লোকসভা ভোটের বেশি দেরি নেই। সেই আবহেই আজ, শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। তাই পরীক্ষার্থীদের পাশে থেকে জনমন পেতে তৎপর সব দলই। সেই সঙ্গেই পরীক্ষার ক’দিন সভা-মিছিলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় সাংগঠনিক শক্তি ঝালিয়ে নিতে চায় সব পক্ষই।
পরীক্ষা চলবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এই ১১ দিন পরীক্ষার্থীদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তা নিশ্চিত করতে সমস্ত রকম জনসভা ও জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই ১১ দিনেই নিজেদের সাংগঠনিক পরিস্থিতি ঝালিয়ে নিতে চাইছে সকলেই। তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় জানান, কোনও মিছিল বা জনসভা না থাকলেও মাধ্যমিক চলাকালীন জেলায় ঠাসা কর্মসূচি রয়েছে দলের। দুবরাজপুর ব্লক, খয়রাশোল ব্লক, দুবরাজপুর শহর-সহ জেলার একাধিক জায়গায় রুদ্ধদ্বার কর্মী-সম্মেলন রয়েছে এই সময়। পাশাপাশি, দলের শাখা সংগঠনগুলিও নিজেদের মতো করে ছোট ছোট পাড়া বৈঠক ও সাংগঠনিক বৈঠক করবে বলেও জানান তিনি। মলয় বলেন, “রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন আমরা কোনওরকম সমস্যা তৈরি না করে বন্ধ ঘরের ভিতর, মাইক ছাড়া সাংগঠনিক বৈঠক করব। নিয়মিত মিছিল ও সভার মাঝে এই কয়েকটা দিন সংগঠনকে ঝালিয়ে নিতে বেশ কাজে আসবে।”
বিজেপি নেতারাও এই সময় সাংগঠনিক আলাপ আলোচনার উপরেই বিশেষ জোর দিচ্ছেন। তাঁদের দাবি, জনসংযোগের পাশাপাশি সংগঠনের ভিতরে সব কিছু যাতে স্বাভাবিক চলে সেটাও মাঝে মাঝে দেখে নেওয়া জরুরী। বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি বাবন দাস বলেন, “শুধুমাত্র বীরভূম সাংগঠনিক জেলাতেই ১৯৪১টি বুথ রয়েছে। প্রত্যেকটি বুথের নেতা কর্মীদের সুবিধা অসুবিধার বিষয়গুলি দেখা, নেতৃত্বের স্তরে সংযোজন, বিয়োজন, পরিবর্তনের বিষয়গুলি দেখার জন্য এই সময়টা আমরা কাজে লাগাব।”
ভোটের আগে সাংগঠনিক পরিস্থিতি গোছানোর কথা জানিয়েছে সিপিএমও। সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, “এই সময় আমরা আমাদের ভিতরের সংগঠনকে গোছাবো। পাশাপাশি আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি সমস্ত গণ ফ্রন্টের ডাকে যে আইন অমান্য কর্মসূচি আছে, তারও প্রস্তুতি নেব আমরা। এই প্রস্তুতির মধ্য দিয়েই আমাদের নির্বাচনের প্রস্তুতিও চলবে।”
জেলার কংগ্রেস নেতাদের কাছে রাহুল গান্ধীর কর্মসূচি নিয়ে মাথাব্যথা সবচেয়ে বেশি। আজ, রাহুল গান্ধীর কর্মসূচি ভালই ভালই উতরে দেওয়ার পর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সহযোগিতার মধ্য দিয়েই জনসংযোগের ভাবনা রয়েছে তাদের৷ কংগ্রেসের জেলা কার্যকরী সভাপতি চঞ্চল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আপাতত আমরা রাহুল গান্ধীর পদযাত্রার যাতে সুষ্ঠুভাবে হয়, সে জন্য সব ব্যবস্থা করছি। এই পদযাত্রার কারণে যাতে পরীক্ষার্থীদের কোনও সমস্যা না হয়, সেটাও নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। এরপর থেকে আমরা মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের পাশে যে ভাবে প্রতি বছর থেকেছি, সেভাবেই থাকব।”
কেবল কংগ্রেস নয়, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের পাশে থাকতেও তৎপরতা শুরু হয়েছে তৃণমূল ও বিজেপিরও। জানা গিয়েছে, জেলার মোট ১২৭টি কেন্দ্রের সামনেই পরীক্ষার্থীদের নানা বিষয়ে সহায়তা করতে শিবির করবে তৃণমূল। সব কেন্দ্রে না হলেও একই ভাবে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানাতে ও সহায়তার জন্য থাকবে বিজেপিও।
তৃণমূলের জেলা কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে শিবির হবে। পরীক্ষার্থীদের হাতে জলের বোতল, কলম তুলে দেওয়ার পাশাপাশি যে কোনও প্রয়োজনে দলের কর্মীরা থাকবেন। তবে এ বারই প্রথম নয় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের সহায়তা শিবির বিগত বছর গুলিতেও হয়েছে।’’
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগে কালীঘাটে বীরভূমের নেতাদের ডেকেছিলেন মমতা। সেখানে নানা বিষয়ে আলোচনার সঙ্গেই জায়গা পেয়েছিল পরীক্ষার্থীদের সাহায্যের জন্য শিবির করার বিষয়টিও। অন্য দিকে একই ভাবে পরীক্ষার্থীদের সাহায্যের জন্য পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে হাজির থাকার কথা বিজেপিরও।
বিজেপির দুই সাংগঠনিক জেলার (বীরভূম ও বোলপুর) সভাপতি ধ্রুব সাহা ও সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল একই সুরে বলেন, ‘‘জেলার বিভিন্ন কেন্দ্রের বাইরে আমাদের নেতা-কর্মীরা থাকবেন। জলের বোতল, কলম তুলে দেওয়ার পাশাপাশি অন্য যে কোনও প্রয়োজনে তাঁরা সাহায্য করবেন।’’
দুই শিবিরের নেতাকর্মীরাই বলছেন, ‘‘এ বার পরীক্ষা দু’ঘণ্টা এগিয়ে এসেছে। পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতে সমস্যা হতে পারে। এমন কিছু নজরে পড়লে বা অন্য যে কোনও ধরনের সমস্যা হলে পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি আমরা আছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy