মা উড়ালপুল। —ফাইল চিত্র।
কখনও উড়ালপুল থেকে ঝাঁপ, কখনও বা উড়ালপুলের রেলিংয়ে ধাক্কা মেরে চালক বা আরোহীর নীচে পড়ে যাওয়া। এর সঙ্গে মা উড়ালপুল জুড়ে চিনা মাঞ্জার ‘উপদ্রব’ তো আছেই। গত কয়েক বছরে উড়ালপুলের রেলিংয়ে ধাক্কা মেরে নীচে রাস্তায় পড়ে গিয়ে বাইকচালক বা আরোহীর মৃত্যুর একাধিক ঘটনা ঘটেছে। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে উড়ালপুলের রক্ষণাবেক্ষণকারী সংস্থা কেএমডিএ-র সঙ্গে বৈঠক করেছিল পুলিশ। বৈঠকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, দুর্ঘটনা ঠেকাতে উড়ালপুলের বিভিন্ন জায়গায় ‘ক্র্যাশ ব্যারিয়ার’ বসানো হোক কিংবা উঁচু ফেন্সিং দেওয়া হোক। রবিবার ভোরে উড়ালপুল থেকে নীচে পড়ে বাইক-আরোহী দুই যুবকের মৃত্যুর ঘটনা আরও এক বার সেই প্রস্তাবের গুরুত্বকে সামনে এনেছে। এ দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে কলকাতার নগরপাল মনোজ বর্মা জানিয়েছেন, তিনি কেএমডিএ-র সঙ্গে এই ব্যাপারে কথা বলবেন।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে মা উড়ালপুলের উপরে পরমা আইল্যান্ডের কাছে একই ভাবে রেলিংয়ে ধাক্কা মেরেছিল একটি বেপরোয়া বাইক। ধাক্কার অভিঘাতে প্রায় ৮০ ফুট নীচে পড়ে যান এক যুবক। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় কেশব ঝা নামে ওই ব্যক্তির। শুধু দুর্ঘটনাই নয়, মা উড়ালপুল থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে একাধিক।
বার বার এমন ঘটায় নড়েচড়ে বসে পুলিশ। কয়েক মাস আগে উড়ালপুলের রক্ষণাবেক্ষণকারী সংস্থা কেএমডিএ-র সঙ্গে বৈঠকে তারা বিপজ্জনক বাঁকগুলিতে ক্র্যাশ ব্যারিয়ার বসানো যায় কিনা, তা নিয়ে প্রস্তাব দেয়। প্রাথমিক ভাবে অবশ্য কেএমডিএ-র আধিকারিকেরা জানিয়েছিলেন, ক্র্যাশ ব্যারিয়ার বসালে সেতুর ভার বেশি হয়ে অন্য দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়তে পারে। তবে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে বলেও জানিয়েছিলেন তাঁরা। এ দিন নগরপাল দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে আবারও উড়ালপুলে গতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ক্র্যাশ ব্যারিয়ার লাগানোর উপরে জোর দিয়েছেন।
পরে নগরপাল জানান, ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশের টেকনিক্যাল দলের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের মনে হচ্ছে, এই ধরনের দুর্ঘটনা আটকানো সম্ভব। আমরা কেএমসি, কেএমডিএ ছাড়াও নগরোন্নয়ন দফতরের সঙ্গেও এ নিয়ে কথা বলব।’’