ছবি: পিটিআই।
কৃষক আন্দোলন নিয়ে দেশ যখন দ্বিধাবিভক্ত, আন্তর্জাতিক স্তরে যখন আওয়াজ উঠছে, তেমনই এক সময় কৃষি আইন নিয়ে ভারত সরকারের পাশে দাঁড়াল আমেরিকা। তবে মধ্যপন্থা নিল ব্রিটেন।
বুধবার আমেরিকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক মুখপাত্র জানান, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন উন্নত গণতন্ত্রের পরিচয়। তবে ভারত সরকার কৃষি আইন নিয়ে যে পদক্ষেপ করেছে, তাতে আখেরে দেশের বাজারই উপকৃত হবে। পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগের রাস্তাও তৈরি হবে ভারতে। এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে জো বাইডেন প্রশাসন সরাসরি স্পষ্ট করে দিতে চেয়েছে ভারত সরকার কৃষিক্ষেত্রে যে সংস্কার এনেছে, তা কৃষকদের স্বার্থেই। এবং এই সংস্কারে কৃষকরা লাভবানই হবেন বলে দাবি আমেরিকার।
আমেরিকা ভারতের পাশে দাঁড়ালেও ব্রিটেন কিন্তু কৌশলে মধ্যপন্থা নীতি অবলম্বন করেছে। বিষয়টি নিয়ে তাদের পার্লামেন্টে একটা বিতর্কসভার আয়োজন করতে চলেছে বরিস জনসন প্রশাসন। জনমতের উপর ভিত্তি করেই বিষয়টি নিয়ে তাদের অবস্থান ঠিক করবে বলে সে দেশের প্রশাসন সূত্রে খবর।
Solidarity with all the farmers across India protesting for their livelihood.
— Ilhan Omar (@IlhanMN) February 3, 2021
India must protect their basic democratic rights, allow for the free flow of information, reinstate internet access, and release all the journalists detained for covering the protests. https://t.co/uOvwNkIu5n
বাইডেন প্রশাসন ভারত সরকারের পাশে থাকলেও কৃষক আন্দোলন নিয়ে আমেরিকাতেও যে দ্বিমত তৈরি হচ্ছে, তা এক কংগ্রেস সদস্যের কথায় স্পষ্ট। কংগ্রেস সদস্য হ্যালি স্টিভেন্স যেমন বলেছেন, “ভারতের কৃষক আন্দোলনের বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপ করার খবর পাচ্ছি, তাতে খুবই উদ্বিগ্ন। মোদী সরকারের উচিত আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসে একটা সদর্থক রাস্তা বার করা।” হ্যালি আরও জানান, গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে একটা জনমত গড়ে তোলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
কংগ্রেসের আরও এক সদস্য ইলহান ওমরও কৃষকদের সমর্থনেই কথা বলেছেন। তিনি বলেন, “ভারতে গণতান্ত্রিক অধিকারকে রক্ষা করার প্রয়োজন। কী ঘটছে সকলের সামনে তুলে ধরা উচিত। যে ভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, সাংবাদিকদের আটক করা হচ্ছে, তা সত্যিই উদ্বেগের বিষয়।” হ্যালি এবং ইলহানের মতো আমেরিকার বহু নেতাই কৃষক আন্দোলনের পক্ষে মত পোষণ করেছেন। আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের ভাইঝি মীনা হ্যারিসও কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
কংগ্রেস সদস্যদের মধ্যে বিরোধী স্বর থাকলেও আমেরিকার মতো, আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (আইএমএফ)-ও কৃষি নিয়ে মোদী সরকারের পদক্ষেপকে আগেই স্বাগত জানিয়েছে। গত মাসে আইএমএফ-এর এক শীর্ষ আধিকারিক গেরি রাইস বলেছিলেন, “আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস নতুন কৃষি আইন ভারতের কৃষিক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী সংস্কার। এই আইন কার্যকরী হলে কৃষকরাই উপকৃত হবেন।”
It’s no coincidence that the world’s oldest democracy was attacked not even a month ago, and as we speak, the most populous democracy is under assault. This is related. We ALL should be outraged by India’s internet shutdowns and paramilitary violence against farmer protesters. https://t.co/yIvCWYQDD1 pic.twitter.com/DxWWhkemxW
— Meena Harris (@meenaharris) February 2, 2021
কৃষি আইন নিয়ে এখনও অচলাবস্থা কাটেনি। আরও জোরদার এবং বৃহত্তর আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে কৃষক সংগঠনগুলি। তাঁদের দাবি আইন প্রত্যাহার করতে হবে। না হলে এই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। কৃষি আইন নিয়ে সম্প্রতি পপ তারকা রিহানা টুইট করেন। তার টুইট নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে বিতর্ক। এর পর গ্রেটা থুনবার্গ, মিয়া খলিফারাও কৃষি আইন নিয়ে টুইট করেন। যা নিয়ে জোর চর্চা চলছে। পাল্টা টুইট করে ভারত সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছেন বলিউডের বহু তারকা এবং ক্রীড়া, সঙ্গীত জগতের অনেকেই। তাঁরা বার্তা দিয়েছেন, এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। অর্ধসত্য কোনও তথ্য নিয়ে মন্তব্য না করাই শ্রেয়।