Russia-Ukraine War

ইউক্রেনে পুতিনের সেনা অভিযানের ১০০০ দিন পার হল, যুদ্ধ সম্পর্কে কী বলল জ়েলেনস্কি সরকার

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মঙ্গলবারই আমেরিকার থেকে পাওয়া দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে প্রথম বার মূল রুশ ভূখণ্ডের ব্রিয়ানস্ক এলাকায় হামলা করেছে ইউক্রেন সেনা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৪ ২১:৪৬

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি। ভোর ৬টায় সরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে জাতির উদ্দেশে বক্তৃতায় কিভের বিরুদ্ধে ‘সামরিক অভিযানের’ ঘোষণা করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ইউক্রেনের ‘নির্দিষ্ট ৭০টি লক্ষ্যে’ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং বিমান হামলা চালিয়েছিল রুশ বাহিনী। আর সেই সঙ্গে শুরু হয়ে গিয়েছিল রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ। মঙ্গলবার সেই যুদ্ধের ১০০০ দিন পূর্ণ হল।

Advertisement

প্রাথমিক ভাবে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের অনেকেই একে ‘ডেভিড বনাম গালিয়াথের লড়াই’ বলে চিহ্নিত করেছিলেন। প্রাথমিক পর্যায়ে ইউক্রেনে রুশভাষী ডনবাস (ডনেৎস্ক এবং লুহান্সক অঞ্চলকে একত্রে এই নামে ডাকা হয়) সীমান্তের পাশাপাশি, বেলারুশে মোতায়েন রুশ ট্যাঙ্ক এবং সাঁজোয়া ব্রিগেডগুলি হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়েছিল ইউক্রেনের মাটিতে। সেই সঙ্গে, ইউক্রেনের উপকূলবর্তী শহর ওডেসা এবং মারিয়ুপোল দখলের লক্ষ্যে ক্রাইমিয়া বন্দর এবং কৃষ্ণসাগরে মোতায়ন রুশ রণতরী এবং ‘অ্যাম্ফিবিয়ান ল্যান্ডিং ভেহিকল’ থেকে সেনা অবতরণ শুরু হয়ে গিয়েছিল। মনে করা হচ্ছিল রাজধানী কিভের পতন কেবল সময়ের অপেক্ষা।

কিন্তু এর পরেই আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দুনিয়ার মদতে পরাক্রমশালী রুশ সেনার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেন যে ভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে, চমকে দিয়েছে অনেককেই। সীমিত ক্ষমতা নিয়েও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির বাহিনী গত ৩৩ মাস ধরে প্রতিরোধ করে চলেছে রুশ আগ্রাসন। ২০২২ সালের ৪ জুন, যুদ্ধের ১০০তম দিনে জ়েলেনস্কি জানিয়েছিলেন, তাঁর দেশের ২০ শতাংশ এলাকা রুশ বাহিনীর দখলে। যুদ্ধের ১০০০তম দিনে আন্তর্জাতিক রিপোর্ট বলছে এই মুহূর্তে রাশিয়ার হস্তগত ইউক্রেনের প্রায় ২৫ শতাংশ ভূখণ্ড। যদিও মঙ্গলবার ইউক্রেন সরকার এই দিনটিকে ‘রাশিয়ার দখল রোখার প্রতিশ্রুতি’ বলে চিহ্নিত করেছে।’’

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মঙ্গলবারই আমেরিকার থেকে পাওয়া দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে মূল রুশ ভূখণ্ডের ব্রিয়ানস্ক এলাকায় হামলা করেছে ইউক্রেন সেনা। যার জবাবে মস্কো পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিয়েছে। গত দু’বছরের পর্যবেক্ষণ বলছে, উত্তর গোলার্ধে শীতে তুষারপাত শুরু হলে যুদ্ধের গতি স্তিমিত হয়ে পড়বে। সে ক্ষেত্রে কিভের নয়া হাতিয়ার মস্কোর বিড়ম্বনা বাড়াতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তা ছাড়া, এ বারের শীতে ড্রোন এবং রোবটযুদ্ধেরও পরীক্ষা হতে পারে ইউক্রেনের মাটিতে। কারণ, যুযুধান দু’পক্ষই গত কয়েক মাসে বিপুল পরিমাণে ড্রোন এবং মানববিহীন স্বয়ংক্রিয় সাঁজায়ো যান মজুত করেছে বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সামরিক পর্যবেক্ষণ সংস্থার রিপোর্ট।

এ বিষয়ে ইউক্রেনের কৌশলগত শিল্প বিষয়কমন্ত্রী হারম্যান স্মেতানিন বলেন, ‘‘দূরনিয়ন্ত্রিত অস্ত্র, বিশেষত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত অস্ত্রের ব্যবহার যুদ্ধক্ষেত্রে ক্রমশ বাড়ছে।’’ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে তিনি জানান, অদূর ভবিষ্যতে রোবটযুদ্ধ ‘নির্ণায়ক’ হয়ে উঠতে পারে। রসদ সরবরাহ, আহতদের উদ্ধার এবং দূরনিয়ন্ত্রিত মেশিনগান বহনে দক্ষ স্বয়ংক্রিয় যান এ বারের শীতে যুদ্ধের গতি বদলাতে পারে কি না, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে। যদিও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ভোটে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পরে জ়েলেনস্কির জয়ের পরেই আশা প্রকাশ করেছেন, আগামী ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসে পালাবদলের পরেই শেষ হবে যুদ্ধ।

আরও পড়ুন
Advertisement