সাংবাদিক বৈঠকে সুকান্ত মজুমদার। —নিজস্ব চিত্র।
বাংলায় দল এখনও ‘সাবালক’ হয়নি, কার্যত স্বীকার করে নিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আর তাই দলে কিছু বিক্ষোভ, গোঁজ প্রার্থীর সমস্যা রয়ে গিয়েছে বলে তাঁর মত। তবে সুকান্তের দাবি, লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপি ভাল ফল করবে। তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে রাজ্যে একটি আসনও বিজেপি বেশি পেলে বিধানসভা নির্বাচন এগোবে।
লোকসভা নির্বাচন উপলক্ষে সোমবার কলকাতা প্রেস ক্লাব আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সুকান্ত গোঁজ প্রার্থী, দলের পদাধিকারীদের পদত্যাগ ও গোষ্ঠী-‘কোন্দল’ নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “দল বেড়েছে। এই রকম হতেই পারে। বয়ঃসন্ধি কালে কিছু সমস্যা হয়। আমাদের বাড়িতেও তো হয়। দল যখন সাবালক হয়ে যাবে, তখন সব মসৃণ চলবে।” সেই সঙ্গে দার্জিলিঙে নির্দল প্রার্থী হওয়ার পরেও দলীয় বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার প্রসঙ্গে সুকান্ত বলেছেন, “শাস্তি দিলে গুরুত্ব পেতেন। উনি লড়ুন না। কত ভোট পান দেখি। যত দিন বিধায়ক আছেন, থাকুন। পরের নির্বাচনে উনি টিকিট পাবেন না।”
সম্প্রতি আনন্দবাজার পত্রিকাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, “অমরা নির্বাচিত সরকারকে ভেঙে দেওয়ার পক্ষপাতী নই। কিন্তু তৃণমূল যদি ভেঙে যায় আমরা কী করতে পারি?” যদিও সুকান্ত থেকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী— রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব বার বার দাবি করেছেন, লোকসভায় বাংলায় বিজেপি ভাল ফল করলে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বিধানসভা ভোট হয়ে যাবে। সুকান্ত এ দিনও বলেছেন, “লোকসভা ভোটে তৃণমূলের চেয়ে বিজেপি যদি একটিও আসন বেশি পায়, তা হলে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বিধানসভা নির্বাচন হয়ে যাবে।” এই সূত্রে মহারাষ্ট্রের উদাহরণও টেনে এনেছেন সুকান্ত। তাঁর বক্তব্য, “বিজেপি নির্বাচিত সরকার ভাঙার পক্ষপাতী নয়। কিন্তু তৃণমূল যদি ভেঙে যায় আমরা কী করব? পিসি-ভাইপোর যদি ঝগড়া হয়, সরকার পড়ে যায়, সেই দায় কি আমাদের? মহারাষ্ট্রে কাকা-ভাইপো লড়াই করলে, তার দায় আমাদের? বিজেপি কোথাও কিছু করে না। শুধু শূন্যস্থান পূরণ করে।” প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার পুরশুরায় বিরোধী দলনেতা বলেছিলেন, “২০২৬-এর গল্প নেই। কয়েক মাসের মধ্যে ভোট করাব।” তাঁর গলায় প্রায় একই কথা সোমবারেও শোনা গিয়েছে।
যদিও পাল্টা তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেছেন, “এই রাজ্যে বিজেপির আসন দুই সংখ্যা ছুঁতে পারবে না। এটা বুঝেই বিজেপি নেতারা হুমকি দিয়ে ডুবন্ত নৌকা ভাসিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। বসে যাওয়া কর্মীদের রাস্তায় নামাতে চাইছেন।”
সুকান্ত এ দিন সিপিএমকেও আক্রমণ করেছেন। শিক্ষা-দুর্নীতি, রাজনৈতিক সন্ত্রাস, রাজ্যের বেহাল-শিল্পচিত্র প্রসঙ্গে বাম আমলকেও সমান ভাবে দায়ী করেন। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন ওঠে, তা হলে কি লোকসভা নির্বাচনে সিপিএমকে তাঁরা গুরুত্ব দিচ্ছেন? সুকান্তের উত্তর, “ভোট রাজনীতিতে সিপিএমের কোনও গুরুত্ব নেই। তৃণমূলের সঙ্গে আমরা লড়াই করছি। রাজনৈতিক লড়াই। কিন্তু আমাদের মতাদর্শগত বিরোধ সিপিএমের সঙ্গে। তাই সিপিএমকে আমরা মূল শত্রু বলি।” এই প্রসঙ্গে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, “সুকান্ত আরএসএসের কথাই বলেছেন। তৃণমূলের সঙ্গে ওদের লড়াই-লড়াই খেলা। কিন্তু ওরা ভয় পায় কমিউনিস্টদের। কারণ, ওঁরা দেশের সর্বনাশ করতে চান। আমরা দেশকে বাঁচাতে চাই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy