Advertisement
Back to
Dilip Ghosh

নতুন কেন্দ্রের প্রচার থামিয়ে রেখে দ্বীপ-আসনে যাচ্ছেন দিলীপ, পুরনো কর্মক্ষেত্রে ‘বন্ধু’র টানে দিনখানেক

বাংলার বিজেপি নেতাদের অনেককেই অন্য রাজ্যে প্রচারে যেতে হবে। ইতিমধ্যেই ত্রিপুরার তারকা প্রচারকের তালিকায় নাম রয়েছে বাংলার চার জনের। তবে সে তালিকায় নাম নেই রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের।

BJP leader Dilip Ghosh will join campaign for parties candidate of Andaman & Nicobar Islands

দিলীপ ঘোষ। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

পিনাকপাণি ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:৪২
Share: Save:

মেদিনীপুরে চেনা মাটি নয়। নতুন আসনে প্রার্থী হওয়া দিলীপ ঘোষের কাছে বর্ধমান-দুর্গাপুরের জমি তৈরি করাই এখন বড় কাজ। রাজ্য সভাপতি থাকার সময়ে বর্ধমান-দুর্গাপুরে গেলেও পরবর্তী সময়ে দূরত্বই ছিল। এখনও প্রচার শুরু করেননি। প্রতি দিন জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। পুরনোদের সঙ্গে নতুন বিজেপি নেতা-কর্মীদের পরিচয় পর্ব চলছে। এমন সময়েই আচমকা দু’দিনের ছুটি নিচ্ছেন দিলীপ। তিনি যাবেন আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে। সেখানে প্রার্থী হয়েছেন তাঁর দীর্ঘ দিনের বন্ধু। সেখানে ভোট একেবারে প্রথম দফায়। দিলীপের ভোটের অবশ্য এখনও দেরি আছে। চতুর্থ দফায় ১৩ মে। ফলে এখন বন্ধুর হয়ে প্রচারে চললেন দিলীপ।

বিজেপির জন্য আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ আসনটি গুরুত্বপূর্ণ। আগে বিজেপি ওই আসনে জয় পেলেও এখন তা হাতছাড়া। পাশাপাশি ওই আসনে প্রথম জয়ের সঙ্গেও দিলীপের যোগসূত্র রয়েছে। সুনামি-পরবর্তী আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের পুনর্গঠনের কাজে একটা বড় সময় সেখানে কাটিয়েছেন দিলীপ। আরএসএসের প্রচারক হিসাবে দায়িত্ব পেয়ে ১৯৯৯ সালের অগস্ট মাসে গিয়েছিলেন দ্বীপরাজ্যে। তার কয়েক মাস পরেই ছিল লোকসভা নির্বাচন। সরাসরি প্রচারে না নামলেও আড়াল থেকে সংগঠনের কাজ দেখেছিলেন দিলীপ। টানা সাত বারের কংগ্রেস সাংসদ মনোরঞ্জন ভক্তকে হারিয়ে জিতেছিলেন বিজেপির বিষ্ণুপদ রায়। ব্যবধান ছিল প্রায় ১৪ হাজার ভোটের। যা ওই আসনের ক্ষেত্রে বড় ব্যবধানে জয়। কারণ, এমনিতে লাখ দেড়েক ভোট পড়ে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ আসনে। ২০১৯ সালে সেটা দু’লাখ পার করেছিল।

সেই থেকেই বিষ্ণুপদের সঙ্গে দিলীপের ঘনিষ্ঠতা আর বন্ধুত্ব। ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ওই আসন ফের হাতছাড়া হয় বিজেপির। ফের সাংসদ হন কংগ্রেসের মনোরঞ্জন। কিন্তু ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে আবার জেতেন বিজেপির বিষ্ণুপদ। কিন্তু তার পরে ২০১৯ সালে বিজেপি প্রার্থী করেনি বিষ্ণুপদকে। সে বার দেশের অনেক রাজ্যে ‘মোদী-সুনামি’ দেখা গেলেও বাস্তবের সুনামি-আক্রান্ত আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বিজেপি হেরে যায়। বিশাল জলি হেরে যান কংগ্রেসের কুলদীপ রাই শর্মার কাছে।

এ বার আসন ফেরানোর লক্ষ্যে আবার বিষ্ণুপদের উপরেই ভরসা রেখেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তিনি প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমাও দিয়ে দিয়েছেন। আর বন্ধুর হয়ে প্রচারে শনিবার সকালে দ্বীপরাজ্যে চলে যাচ্ছেন দিলীপ। ফিরতে পারেন পরের দিন। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, দিলীপের যাওয়ার ইচ্ছা তো ছিলই, সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও চান ঘোষ এক বার ঘুরে আসুন তাঁর পুরনো কর্মক্ষেত্রে। আপাতত ঠিক হয়েছে শনিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দিলীপের রোড শো চলবে। তিনটি জনসভায় বক্তৃতাও করবেন দিলীপ। বুধবার তাঁর সফর সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে দিলীপ আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘বিষ্ণুপদ আমার পুরনো বন্ধু। তিন বার জিতেছেন। প্রথম বার তো আমি সঙ্গেই ছিলাম।’’ গত ভোটে বিজেপি হেরে গেলেও ওই আসনে এ বার জয় নিশ্চিত বলেই মনে করেন দিলীপ। তিনি বলেন, ‘‘গত নির্বাচনে আমরা খুব কম ভোটে হেরেছিলাম। দেড় হাজারেরও কম। এ বার বড় জয় পাবেন বিষ্ণুপদ।’’

ওই আসন জেতা বিজেপির পক্ষে কেন জরুরি, তার ব্যাখ্যায় দিলীপ বলেন, ‘‘দেশের সুরক্ষার জন্য বঙ্গোপসাগর আর আরবসাগরের মাঝে থাকা ছোট ছোট দ্বীপগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রহিতেই বিজেপির হাতে থাকা উচিত ওই আসন। সেখানকার মানুষও সেটা বোঝেন। তাঁরা জানেন, সুরক্ষা দিতে পারবেন শুধু নরেন্দ্র মোদী।’’ প্রসঙ্গত, ৫৭২টি ছোট-বড় দ্বীপ নিয়ে ওই লোকসভা আসন। জল আর জঙ্গলের ওই আসনে অনেক বাঙালি থাকেন। সেই সঙ্গে হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মালয়ালম ভাষাভাষী লোকের বাস। দীর্ঘ সময় খড়্গপুরের বাসিন্দা হওয়ার দৌলতে দিলীপ এর অনেকগুলি ভাষা রপ্ত করেছেন।

একা দিলীপ নন, এই রাজ্যের অনেক বিজেপি নেতাকেই অন্য রাজ্যে প্রচারে যেতে হবে। যেমন বাঙালি প্রধান ত্রিপুরায় তারকা প্রচারকের তালিকায় রাজ্যের চার নেতার নাম রয়েছে। প্রচারে যেতে পারেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, দার্জিলিঙের সাংসদ ও প্রার্থী রাজু বিস্তা। অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী এবং মেদিনীপুরের প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পালের নাম রয়েছে। তবে ওই তালিকায় নাম নেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের। তবে তার কারণও রয়েছে। ত্রিপুরার দু’টি আসনের ভোট প্রথম দু’দফায়। প্রতিটি দফায় একটি করে আসনে ভোট। আর সুকান্তের আসন বালুরঘাটে ভোট দ্বিতীয় দফায়। সুকান্ত আগে থেকেই দলকে জানিয়ে রেখেছেন নিজের আসনে ভোট শেষ হওয়ার পরেই তিনি অন্যত্র সফর শুরু করতে পারবেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy