে না। সিসি ক্যামেরা থাকবে। মানুষের ভুল হতেই পারে। কিন্তু ভোটগণনায় কারচুপির কোনও সম্ভাবনা নেই। বিভিন্ন দল ভোটগণনা নিয়ে যে দাবি করেছিলেন, সব মেনে নেওয়া হয়েছে।’’
রাজীব কুমার বলেন, ‘‘আমরা ভুয়ো খবর নিয়ে খুব চিন্তায় ছিলাম। এ বার সে রকম ভাবে কিছু হয়নি। কৃত্রিম মেধা দিয়ে ভুয়ো ছবি-ভিডিয়োও সে ভাবে ছড়ায়নি।’’
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘‘নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের কথায় আসা যাক। যে সব অভিযোগ পেয়েছিলাম, তার ৯০ শতাংশের বেশি আমরা খতিয়ে দেখেছি। অনেক বড় নেতাদের নোটিস দেওয়া হয়েছে। অ্যাম্বুল্যান্স এবং গাড়ি করে টাকা যাচ্ছে— এমন দৃশ্য এ বার দেখা যায়নি। নির্বাচন শুরু হতেই অনেক হোর্ডিং সরানো হয়েছে। নেতাদের পরিজনদের ভোটের দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে। সমস্ত বিতর্কিত টুইট সরানো হয়েছে। মানুষ এগিয়ে এসে ভোট দিয়েছেন।’’
রাজীব বলেন, ‘‘আগে ভোটের সময় কী রকম টাকা, শাড়ি, মদ বিলি হত আপনারা জানেন। এ বার তা রুখে দেওয়া গিয়েছে। আড়াই বছরের চেষ্টাতেই তা সম্ভব হয়েছে। আমরা জানতাম আমরা এটা হতে দেব না। ১০ হাজার কোটির জিনিসপত্র বাজেেয়াপ্ত হয়েছে। ৪৩৯১ কোটি টাকার মাদক বাজেয়াপ্ত হয়েছে।’’
২৩টি দেশ থেকে ৭৫ জন এসে ভারতের অনেক বুথে ঘুরে দেখে গিয়েছেন। জানালেন রাজীব কুমার। তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা কী রকম হিংসা দেখতাম আপনাদের মনে আছে। কিন্তু এ বছর সে রকম কোনও ঘটনা ঘটেনি। ঝাড়খণ্ড, মণিপুর, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ, কাশ্মীর-সহ সারা দেশে সে রকম কোনও হিংসার ঘটনা ঘটেনি।’’
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘‘অনেক সংস্থা আমাদের সঙ্গে কাজ করেছে। আমাদের সাহায্য করেছে। অনেকে নিজে থেকে এগিয়ে এসেছে। আইপিএল ম্যাচের সময় স্টেডিয়ামেও ভোট নিয়ে সচেতনতা বার্তা দেওয়া হয়েছে।’’
জম্মু এবং কাশ্মীরের নির্বাচন নিয়ে প্রশংসা করে রাজীব বলেন, ‘‘জম্মু এবং কাশ্মীরের পরিযায়ীদের জন্য নতুন করে নিয়ম তৈরি হয়েছে যাতে তাঁরা ভোট দিতে পারেন। ৫৮.৫৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। ২৬টি বিশেষ পোলিং স্টেশন ছিল। মণিপুরের ১০ জেলায় ৯৪টি বিশেষ পোলিং স্টেশন তৈরি করা হয়েছিল। একটিও হিংসার ঘটনা ঘটেনি। আন্দামানে আদিবাসীরা ভোট দিয়েছেন। নিকোবারের শোম্বেন সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষেরা প্রথম ভোট দিয়েছেন।’’
রাজীব বলেন, ‘‘এ বছর বেশি পুর্নর্নিবাচন হয়নি। ৩৯টি পুর্নর্নিবাচন হয়েছে মাত্র। এর মধ্যে ২৫টি অরুণাচল এবং মণিপুরে হয়েছে। ১৪ পুর্নর্নিবাচন বাকি দেশে হয়েছে।’’
রাজীব বলেন, ‘‘এমন কোনও জায়গা নেই যেখানে ভোটকর্মীরা যান না। তবে এঁদের প্রশংসা কেউ করেন না। তবে এঁদের নিয়ে ভুয়ো প্রচার হলে ওঁদেরও খারাপ লাগে। ভোটকর্মীদের অনেক অভিনন্দন।’’
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব বলেন, ‘‘১.৫ কোটি পোলিং এবং নিরাপত্তাকর্মী কাজ করেছেন নির্বাচনে। এঁদের ছাড়া নির্বাচন সম্ভব হত না। এঁরা নেপথ্য নায়ক। নির্বাচনে ১৩৫টি বিশেষ ট্রেন চালানো হয়েছে। নজরদারি দল ছিল ৬৮ হাজারের বেশি। ১,৬৯২টি কপ্টার ব্যবহার হয়েছে।’’
রাজীব কুমার বলেন, ‘‘সকল ভোটারের মধ্যে ৩১.২০কোটির বেশি মহিলা ভোট দিয়েছেন। দেশের মহিলাদের জন্য গর্বিত। ৮৫ বছর এবং বিশেষ ভাবে সক্ষম ভোটারদের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। ৮৫ বছরের বেশি বয়সিদের প্রতি শ্রদ্ধা। তাঁরা স্বাধীনতা দেখেছেন।’’
বৈঠক শুরু করল নির্বাচন কমিশন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার বলেন, ‘‘আমরা চলে এসেছি। আমরা ‘লাপাতা জেন্টলম্যান’ নই। আমরা সব সময়ই ছিলাম। ভোট ভাল হয়েছে। আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। আমরা ওয়ার্ল্ড রেকর্ড তৈরি করেছি। ৬৪.২০ কোটি মানুষ ভোট দিয়েছেন। জি৭ দেশগুলির মধ্যে সর্বোচ্চ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy