দলীয় কর্মিসভায় বিপ্লব মিত্র। — নিজস্ব চিত্র।
বঙ্গ বিজেপির সভাপতিকে হারানোর চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন তিনি। লড়াই কঠিন, কিন্তু তিনিও বহু যুদ্ধের পোড়খাওয়া নেতা। ‘কঠিনতর’ লড়াই জিততে এ বার নরমে-গরমে অবস্থান নিলেন বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা বিপ্লব মিত্র। কর্মিসভায় স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, যে এলাকা থেকে ‘লিড’ কম পাবেন, সেখানকার পদাধিকারীদের পদ যাবে। আর এ কথা বলতে বিপ্লব হাতিয়ার করলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ‘সেনাপতি’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। পাশাপাশি, কর্মীদের জানিয়ে দিলেন, আজ তিনি যা হয়েছেন, তার পিছনে অবদান কর্মীদেরই। তিনি কেবল নিমিত্তমাত্র
জনসভা হোক বা ‘ক্লোসড্ ডোর মিট’— সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়ম করে বলে আসছেন, দলীয় প্রার্থীকে জেতাতে কোমর বেঁধে ঝাঁপাতে হবে প্রতিটি কর্মীকে। যে এলাকার নেতৃত্ব লিড দিতে পারবেন না, তাঁদের ভূমিকার মূল্যায়ন করবে দল। এ বার কার্যত একই কথার প্রতিধ্বনি শোনা গেল বালুরঘাটের বিপ্লবের মুখে। তবে, বিপ্লব নিজের সেই বক্তব্যে বার বার মমতা এবং অভিষেকের নাম করেছেন এবং জানিয়েছেন, মমতা, অভিষেকই তাঁকে এ কথা ঘোষণা করতে বলে দিয়েছেন। বালুরঘাটের অন্তর্গত বংশীহারির সুকান্ত ভবনে শনিবার ছিল বিপ্লবের কর্মিসভা। সেই সভায় দাঁড়িয়েই তিনি বলেন, ‘‘শুনে রাখুন, আমাদের মূল সেনাপতি এখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তিনি বলে গিয়েছেন। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আমাকে বলে দিলেন, যে প্রধানের এলাকায় ভোট কম হবে, তার পরের দিন সেখানকার প্রধানকে পদত্যাগ করে সরে যেতে হবে। যে পঞ্চায়েত সমিতিতে আমরা কম ভোট পাব, সেই সমিতির সভাপতিকে পরের দিন পদত্যাগ করতে হবে। আর যদি পদত্যাগ না করেন, তাহলে সরকারি ক্ষমতা প্রয়োগ করে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হবে। এটাই পার্টির সিদ্ধান্ত।’’
বিপ্লবের আরও দাবি, বিজেপি বালুরঘাট আসনটি জিততে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। তৃণমূলের কর্মীদের টাকা দিয়ে কিনে নেওয়া হচ্ছে বলেও প্রশাসন এবং কর্মীদের কাছ থেকে খবর পাচ্ছেন বলেও দাবি করেছেন। বিপ্লব বলেন, ‘‘আপনারা জানেন, ওরা কত টাকা খরচ করছে? আমি এখানে না দাঁড়ালে ওরা ওয়াকওভার পেত। আমাকে হারানোর জন্য ওদের প্রচুর কৌশল নিতে হচ্ছে, জলের মতো টাকা খরচ করতে হচ্ছে। যেটা দেখা যাচ্ছে যে, যেখানে ১ কোটি টাকা খরচ করলেই হত, সেখানে ৩৫ কোটি-৩৭ কোটি টাকা খরচ করতে হচ্ছে ওদের। আমাদের কিছু নেতা, কর্মী বিক্রি হয়ে যাচ্ছেন। প্রশাসনের কাছ থেকে, দলের কর্মীদের কাছ থেকে সব খবর পাচ্ছি। কত টাকায় তাঁরা নিজেদের বিক্রি করলেন বিজেপির কাছে, আমাদের কাছে সমস্ত খবরই আছে। আমি আপনাদের বলি, এই সিটে আমাকে হারানোর ক্ষমতা বিজেপির নেই।’’
প্রত্যাশিত ভাবেই বিপ্লবের মন্তব্যের সমালোচনা এসেছে বিজেপির তরফ থেকে। ওই কেন্দ্রেরই প্রার্থী সুকান্ত মজুমদার শনিবার গঙ্গারামপুরের একটি সভায় বলেন, ‘‘ভয় দেখিয়ে ভোটে জিততে চাইছেন বিপ্লব মিত্র। কাউকে লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ করে দেওয়ার ভয় দেখাচ্ছেন, কাউকে পথ থেকে সরিয়ে দেওয়ার ভয় দেখাচ্ছেন। আমি সুকান্ত মজুমদার, আপনাদের আশ্বস্ত করছি, আইন অনুযায়ী কোনও নির্বাচিত প্রতিনিধিকে তিন বছরের আগে পদ থেকে সরানো যায় না। তিনি ভয় তৈরি করতেই এই ধরনের মন্তব্য করছেন। কারণ তিনি বুঝে গিয়েছেন, এখন আর তাঁকে কেউ মানে না।’’
রাজ্যের দাপুটে মন্ত্রী বিপ্লব এ বার লোকসভার লড়াইয়ে। বালুরঘাটের মতো কঠিন আসনে বিপ্লব ঘটিয়ে পারবেন কি বাজিমাত করতে? চেষ্টায় ত্রুটি রাখছেন না বর্ষীয়ান নেতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy