কর্মী সভার শুরুর আগে। ঝাড়গ্রাম কাঁটাবাড়ি এলাকার হেলিপ্যাডে তোলা ছবি।
পুরনো নেতাদের অনেকেই নিষ্ক্রিয়। মনে জমাট বাঁধা ক্ষোভ। ভোটের আগে ঝাড়গ্রামে দলের সাংগঠনিক বৈঠকে এসে তার আঁচ পেলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সমস্যা সমাধানে সেই পুরনো নেতাদের জুড়লেন ভোট প্রচারের কাজে।
বৃহস্পতিবার দুপুর ২টো ১০-এ ঝাড়গ্রাম হেলিপ্যাডের মাটি ছোঁয় অভিষেকের কপ্টার। লাগোয়া অতিথিশালায় দফায় দফায় প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠক করেন তিনি। প্রথম দফায় ক্ষোভ মেটাতে আলাদা বৈঠক। পরে নির্বাচনী কমিটির সদস্যদের নিয়ে বৈঠক। অভিষেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, নিজেদের মধ্যে ঝামেলা মিটিয়ে নিতে হবে। দলের নির্দেশ মতো সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। দলীয় প্রার্থীর প্রচারে এক যোগে প্রচারও করতে হবে।
নির্বাচনী কমিটির সদস্য না হয়েও বৈঠকে ডাক পেয়েছিলেন জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন কো-অর্ডিনেটর উজ্জ্বল দত্ত। জেলা সভাপতি দুলাল মুর্মুর সঙ্গে উজ্জ্বলের ‘শীতল সম্পর্ক’ সর্বজনবিদিত। দলে এখন কার্যত নিষ্ক্রিয় উজ্জ্বল। সেই উজ্জ্বল ও দুলালকে নিয়ে আধঘন্টা আলাদা বৈঠক করেন অভিষেক। সূত্রের খবর, দলের যাবতীয় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া, নিরাপত্তারক্ষী তুলে নেওয়ার ক্ষোভ জানান উজ্জ্বল। তাঁর ঘনিষ্ঠ সন্দেহে নয়াগ্রাম ব্লকের সভাপতি ও অঞ্চল সভাপতিদের বদলে দেওয়া, পঞ্চায়েতে অনুগামীদের টিকিট না দেওয়ার কথাও জানান। মাওবাদী আমলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লড়াই করেছেন, মনে করিয়ে দেন উজ্জ্বল। দুলাল অবশ্য অভিষেকের সামনে আগাগোড়া চুপ ছিলেন। জানা গিয়েছে, উজ্জ্বলকে ভাল করে কাজ করার নির্দেশ দেন অভিষেক। ভাল কাজ করলে আগামীতে পদপ্রাপ্তিরও ইঙ্গিত দেন। পরে দুলাল বলেন, ‘‘সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার কথা বলেছেন আমাদের নেতা।’’
এরপর অভিষেক সব বিধায়ককে নিয়ে বৈঠক বসেন। সেখানে উজ্জ্বল ও জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অজিত মাহাতো ছিলেন। পরে নির্বাচনী কমিটির সঙ্গে বসেন অভিষেক। কোথায় কী সমস্যা রয়েছে জেনে নেন। মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদার কাছেও সমস্যা জানতে চান। সূত্রের খবর, মন্ত্রীর নালিশ, শহরের উন্নয়নের জন্য পুরপ্রতিনিধি বৈঠকে ডেকেছিলেন তিনি। কিন্তু একাংশ পুরপ্রতিনিধি আসেননি। এ দিনও গোলমাল বাধে। বৈঠকে প্রথমে পুর-প্রতিনিধি প্রশান্ত রায় এসেছিলেন। কিন্তু তালিকায় আর এক পুর-প্রতিনিধি শিউলি সিংহের নাম ছিল না। নিরাপত্তারক্ষীরা শিউলিকে ঢুকতে না দেওয়ায় প্রশান্তও বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান। জানা গিয়েছে, জেলা সভাপতি দুলালকে দলের সব পুর প্রতিনিধিকে নিয়ে বসে আলোচনা করে রিপোর্ট পাঠাতে বলেছেন অভিষেক।
অভিষেকের দফতর থেকে পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে এখন দলে গুরুত্ব নির্ধারণের যে নিয়ম চালু হয়েছে, তার ভিত্তিতে প্রত্যাশিতভাবেই এ দিন জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অজিত মাহাতোর গুরুত্ব বেড়েছে। অজিতকে গোপীবল্লভপুর বিধানসভার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দিয়েছেন অভিষেক। সেখানকার বিধায়ক খগেন্দ্রনাথ মাহাতো দলের সভা বৈঠকে গরহাজির থাকছিলেন। নির্বাচনী কমিটি গঠনের প্রথম দিনেও আসেননি। জানা দিয়েছে, অভিষেক বৈঠকে বলেন, ‘‘অজিতদা (মাহাতো) ভাল কাজ করেছো। আগে জেলা কো-অর্ডিনেটর ছিলে।’’ যদিও পরে খগেন্দ্রনাথের দাবি, ‘‘উনি (অভিষেক) সবাইকে নিয়ে কাজের নির্দেশ দিয়েছেন। চূড়ামণিকেও দলের কাজ করার নির্দেশ দেন।’’ অজিত বলছেন, ‘‘দল যে দায়িত্ব দিয়েছে, সে ভাবে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করব।’’
লালগড়ের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি শ্যামল মাহাতো ওবর্তমান ব্লক সভাপতিতারাচাঁদ হেমব্রমের দ্বন্দ্ব নিরসনেরও চেষ্টা করেন অভিষেক।দু’জনকেই ব্লকের কো-কনভেনার করে দেন।যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি আর্য ঘোষের থেকে গ্রামীণ ব্লকে দল ও যুব-র সমন্বয়ে সমস্যা কোথায় জানতে চান অভিষেক। পরে নিজেই বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy