জলপাইগুড়ির বন্ধ রায়পুর চা বাগানে তৃণমূল নেতার সৌজন্যে ভোজ খেতে ভিড়। — নিজস্ব চিত্র।
এক সময়ে কারখানার এই দরজা খুলত চা পাতা বোঝাই গাড়ি ঢোকা এবং তৈরি চা পাতা নিয়ে যাওয়ার জন্য। তার পরে সে দরজার তালা পড়ে। বহু বছর পরে সেই তালা খুলল লোকসভা ভোটের দিন। তবে কাজ শুরুর জন্য নয়। মাংস-ভাতে বোঝাই হাঁড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য।
জলপাইগুড়ির বন্ধ রায়পুর চা বাগানের হাজার-হাজার শ্রমিক পরিবারের সদস্য শুক্রবার জরাজীর্ণ চা কারখানা চত্বরে লাইন দিয়ে দাঁড়ালেন এলাকার তৃণমূল নেতার সৌজন্যে ভোজ খেতে। বাগানের শ্রমিকদের ভাত, ডাল, নিরামিষ তরকারি এবং মুরগির মাংস খাওয়ানো হল। দেদার। বন্ধ বাগানে মাংস-ভাত খাওয়ানো হচ্ছে শুনে আশেপাশের অনেকেও চলে এলেন। কত জন খেলেন ভোজ?
ভোজের আয়োজক বাগানের তৃণমূল নেতা তথা সংশ্লিষ্ট পাতকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান (বর্তমান প্রধানের স্বামী) প্রধান হেমব্রমের দাবি, “অন্তত সাড়ে পাঁচ হাজার।’’ গত পঞ্চায়েত ভোটে প্রধান দাঁড়াননি। তাঁর স্ত্রী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে প্রধান হয়েছেন।
২০০৫ সাল থেকে এই বাগান বন্ধ। মাঝেমধ্যে কিছু দিনের জন্য খুলেছে। বাগানের স্থায়ী-অস্থায়ী শ্রমিক মিলিয়ে সংখ্যা হাজারেরও বেশি। তাঁদের পরিবার মিলিয়ে আরও কয়েক হাজার। তাঁদের সঙ্গে যোগ হয়েছে আশেপাশের চা বাগান এবং এলাকা থেকে আসা লোক। এ দিন বিকেলে প্রধান বলেন, “এখনও লোক আসছে মাংস-ভাত খেতে। উৎসবের মেজাজ এখানে।” এলাকার তৃণমূল কর্মীদের দাবি, ছয় হাজারের বেশি লোক খেয়েছে। চার বার মাংস রান্না করতে হয়েছে। কত টাকা খরচ হল?
তৃণমূল নেতাদের দাবি, কম পক্ষে পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচ না করলে এই ভোজ সম্ভব নয়। প্রধান হেমব্রম নিজেও রায়পুরের বাসিন্দা। একাধিক বার রায়পুর শ্রমিকদের নিয়ে কখনও অবরোধ, কখনও বিক্ষোভ করেছেন বাগান খোলার দাবিতে। অভিযোগ করেছেন, বাগান না খোলায় শ্রমিকেরা অর্ধাহারে রয়েছেন। অপুষ্টি-মৃত্যুর অভিযোগও তুলেছিলেন। তা বলে ভোটের দিনে লোক খাওয়ানো কেন?
প্রধান বলেন, “বাগানে উৎসবের মেজাজে ভোট হয়েছে। তাই একটু পিকনিকের আয়োজন। সবাই চাঁদা দিয়েছেন, কেউ কেউ স্বেচ্ছায় চাল দিয়েছেন। খরচ বেশি লাগেনি।” মাংস-ভাত খেয়ে বাগানের বাসিন্দা রিনা এক্কা বলেন, ‘‘আগেও বাগানে ভোটের সময় খাওয়া-দাওয়া হয়েছে। এ বারও হল। সবাই মিলে খেলাম। তৃপ্তি হল।’’
ঘটনাচক্রে, তিস্তা পারের সারদাপল্লির এক বিজেপি কর্মীর বাড়িতেও এ দিন স্থানীয় বুথের ভোটদাতাদের জন্য ভাত, ডাল এবং লাবড়ার আয়োজন ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy